অর্ধেক আগুনের আকাশ : শু ভ ঙ্ক র দা স।

0
594

প্রথম জন্মযাত্রা কার মুখ দেখে, শরীর।
মুখ নেই, কোনো মুখের লেশমাত্র নেই, শুধু দাঁতালো শরীর,এঁটো শরীর।
গুহার অন্ধকারে সহসা সে কি ভয়ংকর শৈত্যপ্রবাহ… প্রতিটি লোম খসে গেছে শিকারে শিকারে…
জলের আয়নায় লেগে আছে রক্ত লেগে আছে,কিছু মাংসের টুকরো, হাড়,চিবিয়ে রাখা সুপ্রাচীন খাদ্যোল্লাস…
বাইরে উত্তরা বাতাস ব্যাঘ্রনখর,ফালা ফালা করে দিচ্ছে স্নায়ুতরঙ্গ… শ্বাসবায়ু হিমশীতল, বারুদের মতো ফেটে যাচ্ছে…
প্রতিটি পাথরে তুষারাবৃত শীর্ষের করাত-দাগ,প্রতিটি স্পর্শ বিস্ফোরণ, মৃতপ্রায় মুহূর্তের মারাত্মক ছলাকলা…
সহসা শরীরে চোখ জ্বলে ওঠে,খুঁজে নেয় উষ্ণ-খাদ,অপ্রস্তুত, অপরিচিত, অসভ্যতায়,যেভাবে হরিণ-শিকার…
খাদ্যোল্লাসের পরে এও নব-খাদ্যোল্লাস,সারমেয়-দন্ত থেকে ছিটকে আসা মাংসের টুকরোর মতো এক মুহূর্ত!
অথচ সেই শুরু ফ্রয়েড-ফুৎকার,গুহা ভেঙে,অরণ্য চিরে,পাহাড় টলিয়ে,তপোবন-তর্পণ ফেলে ব্রহ্মাণ্ডকে বিদীর্ণ করে চলেছে,যার কোনো সমাপ্তি,স্বর্গ-মর্ত্য-পাতালে তো নেই, যদি সরু সামান্য সুতো হয়, সেখানেও সিংহভাগ এই চমৎকার চাকা… ঘুরছে…
স্পর্শহীন অপারাপারের কাঙাল হালের পাশে নগ্ন-নৌকার প্রজাপতি খোল,জল শুধু জল, জলের জেলখানায় শ্বাসচর্চা…

মৎস্য নয়,জলজ পোকা,ফুল,রৌদ্র কণা নয় অথবা হাঙরবীজ নয়, একেবারে হুবহু খননের প্রতিরূপ,একটুও কম নয়, একটুও বেশি…
শুধু মুখ নেই, মুখের বিন্দুমাত্র সুতো নয়,সেই গুহার অন্ধকারের নাভিনিম্ন নৌকাযাত্রা…
জলে ভেসে যায় ছেঁড়া ছেঁড়া পালের পতাকা, প্রতিটিতে অর্ধেক আকাশের রক্তাক্ত ও হাড়ভাঙা যোনী আঁকা…

এ কোথায় নিয়ে এলি প্রথম পৃথিবী মা, গর্ভের অন্ধকারের চেয়েও সহস্রগুণ অন্ধকার সূর্যোদয়ে… এ কোথায় নিয়ে পথহীনা ছিন্নভিন্ন মা,এখনও নির্মিত হয়নি মুখের মুখ,গুহার ভেতরে বসে আছে, সেই সুপ্রাচীন শিকারী,যেদিকে তাকাই..
এ কোথায় নিয়ে এলি লালচে-কালো প্যাডপৃথিবী মাগো,এতে কি নিজের যন্ত্রণা লাঘব হল,মাসিকমোহে…
এ কোথায় নিয়ে এলি আঁচল-আগুনের মা, পুড়িয়ে দিল চারিদিকের মরুচোখ, শরীরের ঘুরে বেড়ায় করাত-জিহ্বা, লকলকে, লোলুপ এবং লালসার থুতুমাখা…

দুধ ঢেলে ঢেলে কি শান্তি! পুজো করে করে ইটভাটার মিনার, এতো পোশাক-আশাকের চূড়ান্ত ব্যর্থতা,চারিপাশে আগুনের চেয়ে দাহ্য, ছাইয়ের চেয়েও অন্ধ,ছেনির চেয়ে ধারালো ঘুরে বেড়াচ্ছে রক্তবীজের মতো…

আমি তো ছিন্নযোনী হয়ে বাঁচতে চাই না,আমি গুহার অপরাধে নিজেকে নীল করতে চাই না,আমি বাৎস্যায়ন-বিরাট মুদ্রার স্থাপত্য হতে আসিনি, লিঙ্গ থেকে বেরানো শেয়াল-শকুন-বানর সদৃশ সহস্র হাতের পুতুল হতে চাই না,আমি শুধু বাঁচতে চেয়েছিলাম, একটি মুখ হয়ে

একটি সুশীতল সরোবর, একটি বাসমতি অরণ্য, একটি স্নানের ঘাটমতী নদী,একটি শ্বাসবায়ু ভরা পাখির আকাশ, এমন কি একটি অক্ষত ধুলো-কাদার আলিঙ্গনে ছোট্ট শস্য…

যেভাবে সকালে রৌদ্রে হেঁটে চলে তৃণদল,এককতারার মাটিতে…

যেভাবে বেঁচে থাকা বেজে ওঠে সরগমের বিশ্বাসে…

তা পাইনি,তা পেলাম না,তা কোনোদিন পাব না, জানি,ফিরিয়ে নিতে পারবি না!
শুধু ফিরে যেতে পারি,আগুন-বিরব ধরে ধরে…

লেলিহান লিঙ্গশিখা এবার ছুঁয়ে চিরে, তুই দ্যাখা? তোর শাশ্বত ছেনালি অপুরুষ কাপুরুষ জন্মান্তরে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here