টাওয়ার বসানোর নাম করে একের পর এক গ্রাহকের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতারণা, গ্রেফতার পুরো প্রতারক চক্র।

আবদুল হাই, বাঁকুড়াঃ খোদ কলকাতার বুকে রীতিমত কল সেন্টার খুলে ফোন করে সাধারণ মানুষকে টেলিফোনের টাওয়ার বসানোর প্রস্তাব দেওয়া হত। বিনিময়ে মাসে লক্ষাধিক টাকার ভাড়া দেওয়ার প্রস্তাবও দেওয়া হত। প্রস্তাবে পা বাড়ালেই ধীরে ধীরে নানা অছিলায় তাঁর ব্যাঙ্ক আকাউন্ট থেকে সরিয়ে ফেলা হত লক্ষ লক্ষ টাকা। সম্প্রতি বাঁকুড়ার জয়পুরের এমনই এক প্রতারনার ঘটনার তদন্তে নেমে গোটা প্রতারক চক্রটিকেই গ্রেফতার করতে সমর্থ হল বাঁকুড়া জেলা পুলিশ।
সম্প্রতি বাঁকুড়ার জয়পুর থানার বংশী চন্ডীপুর গ্রামের বাসিন্দা রাহুল বটব্যাল জয়পুর থানায় হাজির হয়ে তাঁর প্রতারনার অভিযোগ জানান। তিনি জানান টেলিফোনে প্রতারকরা তাঁকে
মোবাইল টাওয়ার বসানোর প্রস্তাব দেয়। সেই প্রস্তাবে রাজী হলে ধীরে ধীরে তাঁর কাছ থেকে প্রায় ১৪ লক্ষ টাকা নিয়ে প্রতারনার করা হয়েছে। অভিযোগ পেতেই নড়েচড়ে বসে বাঁকুড়া জেলা পুলিশ। ফোন নম্বর ট্র‍্যাক করে গত ১৯ জুলাই রজত অধিকারী, রাজীব মজুমদার ও অনুপম মন্ডলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এই তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে কলকাতার এয়ারপোর্ট থানার মহাজাতিনগর এলাকার একটি কল সেন্টারের সন্ধান পায় তদন্তকারীরা। এরপর গত কাল ওই কল সেন্টারে অভিযান চালিয়ে এই চক্রে যুক্ত শির্ষেন্দু দে,বিবেকানন্দ মন্ডল ও অভিজিৎ সরকার নামের আরো তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই কল সেন্টারে কর্মরত আরো ১২ জন কর্মীকে প্রাথমিক ভাবে পুলিশ ধরলেও প্রতারনার ঘটনায় তাদের সেভাবে যোগ না থাকায় পুলিশ পরে তাদের ছেড়ে দেয়। পুলিশ জানিয়েছে গোটা চক্রের মাস্টার মাইন্ড সিভিল ইঞ্জিনিয়ার শির্ষেন্দু দে ও রজত অধিকারী। তদন্তকারীদের ধারণা এই প্রতারক দলটি অন্য কোনো জায়গায় প্রতারনার কাজ শিখেছিল। কিন্তু এই দলটির সাথে জামতাড়া গ্যাঙের যোগ নেই বলেই প্রাথমিক ভাবে মনে করছে তদন্তকারীরা। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এই চক্রে আর কেউ যুক্ত রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। দলটি শুধু জয়পুরের রাহুল বটব্যাল নয় এমন বেশ কিছু সাধারণ মানুষের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল বলে ধারনা পুলিশের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *