জলপাইগুড়ি, নিজস্ব সংবাদদাতাঃ- নাবালিকা ধর্ষণের চেষ্টা ও শ্লীলতাহানীর অভিযোগ আগেই দায়ের হয়েছিল । আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পর অভিযুক্ত কিছু লোকজন নিয়ে গিয়ে ওই নাবালিকাকে হুমকি দেয় এবং বলে এই বিষয়ে থানায় বা কোন প্রতিবেশী কে জানালে তাকে সপরিবারে প্রাণে মেরে ফেলা হবে, ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হবে। এই অবস্থায় ওই নাবালিকার মনে ভীতির সঞ্চার হয়। বৃহস্পতিবার সকালে ওই নাবালিকা গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা চেষ্টা করে। বাড়ির লোকজন জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি নিয়ে গেলে নাবালিকার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে এ দিন শিলিগুড়ি মেডিকেল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে নাবালিকা মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে।
এ খবর চাউর হতেই জেলাজুড়ে পথে নামার কর্মসূচি ঘোষণা করে সিপিআই (এম) জেলার বিভিন্ন থানায় নববর্ষের দিন হওয়া সত্বেও দেখা করে অবিলম্বে দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান নেতৃবৃন্দ।
সিপিআইএম জেলা সম্পাদক সলিল আচার্য এসপি জলপাইগুড়ির সাথে যোগাযোগ করে অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবি তোলেন এবং ১৬ই এপ্রিল ময়নাগুড়ি থানা ঘেরাও সহ জেলার বিভিন্ন থানায় ডেপুটেশনের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।
সারা ভারত মহিলা সমিতির উদ্যোগে শনিবার জলপাইগুড়ি শহরে মিছিল করে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার আইসির সাথে দেখা করেন নেতৃবৃন্দ।
মিছিল শেষে দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ ও কিছুক্ষণ পথ অবরোধ করেন মহিলা নেতৃবৃন্দ। সিপিআই(এম) পক্ষ থেকে বিরাট মিছিল করে ময়নাগুড়ি থানা ঘেরাও করা হয়। আইসি ময়নাগুড়িকে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান পার্টির নেতৃবৃন্দ। জলপাইগুড়িতে মহিলা সমিতির বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন ধুপগুড়ির প্রাক্তন বিধায়ক মমতা রায়, মহিলা নেত্রী কৃষ্ণা সেন সহ অন্যান্য মহিলা নেতৃবৃন্দ। জেলা সম্পাদিকা রিনা সরকার বলেন গোটা রাজ্যে মহিলাদের ওপর যেভাবে গত একমাসে আক্রমণ নেমে এসেছে তা সভ্য সমাজের পক্ষে লজ্জার আমরা লজ্জিত পশ্চিমবঙ্গবাসী হিসাবে যেখানকার মহিলা মুখ্যমন্ত্রী নির্যাতনের ঘটনার পরে মহিলার ভাব ভালোবাসা প্রসঙ্গ তুলে ঘটনাকে লক্ষ্য করে দেখানোর চেষ্টা করেন।
বর্ষিয়ান পার্টি নেতা বিজয় বন্ধু মজুমদার বলেন আইসি ময়নাগুড়ির কাছে আমরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছি যাতে আর কোন মহিলাকে এভাবে নির্যাতিত না হতে হয়।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য গত ফেব্রুয়ারি মাসের ২৪ তারিখ এই ঘটনা ঘটে ময়নাগুড়ি ব্লকের জোরপাকড়িতে। পরে অভিযুক্তের নামে ময়নাগুড়ি থানায় অভিযোগ জমা পড়ে। অভিযুক্ত ধরা না পড়লেও পরবর্তীতে আদালত থেকে জামিন জামিন পায় । এরপর অভিযুক্ত নাবালিকার বাড়িতে , গিয়ে এই ঘটনা নিয়ে কাউকে কিছু বললে বা থানায় অভিযোগ জানালে সপরিবার মেরে ফেলার হুমকি, সেইসঙ্গে তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। এর পরই না বালিকা আত্মহত্যার চেষ্টা করে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ বিষয়ে তদন্তে ময়নাগুড়ি থানায় আসেন জেলা পুলিশ সুপার দেবষি, দত্ত ডিএসপি ক্রাইম বিক্রম জিৎ লামা ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার । জানা গেছে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা অজয় ও তার ভাই মূল অভিযুক্ত বিজয় কে শনিবার পুলিশ গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের শনিবার জেলা আদালতে নিয়ে আসা হলে বিচারক তাদের ১৪ দিনের
জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
Leave a Reply