চাঁদের বিলে দীপান্বিতা অমাবস্যায় ২৫ তম বর্ষে শ্যামা মায়ের পুজো—ভোগে বারো রকম মাছ!

পূর্বস্থলী, নিজস্ব সংবাদদাতাঃ- আজ দীপান্বিতা অমাবস্য্যা।আজ শ্যামা মায়ের পুজো। আজ আলোর উৎসব দীপাবলি। আপামর বাঙালি মেতে উঠেছে শ্যামা মায়ের পুজোর আরাধনায়। সারা রাজ্যের মত পূর্বস্থলী ১ নম্বর ব্লকের বাঁশদহ ও চাঁদের বিলের পারে চুনো বিলে কালীপুজোয় মেতে উঠেছে এলাকার মানুষজন। উল্লেখ্য নাদন ঘাট থানার বিদ্যানগর ও সমুদ্রগড় পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে রয়েছে চাঁদের বিল ও বাঁশদহ বিল। একসময় এই বিল থেকে চুনো মাছ সহ অন্যান্য মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করত এই এলাকার বহু মৎস্যজীবী পরিবার। এছাড়াও বিল পারের জমিতে চাষাবাদ করেও ঘর সংসার চালাতেন বহু মানুষজন। ধীরে ধীরে মজে যাওয়ার কারণে বিলে জল ধারণ ক্ষমতা কমে যায় এবং কচুরিপানায় ঢেকে যায় গোটা বিল। ফলে মাছ উৎপাদন অনেকটাই কমে যায়। এর ফলে সমস্যায় পড়েন এলাকার মৎস্যজীবীরা। এরপর ২০০১ সালে মৎস্যজীবী ও চাষীদের পাশে দাঁড়ান বর্তমানে এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। তখন তিনি মন্ত্রী বা বিধায়ক ছিলেন না। নিজের উদ্যোগে বিল এবং চুনো মাছ কৃষিকাজ বাঁচাতে বিল সংস্কারের উদ্যোগ নেন। সেই সময় তিনি এই চুনো বিলে কালি পুজো শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে এই বিল সংস্কার হয়। মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। এতে মৎস্যজীবীদের অনেক উপকার হয়। সেই থেকে চলে আসা এই চুনো বিলে কালীপুজো এবার ২৫ তম বছরে পদার্পণ করল। এই পুজোর কিছু বৈশিষ্ট্য আছে। এখানে মাকে চুনো মাছের ভোগ নিবেদন করা হয়। এক দুরকম নয় মৌরালা, শোল, খোলসে, পুটি ,কই, টেংরা,বেলে, চাঁদা সহ বারো রকমের মাছের পদ সাজিয়ে ভোগ দেওয়া হয়। এখানে মাকে মাছের সাথে সাথে কাঁকরার ভোগ ও দেওয়া হয়। মইয়ে করে মাছের ভোগ নিয়ে আসা হয় মায়ের মন্দিরে। মন্দির প্রাঙ্গণে মাছ ধরার জাল সহ নানা সরঞ্জাম সাজানো থাকে। কথিত আছে চাঁদ সওদাগরের সপ্তডিঙ্গা এই বিলেই ডুবে গেছিল। সেই কারণেই এই বিলের নাম চাঁদের বিল। বিল সংস্কার করে মৎস্যজীবীদের জীবিকা নির্বাহের পথ সুগম করা, চাষের জন্য পর্যাপ্ত জলের ব্যবস্থা করার লক্ষ্যেই এই পুজো শুরু করেন রাজ্যের প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। খড়ের ছাউনি থেকে পূজোর শুরু হলেও আজ এখানে একটি সুদৃশ্য মন্দির হয়েছে। আজ জেলাশাসক আয়েশা রানী এ ফিতে কেটে এবং প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে এই বছরের পূজোর শুভ সূচনা করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *