নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদাঃ—-প্লাস্টিক কুড়িয়ে সেগুলি কারখানায় বিক্রি করে কোনরকমের সংসার চালান হতদরিদ্র দিনমজুর মহবুবুল শেখ। শত কষ্টের পরেও শিক্ষার আলো থেকে ছেলেকে বঞ্চিত রাখেন নি তিনি। আর সেই ছেলেই আজ আইনের রক্ষক হিসাবে ডেপুটি পুলিশ সুপার পদমর্যাদার অফিসার হিসেবে যোগ দিতে চলেছেন। একটা সময় বোমা, গুলি, সংঘর্ষের আঁতুড়ঘড় হিসেবে পরিচিত ছিল কালিয়াচক থানার বামনগ্রাম। কিন্তু রাজ্যে ক্ষমতার পালাবদলের পর তৃণমূল সরকার যে ধীরে ধীরে দুর্গম গ্রাম গ্রামগুলোতেও শিক্ষার আলো পৌঁছে দিতে পেরেছে, সেটা তার জলজ্যান্ত উদাহরণ কালিয়াচকের বামনগ্রামের সেই যুবক নিশাদ খালেদ। তাঁর এই সাফল্যে পরিবারের পাশাপাশি প্রশংসায় পঞ্চমুখ গোটা গ্রাম। এই প্রথম কালিয়াচক থানার মোসিমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বামনগ্রাম থেকে কোন এক যুবক আইনের রক্ষক হিসাবে ডেপুটি পুলিশ সুপারের পদমর্যাদার আধিকারিক হতে চলেছেন ।
নিসাদ খালেক ডেপুটি পুলিশ সুপার হবে তা জানতে পেরে বাবা মহবুবুল শেখ, মা উনজেলা বিবি সহ অন্যান্য ভাই-বোনেরা চরম উচ্ছ্বাসিত। গরিব পরিবার হলেও ছেলের সাফল্যের পাড়া-প্রতিবেশীদের মিষ্টি মুখ করাতে কিন্তু ভুলে যান নি হত-দরিদ্র দম্পতি মহবুবুল শেখ এবং উনজেলা বিবি ।
নিশাদ খালেদ জানিয়েছেন, ছোট থেকেই তিনি আল আমিন মিশনের পাঠরত ছিলেন। সেই শিক্ষা সংস্থার সহযোগিতায় ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সুযোগ পান। ২০২০ সালে ডাব্লুবিসিএস লিখিত পরীক্ষায় সফল হন। বি গ্রুপে তার নাম উঠে আসে পাঁচ নম্বরে। তারপরে নিশাদ নিজেকে আইনের রক্ষক হিসাবেই এই পথ বেছে নিয়েছেন।
নিশাদ খালেদ আরো বলেন, আমি ছোট থেকেই দেখেছি একটা সময় গ্রামের কি অবস্থা ছিল। মাঝেমধ্যেই বোমাবাজি, গুলি চলতো। রাজনৈতিক সংঘর্ষ তো হামেশাই লেগে থাকতো। কতজনের প্রাণ গিয়েছে। কিন্তু আইনের রক্ষক হিসাবে এই ধরনের অপরাধ ঠেকাতে আমি ছোট থেকেই স্বপ্নে বিভোর ছিলাম । তাই আমার জেদ ছিল আইনের রক্ষক হওয়ার । অবশেষে সকলের আশীর্বাদ এবং সহযোগিতায় আমি ডেপুটি পুলিশ সুপারের পদমর্যাদা অফিসার হতে পেরেছি। খুব শীঘ্রই ট্রেনিংয়ের ডাক পড়বে।
Leave a Reply