গ্ৰাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী বাঁশশিল্প বিলুপ্তির পথে ।

আবদুল হাই,বাঁকুড়া:-আধুনিক সভ্যতার প্লাস্টিক সামগ্রীর দাপটে বাংলা হারাতে বসেছে বাঁশ ও বেত শিল্পের নান্দনিক ব্যবহার। বাঁশ আর বেতের তৈরি বিভিন্ন পন্যের চাহিদা কমে যাওয়ায় ভালো নেই এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত কারিগররা। তবুও বাপ-ঠাকুরদার এই পেশাকে এখনও জীবিকার প্রধান বাহক হিসাবে আঁকড়ে রেখেছে বাঁকুড়ার গঙ্গাজল ঘাটির রাজামেলা গ্রামের প্রায় ৮০টি পরিবার।

বর্তমান প্রযুক্তির যুগে বাঁশ ও বেত শিল্পের তৈরি মনমুগ্ধ বিভিন্ন জিনিসকে হার মানিয়ে জায়গা করে নিয়েছে স্বল্প দামের প্লাষ্টিক ও স্টিলের তৈরি পন্য। তাই বাঁশ ও বেতের তৈরি মনমুগ্ধকর সেইসব পন্য এখন হারিয়ে যাওয়ার পথে। কদর না থাকায় গ্রামাঞ্চল থেকে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী বাঁশের তৈরী বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় আকর্ষনীয় আসবাবপত্র। অভাবের তাড়নায় এই শিল্পের কারিগররা দীর্ঘদিনের বাপ-ঠাকুরদার পেশা ছেড়ে আজ অনেকে অন্য পেশার দিকে ছুটছে। শত অভাব অনটনের মাঝেও জেলার গঙ্গাজল ঘাটির রাজামেলায় হাতে গোনা কয়েকটি পরিবার আজও পৈতৃক এই পেশাটি ধরে রেখেছেন। যেখানে একযুগ আগেও এ এলাকায় একাধিক পরিবার এ পেশার সাথে সম্পৃক্ত ছিল। জীবিকা নির্বাহের তাগিদে আজ অনেক পরিবারই বাপ-ঠাকুরদার এই পেশা ছেড়ে অন্য পেশার দিকে ঝুঁকছেন। বর্তমানে আধুনিতার যুগে বাজারে সহজলভ্য ও আর্কষনীয় বিভিন্ন প্লাষ্টিক পণ্য ও আন্যান্য দ্রব্য মূল্যের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পারায় এই শিল্পের অনেক কারিগররা তাদের বাপ-ঠাকুরদার পেশা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।

গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী এসব বাঁশ শিল্পের কারিগররা তাদের পূর্ব পুরুষের এই পেশা আকঁড়ে ধরে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করেও হিমশিম খাচ্ছেন। দিন দিন বিভিন্ন জিনিসপত্রের মূল্য যে ভাবে বাড়ছে তার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে না এই শিল্পের তৈরি বিভিন্ন পণ্যের মূল্য। যার কারণে কারিগররা জীবন সংসারে টিকে থাকতে হিমশিম খাচ্ছেন।

মূলত সরকারি উদাসীনতার অভাবেই এলকার বাঁশ-বেতের ওই কুটিরশিল্প মুখ থুবড়ে পড়েছে বলে শিল্পীদের অভিযোগ । বছরের পর বছর হন্যে হয়ে ঘুরেও ঋণের সংস্থান না হওয়ায় কত দিন আর ওই পেশায় টিঁকে থাকতে পারবেন, তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন তাঁরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *