উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ এর কুনোর পরিচিত টেরাকোটা গ্রাম হিসেবে।

উঃ দিনাজপুর, রাধারানী হালদারঃ- ঘুরছে চাকা নরম মাটিতে পা হাতের চাপে বদলে যাচ্ছে গরম। এরপর রোদে শুকানো। চুল্লিতে চলে পড়ানো। রং ধরে মাটিতে। তৈরি হয় একের পর এক টেরাকোটার গয়না। নানা ডিজাইনের। চলে এক্সপেরিমেন্ট। উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ এর কুনোর পরিচিত টেরাকোটা গ্রাম হিসেবে। কালিয়াগঞ্জ শহর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে কালিয়াগঞ্জ দুর্গাপুর রাজবাড়ী রোডে কুনরের হাটপাড়া। টেরাকোটার শিল্প গ্রাম। পোরা মাটির গ্রামমাটির গ্রাম। ঘরে ঘরে গয়নার আরত। চলছে এখন ভালোবাসার সপ্তাহ। তাই এখন এই গ্রামের এই গয়নার চাহিদা তুঙ্গে। অর্ডারও আসছে। নাইবা হল সোনার গয়না। মাটির সই। মাটির রঙে ক্রেতা দুরস্ত। মাটির নকশায় ব্যাতিক্রমী । আধুনিক জুয়েলারি ধাক্কা সামলে স্বমহিমায় ফিরতে চলছে বাংলার পোড়ামাটির গয়না। এবার সুদিন ধরে রাখার পরীক্ষা

বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ আর এই ১৩ পার্বণের মধ্যে এখন একটি উৎসবের মতন হয়ে দাঁড়িয়েছে ভালবাসার সপ্তাহ। ফলে ব্যস্ততা বেড়েছে কালিয়াগঞ্জের টেরাকোটা গ্রাম বলে পরিচিত কোন হাটপাড়ার টেরাকোটা শিল্পীদের। দিনরাত এক করে মাটির গয়না বানাতে ব্যস্ত তারা। বর্তমানে আধুনিক যুগে মাটির তৈরি নানান আকর্ষণীয় ডিজাইন এর গয়না পড়তে ভালোবাসেন। বিভিন্ন রঙে কারুকার্য করা ডিজাইরের এই গয়না শাড়ি চুরিদারের সাথে ম্যাচিং করে পড়তে চান অনেকেই। ফলে দিন দিন মাটির তৈরি গয়নার চাহিদা বাড়ছে। আর চাহিদা মত সেগুলোর যোগান দিতে এখন নাওয়া খাওয়ার ফুরসত নেই দুলাল রায় এর মত টেরাকোটা শিল্পীদের। মূলত গলার হার কানের দুল এইসবেরি এখন চাহিদা বেশি। আগে ঘর সাজাবার মাটির নানান রকম রকমের জিনিস বানালেও ধীরে ধীরে মাটির গয়না, জনপ্রিয় হয়ে ওঠায় এখন হাটখোলা এলাকায় এই শিল্পীদের সংখ্যা সামান্য বেড়েছে। এলাকার বেশ কিছু পরিবার প্রশিক্ষণ নিয়ে পেশায় যুক্ত হয়েছেন। এই মাটির গয়না শুধু রায়গঞ্জ বা জেলাতেই নয় দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশেও সুনাম অর্জন করেছে। মার্কিন মূলক ছাড়াও এই মাটির গয়না পাড়ি দেয় রাশিয়ার মতো দেশেও। এলাকার বিশিষ্ট টেরাকোটা শিল্পী দুলাল চন্দ্র রায় জানিয়েছেন প্রায় তিন থেকে চার দশক ধরে তিনি এই মাটির কাজের সঙ্গে যুক্ত। ব্যবসা ভালো হলেও করোনার ধাক্কায় বিগত কয়েক বছর মন্দার ছায়া গ্রাস করেছিল। বর্তমানে করনার দাপট নির্মূল হয়ে যাওয়ায় এর valentiness day উপলক্ষে এবার মাটির গয়নার চাহিদা চাঙ্গা হওয়ার আশা করছেন তিনি।
বেড়েছে চাহিদাও অনেকে বাড়িতে এসেও এই মাটির গয়না নিয়ে যান। ফলে দুপয়সা বাড়তি রোজগারের আশায় এখন হাড়ভাঙ্গা খাটনি করে গয়না বানিয়ে চলেছেন হাট খোলার সমস্ত শিল্পীরাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *