গান-বাজনা মোতিচুর এই তিন নিয়ে মন্দির নগরী বিষ্ণুপুর।

আবদুল হাই, বাঁকুড়াঃ সবাই তো শুনেছেন শক্তিগড়ের ল্যাংচা বা বর্ধমানের মিহিদানা আর কথা, কেউ কি শুনেছেন লালমাটি জেলা বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের তৈরি হয় প্রসিদ্ধ রাজকীয় মিষ্টি যা মোতিচুর নামে পরিচিত।কয়েক শত বছর আগে দিল্লীর দরবারের পাঞ্জা নিয়ে বিষ্ণুপুরে দরবারে একছত্র অধিপত্য বিস্তার করেছিলেন মল্ল রাজারা আর মল্ল রাজাদের নিদর্শন স্থাপত্য ভাস্কর্য এখন বিষ্ণুপুরে গেলেই তার আনাচে-কানাচে চোখে পড়ে। মল্ল রাজারা শুধু স্থাপত্য তৈরিতে থেমে থাকেনি এই রাজাদের রসবোধ সাংস্কৃতিক চর্চার কথাও ইতিহাস বইয়ের থেকে খুজলে পাওয়া যায়। মল্লরাজাদের উপাস্য দেবতা ছিলেন রাধাগোবিন্দ, একদা কোন এক মল্ল রাজা রাজ মোদককে পরাগ বরাত করেছিলেন তাদের উপাস্য দেবতার জন্য তৈরি করা এক ভিন্ন ধরনের ভোগ মিষ্টান্ন।বরাত মেলা সাথে সাথেই রাজ মোদক পিয়াল গাছের বীচ কে কে তৈরি করে ফেললেন এক ধরনের ব্যাসন, সেই ব্যাসন থেকে তৈরি হলো একধরনের বিষেশ লাড্ডু। পিয়াল বীচের ব্যাসন থেকে যে দানা গুলি তৈরি হতো মিহিদানার থেকে সাইজ একটু বড় এবং সেগুলি মোতির ন্যায় চকচক করতো বলে তার নাম হলো মোতিচুর। কালের নিয়মে আজ পিয়ালগাছ বিলুপ্ত হয়েছে, পিয়াল ফলের বীচ থেকে আর ব্যাসন প্রস্তুত হয়না। এখন মটরডালের ব্যাসন থেকে গাওয়া ঘি মিশিয়ে বংশ পরম্পরায় একই ভাবে মল্লগড় বিষ্ণুপুরের মোদকেরা প্রস্তুত করে চলেছেন এই মিষ্টান্ন। বিষ্ণুপুরের একাংশ মোদকের দাবি যেভাবে শক্তিগড়ের ল্যাংচা বা বর্ধমানের মিহিদানা জিআই স্বীকৃতি পেয়েছে সেইভাবেই জিআইসি ত্রিপাদ বিষ্ণুপুরের এই মোতিচুর লাড্ডু। মোদকদের ইচ্ছে ছড়িয়ে পড়ুক এই মোতিচুরের কথা দেশ, বিদেশের প্রতিটা প্রান্তে যাতে একবার এই মিষ্টি চেখে দেখতে একবার বিষ্ণুপুরে আসুক মিষ্টি প্রেমিক মানুষেরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *