সুভাষ চন্দ্র দাশ,ক্যানিং – হেলমেট হীন,কানে মোবাইল গুঁজে অসতর্ক ভাবে বেপরোয়া যান চলাচলের জন্য একাধিক পথ দুর্ঘটনা, একাধিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে চলেছে।যা কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ কে ও হার মানিয়ে দেবে।কে শোনে কার কথা!উন্মাদ,মদ্যপ অবস্থায়,হেলমেট হীন ভাবে বাইক,গাড়ী চালিয়ে যেন অভ্যস্থ।“
সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ” নামক যতই সতর্কবানী কিংবা প্রচার হোক না কেন কোন কথা কিংবা নিয়ম কানুন তোয়াক্কা না করেই অনেকেই আজ খুবই অল্প বয়সে পরিবারের সকলকে ছেড়ে কেউ শশ্মানে আবার কেউ বা আবার কবরে স্থান দখল করে স্মৃতি হয়ে গিয়েছে নিঃশব্দে।
হয়তো হেলমেট পরে স্বাভাবিক গতিতেই গাড়ীটি চালালে সেদিনই দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হতো না অনাথ,অমূল্য,অমরদের কে।
সে বিষয়ে দুর্ঘটনা এড়িয়ে হেলমেট পরে গাড়ী চালানোর অাবেদন নিয়ে ক্যানিং মহকুমা পুলিশ প্রশাসন এবং ক্যানিং ট্রাফিক পুলিশের উদ্যোগে ক্যানিং বাসষ্ট্যান্ডে শুক্রবার এক পদযাত্রার মাধ্যমে জনসাধারণ কে মুখ্যমন্ত্রীর সাধের “সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ” কর্মসূচীর বিষয়ে সচেতনতা করা হয় বিশেষ অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ক্যানিং পশ্চিমের বিধায়ক পরেশরাম দাস,ক্যানিং মহকুমা শাসক আজহার জিয়া,ক্যানিং ১ বিডিও শুভঙ্কর দাস,ডিএসপি ট্রাফিক সৌম্যশান্ত পাহাড়ী,ক্যানিং মহকুমা পুলিশ আধিকারী গোবিন্দ শিকদার,ক্যানিং থানার আইসি আতিবুর রহমান,ক্যানিং ট্রাফিক ওসি দেবপ্রসাদ সরদার,ক্যানিং মহকুমা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারীক আইনুল হক সহ অন্যান্যরা।
এত কিছুর পরও কিন্তু বিধি বাম, ট্রাফিক নিয়ম কে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বাইকের সামনে পুলিশ,প্রেস,অ্যাডভোকেট,এক্স আর্মি,ডাক্তার,এমারজেন্সী,অন্যকোন স্টীকার লিখে দিব্যি হেলমেটহীন,সিট বেল্টহীন গাড়ী চালকের সংখ্যা বেড়েই চলেছে দিনের পর দিন। এছাড়াও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর “সেফ ড্রাভই সেভ লাইভ” বানচাল করতে কিছু রাজনৈতিক দলের নেতাদের জুড়িমেলা ভার। বিশেষ করে ইদানিং বেশ কিছু রাজনৈতিক সব নেতা নেত্রীরা একটি বাইকে দুজন কিংবা তিনজন করে হেলমেট হীনভাবে দাপটের সাথে মিটিং মিছিল কিংবা এলাকায় যাতায়াত করে থাকেন।
নিয়ম ভেঙে গাড়ী চালানোর জন্য যদিও বা ট্রাফিক পুলিশ ধরেন তাঁকে ও নেতা নেত্রীরা ধমক দিয়ে ভাইয়ের বাইক ছেড়ে দিতে নির্দেশ দেন।
