সুভাষ চন্দ্র দাশ, ক্যানিং —পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিভিন্ন প্রলোভনের ফাঁদে পা দিয়ে একাধিক নারী ভিনরাজ্য সহ বিদেশে পাচার যায়।এমন ঘটনায় উদ্বিগ্ন প্রশাসন থেকে সকল বুদ্ধিজীবী মানুষজন,সমাজসেবী,স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীরাও।
সেই মানব পাচার রোধে মঙ্গলবার এক বিশেষ সচেতনতা শিবিরের আয়োজন করেছিলেন বারুইপুর জেলা পুলিশের ঝড়খালি কোষ্টাল থানার পুলিশ।সেমিনার টি অনুষ্টিত ঝড়খালি কোষ্টাল থানার অন্তর্গত নফরগঞ্জ বৈদ্যনাথ বিদ্যাপীঠ এ।পথ নাটিকার মাধ্যমে মানব পাচার রোধ এবং ট্রাফিক সচেতনতা করা হয়।
এই মানব পাচার রোধ ও ট্রাফিক সচেতনতা কর্মসুচির বিশেষ সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন বাসন্তীর বিডিও সৌগত সাহা,ঝড়খালি কোষ্টাল থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারী প্রদীপ রায়,ক্যানিং মহিলা থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারী তনুশ্রী মন্ডল সহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রতিনিধি সহ অন্যান্যরা।
উল্লেখ্য প্রত্যন্ত এই সুন্দরবন এলাকা থেকে প্রতিবছর বহু শিশু, কিশোরী এমনকি মহিলারা পাচার হয়ে যায় ভিন রাজ্যে। এ বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরেই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুলিশ তথা দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পুলিশ কাজ করে আসছে। তবুও এখন পর্যন্ত এই পাচার প্রক্রিয়া বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। সুন্দরবন এলাকার অনুন্নত অর্থনৈতিক ব্যবস্থা, শিক্ষার অভাবের কারণেই এই সমস্যা এখন পর্যন্ত দূর করা সম্ভব হয়নি। ফলে এখন প্রতিবছর কখনও বিয়ের লোভ দেখিয়ে তো কখনো কাজ বা টাকার লোভ দেখিয়ে পাচারকারীরা সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে মানুষ পাচার করে নিয়ে যাচ্ছে। আর সেই তালিকায় সব থেকে বেশি রয়েছে বারো থেকে ষোল বছরের কিশোরীরা। ভিন রাজ্যে তাদের নিয়ে গিয়ে বিক্রি করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। কখনো কখনো অভিযোগ ও সঠিক তথ্য পেয়ে দু একজনকে পুলিশ উদ্ধার করে নিয়ে আসতে সক্ষম হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পাচার হয়ে যাওয়া মানুষজন আর তাদের বাড়ি ফিরতে পারেন না। সেই কারনে এ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এই মানব পাচার বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সরকারের এই কাজে বিভিন্ন এনজিও পাশে দাঁড়িয়েছে। আর এবার এই মানব পাচার রুখতে সুন্দরবনের মানুষকে সচেতন করতে পথে নামলেন বারুইপুর পুলিশ জেলার ঝড়খালি কোষ্টাল থানার পুলিশ প্রশাসন।এদিন বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী এবং সুন্দরবনবাসীর উদ্দেশ্যে বিশিষ্টরা জানিয়েছেন ‘মানব পাচার শুধুমাত্র সুন্দরবনের সমস্যা নয়। এ সমস্যা যেমন সারা পশ্চিমবঙ্গের তথা সমগ্র ডেশের।আর সেই কারণে সকলে মিলে এই সমস্যার সমাধান করতে হবে। পরস্পর পরস্পরকে সচেতন করার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব।
সমগ্র বিশ্বের কাছে সুন্দরবন লাল সংকেতে চিহ্নিত। দারিদ্রতার সুযোগ নিয়ে প্রলোভন দেখিয়ে এখানে গোপনে পাচার চক্র কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।এরা মুলত নারী শিশু দের কে পাচার করে বিক্রি করে মুনাফা লুঠতে ব্যস্ত। এই সমস্ত পাচারকারীদের বিরুদ্ধে আমাদের কে সজাগ এবং সচেতন হতে হবে। সমাজের প্রতি অঙ্গীকার বদ্ধ হয়ে উপড়ে ফেলতে হবে এই পাচারের শিকড়। গড়ে তুলতে হবে সভ্য পাচার বিহীন সুস্থ সমাজ।”