নদীয়া, বি ব্যানার্জীঃ- করোণা বিপর্যয় ও দীর্ঘ লকডাউনের ফলে কার্যত থমকে গিয়েছে কৃষ্ণনগর কুমারটুলি সহ পার্শ্ববর্তী কুমোর পাড়ার স্বাভাবিক ছন্দ। কৃষ্ণনগর কুমারটুলির পুতুল বা প্রতিমার সুখ্যাতি রয়েছে সারা পৃথিবী ব্যাপী। যার সুবাদে সারা বছরই পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকে ওই এলাকাজুড়ে। আজ সেই স্বাভাবিক ছবি বিলীন হতে বসেছে করোনার করাল গ্রাসে। দেশব্যাপী করোনা আতঙ্ক ও দীর্ঘমেয়াদী লকডাউন এর কারণে পর্যটকরা আসতে পারছেন না কুমোরপাড়া গুলিতে। যার ফলে তার প্রভাব পড়েছে ছোট থেকে বড় পুতুল ও প্রতিমা বেচাকেনা তে। পর্যটক ও পুতুল প্রেমীদের আনাগোনার কমে যাওয়ার ফলে তার বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে মৃৎশিল্পীদের ভরারে। বর্তমানে কার্যত কর্মহীন হয়ে অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন ওই এলাকার বহু গুণী শিল্পীরা। অন্যান্য বছর এই সময় শিল্পীদের দুর্গা প্রতিমা তৈরি করার ব্যস্ততার ছবি বহুবার উঠে এসেছে ক্যামেরার লেন্সে। কিন্তু এই বছর সেই ছবি কার্যত বিলীন হয়ে গিয়েছে স্মৃতির অন্তরালে। বিশ্বজুড়ে এই করোনা বিপর্যয়ের কারনে এবছর দুর্গা প্রতিমা তৈরিতেও তেমন একটা বায়না হয়নি শিল্পীদের। যার ফলে সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হতে বসেছে তাদের রুটি-রোজগারের শেষ সম্বল টুকু ও। এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে তাদের দাবি,অবিলম্বে সরকার পক্ষ থেকে আর্থিক সাহায্য সহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা না পেলে ভবিষ্যতে হয়তো হারিয়ে যাবে কৃষ্ণনগরের এই সূপ্রাচীন বিশ্ব বিখ্যাত শিল্পকলা। যার প্রভাব এখনি পড়তে শুরু করেছে শিল্পীদের বাস্তব জীবনে। বহু মৃৎশিল্পী পেটের টানে সংসার অতিবাহিত করার জন্য পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া এই শিল্পকলা ছেড়ে হয় সবজি বিক্রি করছেন নয় তো টোটো চালিয়ে জীবন অতিবাহিত করছেন। তাদের আশঙ্কা এভাবে চলতে থাকলে পাশাপাশি সরকার যদি তাদের দিকে মানবিক না হন তাহলে একদিন হয়তো সত্যিই কঠিন বাস্তবের অতলে হারিয়ে যাবে শতাব্দীপ্রাচীন বিখ্যাত এই শিল্পকলা ও শিল্পীরা। কুমোরটুলির শিল্পীদের হাতের নিপুন ছোয়ায় প্রাণবন্ত দেব দেবীর প্রতিমা হয়তোবা আর সাত সাগর পাড়ি দিয়ে পৌছাবেনা বিদেশের মাটিতে।