এই ক্ষেত্রে পুলিশ যদি সঠিক নিয়ম মেনে গাড়ী না ছাড়েন তাহলে অাবার উর্দ্ধতন পুলিশ অফিসার নেতাদের কথায় গাড়ী ছেড়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। তাছাড়াও যাঁরা রাস্তার উপর রোদ ঝড় জল উপেক্ষা করে ট্রাফিক সামলান সেই সমস্ত ট্রাফিক পুলিশ কর্মীরা নেতাদের কথা না শোনায় যাতে শাস্তি হয় সে বিষয়ে তোড়জোড় শুরু করেন উর্দ্ধতন অফিসাররা।এছাড়াও অনেক সময় পকেট ভারী করার জন্য ১০০/২০০ টাকা নিয়ে নিয়ম বহিঃর্ভুত গাড়ী কিংবা চালককে ছেড়ে দেওয়া হয়।সেদিকে গুরুত্ব দিয়ে যদি বিবেচনা করা যায় তাহলে “সেভ ড্রাইভ সেভ লাইফ ” কর্মসূচীর প্রভাব বা বিস্তার লাভের পাশাপাশি সমাজে আখেরে লাভ হতে বাধ্য এমনটাইষমত বিশিষ্টজনেদের।
উল্লেখ্য কোন কিছু না দেখেই যদি সাধারণ ভাবে একটু নিয়ম মেনে সতর্ক হলেই তবেই কমবে এমন দুর্ঘটনা।
এছাড়া বিশেষ করে ট্রাফিক পুলিশ যদি একটু সতর্ক ভাবে পুলিশ,প্রেস,অ্যাডভোকেট,এক্স আর্মি,এমারজেন্সী,অন ডিউটি ষ্টীকার সাঁটানো গাড়ী গুলি সঠিক ভাবে গাড়ীর কাগজ,ড্রাইভিং লাইসেন্স,চালকের পরিচয়,কিংবা গাড়ীতে যে ষ্টীকার সাঁটানো রয়েছে সেটি সঠিক কি না সে সম্পর্কে একটু সজাগ হলে কিছুটা হলেও হেলমেট হীন উদভট গাড়ী ও গাড়ীর চালকের সংখ্যা কমতে বাধ্য হবে।কারণ গাড়ীতে এমনই ষ্টীকার সাঁটিয়ে ইদানিং দুষ্কৃতি থেকে সমাজ বিরোধীরা বুক ফুলিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।
ফলে সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ সম্পর্কে সচেতনতার পাশাপাশি প্রশাসন ও জনসাধারণ স্বতঃষ্ফুর্ত ভাবে আইনকে প্রাধান্য দিয়ে এগিয়ে না এলে আগামী দিনে অারো প্রচুর অমূল্য,অমর,অনাথরা সমাজের বুক থেকে হারিয়ে যাবে!
এদিন কর্মসুচী তে ক্যানিং পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রে বিধায়ক পরেশরাম দাস জনসাধারণ কে সচেতন করার পাশাপাশি পুলিশকে কঠোর হওয়ার আবেদন জানান।সেই সাথে তিনি বলে কোন প্রকার নিয়ম বহিঃর্ভূত গাড়ি কিংবা গাড়ি চালক এমনকি হেলমেট হীন বাইক চালক কে ধরে কেস দিন। কোন দাদা কিংবা নেতার কথা শুনবেন না’।
অন্যদিকে ক্যানিং মহকুমা শাসক আজহার জিয়া বলেন ‘পুলিশ প্রশাসন সাধারণ মানুষ কে যেমন সচেতন করছেন,তেমন সাধারণ মানুষদের কে ও উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। এবং সেটাই হবে একমাত্র সচেতনতার মূল্যবোধ। ’
প্রশাসন সুত্রের খবর এমন সচেতনতা আগামী ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারী পর্যন্ত চলবে। এদিন অনুষ্ঠানে বেশকিছু হেলমেট হীন বাইক চালক কে সতর্ক করে তাদের মাথায় হেলমেট তুলে দেয় প্রশাসনিক আধিকারীকরা।