নদীয়ায় মন্ডপে পুজিত হবে দবী দূর্গার নয় রূপ, তথা নব দূর্গা।

নদীয়া, নিজস্ব সংবাদদাতা:- কয়েক প্রহর বাদে আপামর বাঙালি তথা বিশ্ব বাসী মাতবেন দেবী দূর্গার আরাধনায়।
কোথাও কোথাও পুজোর আমেজ শুরুও হয়ে গেছে।

সম্প্রতি দূর্গা পুজোকে ঘিরে উঠে এসেছে নানা আধুনিক বৈচিত্র্য, সেটা মন্ডপ সজ্জা থেকে প্রতিমা সবেতেই।

কোথাও থিমের ছোয়া তো কোথাও সাবেকি আনা, সকলেই সকলটে সেরার টেক্কা দিতে প্রস্তুত।

এমতাবস্থায় একদম ভিন্ন ভাবনায় পুজোর আয়োজন করেছে নদীয়ার নবদ্বীপ ব্লকের চরমাঝদিয়া পুরাতন পোষ্ট অফিস পাড়া বারোয়ারী পুজো কমিটি।

তাদের পুজোটা শুরু হয়েছিলো ২০০৯ সালে।

প্রথম থেকেই ভিন্ন ভাবনায় পুজো তুলে ধরে আসছেন তারা।

হয়তো নেই আধুনিকত্বের ছোঁয়া, নেই বিলাসিতা, কিন্তু তাদের ভাবনাটাই সম্পুর্ন আলাদা সকলের থেকে এবং তাদের এই ভাবনা নদীয়া জেলায় একমাত্র ও প্রথম বলেও দাবী পুজো উদ্যোক্তাদের। তাদের ভাবনায় পুজিত হয় নবদূর্গা, অর্থাৎ দেবী দূর্গার নয় রূপ একসাথে পুজো হয়।

আমরা সচরাচর দেবী দূর্গার একটি মূর্তী দেখি, সাথে থাকে তার পরিবার তথা লক্ষী, গনেশ, সরস্বতী, কার্তিক,।

কিন্তু দেবীর এই রূপ ছাড়াও আরও অনেক রূপ আছে, যেটাকে নবদূর্গা বলে।

নব দূর্গা বলতে আভিধানিক ভাবে দেবী পার্বতীর দুর্গার রূপের নয়টি রূপকে বোঝানো হয় ৷ হিন্দু পুরাণ অনুসারে এগুলো দেবী পার্বতীর নয়টি ভিন্ন রূপ ৷ এই নয় রূপ হল যথাক্রমে – শৈলকন্যা, ব্রহ্মচারিণী, চন্দ্রঘণ্টা, কুষ্মাণ্ডা, স্কন্দমাতা, কাত্যায়নী, কালরাত্রি, মহাগৌরী এবং সিদ্ধিদাত্রী ৷ প্রতি শরৎকালে নবরাত্রির নয় দিনে প্রতিদিন দেবী পার্বতীর দুর্গা রূপের এই নবরূপের এক একজনকে পূজা করা হয় ৷আসলে এই নয়টি রূপের সব গুন বর্তমান দেবী পার্বতীর দুর্গা রূপে, যেই রূপে দেবী পার্বতী বধ করেন হিরণ্যাক্ষাসুরের বংশধর অসুররাজ দুর্গমাসুরকে। দেবী দুর্গার অপর নাম “দুর্গতিনাশিণী”।

পুজো কমিটির সভাপতি ভোলানাথ সাহা বলেন আমরা সকলেই প্রতিযোগিতার নেশায় না দৌড়ে ভক্ত দের সামনে মায়ের সব কটি রূপ তুলে ধরার চেষ্টা করে আসছি।

গত কয়েক বছরে লোক মুখে নবদূর্গা পুজোর প্রচার হওয়ায় দর্শকের ভীড়ও হয় চোখে পড়ার মতো, মৃৎশিল্পী উত্তম দেবনাথ জানান আমি বাংলার বাইরে নবদূর্গা তৈরী করেছি কিন্তু নদীয়া তথা এ রাজ্যে এই প্রথম তৈরী করছি, পুজো উদ্যোক্তাদের ভিন্ন ভাবনায় ও তার নিপুন শিল্প কলায় ভক্ত তথা দর্শক দের টানবে বলেও আশাবাদী।

ভোলা নাথ সাহা আরও বলেন পুজোর কটা দিন গোটা এলাকা বাসী সকলে একসাথে পুজোর আনন্দ উপভোগ করে, সপ্তমি থেকে দশমি পর্যন্ত প্রতিদিন সকলের জন্য প্রসাদের ব্যাবস্থা করা হয়, দশমিতে মাছ মুখি করা হয়।

এছাড়াও এবছর পুজো উদ্বোধনেও থাকছে চমক তথা ভিন্ন ভাবনা,

তিনি জানান বেশ কিছু শিষুদের হাত দিয়ে এই পুজোর সূচনা বা উদ্বোধন করা হবে, কারন যারা ভবিষ্যৎকে এগিয়ে নিয়ে যাবে তাদের গুরুত্ব টাই বেশি, এছাড়া সাধারণ মানুষের মধ্যে বস্ত্র, মশারী দান কর্মসূচীর পাশাপাশি দেশের ৭৫ তম স্বাধীনতা দিবসকে সন্মান জানাতেও থাকছে কিছু অনুষ্ঠান।

সব মিলিয়ে প্রচারের আলোয় না আসতে পারলেও তারা তাদের ভিন্ন ভাবনায় পুজো করে পুজোর কটা দিন নিজেদের মতো করে আনন্দে পুজো কাটায়, সকলকে সাথে নিয়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *