মাঝিদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে স্তব্ধ আন্তঃরাজ্য ঘাট পারাপার পরিষেবা ।ফলে ভোগান্তিতে এপার বাংলা ও ওপার ঝাড়খণ্ডের নিত্যযাত্রীরা।

0
233

নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদাঃ-মাঝিদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে স্তব্ধ আন্তঃরাজ্য ঘাট পারাপার পরিষেবা ।ফলে ভোগান্তিতে এপার বাংলা ও ওপার ঝাড়খণ্ডের নিত্যযাত্রীরা।

জানা গেছে মানিকচক ঘাটে তৃণমূল শাসকদলের মাঝিদের একটি সংগঠন আছে। বহুদিন ধরে খেয়া পারাপারের জন্য লঞ্চ বন্ধ থাকায় নদী পারাপারের একমাত্র ভরসা নৌকা।বিশেষত শাসকদলের এই মাঝিদের সংগঠন নদী পারাপার পরিচালনা করে। প্রতিদিন ষোলটি নৌকার মাধ্যমে খেয়া-পারাপার হয়ে থাকে। তারমধ্যে ঝাড়খণ্ডের ও বেশ কয়েকটি নৌকা ও আছে। আর এই নৌকার সংখ্যা নিয়ে যত দ্বন্দ্ব ।ঝাড়খণ্ডের মাঝিদের সংগঠনের দাবি আরো পাঁচটি নৌকা খেয়া পারাপারে অংশগ্রহণ করবে ।কিন্তু তা মানতে নারাজ এপার বাংলা শাসক দলের মাঝিদের সংগঠন ।এই নিয়ে দ্বন্দ্ব বহুদিনের ।এর আগেও বেশ কয়েকবার একই কারণে বাংলা ঝাড়খন্ড আন্তঃরাজ্য নদী পারাপার বন্ধ হয়েছে ।বাংলা ও ঝাড়খন্ডের দুই গোষ্ঠীর মাঝিরা বারবার বচসাই জড়িয়েছে। বেশ কয়েকবার দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বড় ধরনের মারামারি হয়েছে ।পরবর্তীতে পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ঝামেলা নিয়ন্ত্রণে আসে।

জানা গেছে শনিবার সকাল আটটা নাগাদ ঝাড়খণ্ডের রাজমহল ঘাট থেকে একটি নৌকা খেয়া নিয়ে মানিকচক ঘাটে পৌঁছায়। বেআইনিভাবে এই নৌকার মাঝি খেয়া-পারাপার করছে  বলে জয়ন্ত সরকার নামের ঝাড়খণ্ডের এক মাঝি কে আটকায় এপারের মাঝিরা ।সেই মাঝির বিরুদ্ধে মানিকচক থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। বেআইনিভাবে খেয়া পারাপারের অভিযোগে অভিযুক্ত মাঝি কে আটক করে মানিকচক থানার পুলিশ ।তাদের মাঝিকে আটক করার খবর ওপার ঝাড়খন্ডে পৌঁছাতেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের আগুন জ্বলে ওঠে ।মানিকচক ঘাট থেকে খেয়া নিয়ে যাওয়া পঙ্কজ চৌধুরী নামের এক মাঝিকে রাজমহল ঘাটের  মাঝিরা আটক করে। রাজমহল ঘাটে সেই মাঝিকে ব্যাপক মারধর করে বেঁধে রাখা হয় বলে অভিযোগ। ওপার ঝাড়খন্ড থেকে প্রস্তাব আসে প্রথমে তাদের  মাঝি কে ছাড়লে তারপরে ছাড়া পাবে মানিকচক ঘাটের মাঝি কে। এমতাবস্তায় খেয়া পারাপারের বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় মানিকচকের মাঝি সংগঠন ।শনিবার সকাল নটা  থেকে আন্তঃরাজ্য খেয়া-পারাপার একেবারে বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে চরম ভোগান্তির শিকার হয় সাধারণ নিত্যযাত্রীরা।

সপ্তাহে শনিবার মথুরাপুর হাটের দিন সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ খেয়া-পারাপার করে থাকে। আর সেই দিনে খেয়া-পারাপার বন্ধ থাকায় সাধারণ মানুষকে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়তে হয় ।দুই থেকে তিনটি নৌকা চোরাপথে খেয়া-পারাপার করলেও পরবর্তীতে ভয় পেয়ে তারাও খেয়া-পারাপার বন্ধ করে দেয় ।মানিকচক নদী ঘাটে গিয়ে দেখা গেল খেয়া পারাপারের অপেক্ষায় বহু মানুষ ।মালদার লক্ষীপুরের বাসিন্দা বিশ্বনাথ গোস্বামী জানান, ওপার ঝাড়খন্ডে আত্মীয়ের বিয়েবাড়িতে যাওয়ার জন্য প্রায় চার ঘণ্টা অপেক্ষা করছি। জানিনা মাঝিদের মধ্যে কি হয়েছে ।খেয়া-পারাপার করছে না ।যবে থেকে লঞ্চ বন্ধ হয়েছে   এরকম সমস্যা লেগেই রয়েছে ।আমি সরকারের কাছে অনুরোধ করব খুব শীঘ্রই লঞ্চ এর মাধ্যমে খেয়া পারাপারের ব্যবস্থা করার ।ঝাড়খণ্ডের পাহাড়পুরের বাসিন্দা বলরাম মন্ডল জানান ,অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য খুব সকালে মালদা  গেছিলাম ।ফিরে এসে দেখি নৌকা বন্ধ ।ছয় মাসের ছোট্ট ছেলে ও অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে খুব সমস্যায় পড়েছি। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে খুব শীঘ্রই খেয়া পারাপার চালু হবে এই আশায় আছি।

মানিকচক থানার আইসি অক্ষয় পাল জানান ,এটি দীর্ঘদিনের সমস্যা। আমরা ঝাড়খণ্ডের রাজমহল থানার সঙ্গে যোগাযোগ করেছি ।খুব শীঘ্রই এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান করা হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here