এক বাম সমর্থকের অভিযোগ অনুযায়ী তার বাড়িতে জলের সংযোগ দিতে টাকার দাবি তৃণমূল ওয়ার্ড সভাপতি র!

নদীয়া, নিজস্ব সংবাদদাতা:- হয়তো খাবারে টান পড়ছে না। কিন্তু জল সংযোগ নিতে গিয়ে পকেট খালি হওয়ার জোগাড় শান্তিপুর দু’নম্বর ওয়ার্ডের এক পেশায় হকারী করা এক বাসিন্দার।
বিনামূল্যে সংযোগ প্রদান করা সরকারি জল প্রকল্পের সুবিধা পৌঁছে দিতে কাউন্সিলরের এক সাগরেদ প্রথমে তার কাছ থেকে ১৪০০ টাকা টাকা দাবি করেন বলে তিনি জানিয়েছেন। তা দিতে না রাজি হওয়ায়, পরবর্তীতে খোদ দু’নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল সভাপতি পরিমল দেবনাথ , তার বাড়িতে গিয়ে ১৭০০ টাকার দাবি করে, এবং ১৪০০ থেকে ১৭০০ এই বাড়তি ৩০০ টাকা নাকি তাদের দলীয় সিদ্ধান্তের অমান্য করার ফাইন! যদিও কাউন্সিলর সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে ওয়ার্ড সভাপতির সাফাই গেয়ে বলেন, সবটাই চক্রান্ত।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শান্তিপুর পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাইগাছি এলাকার বাসিন্দা শম্ভু বিশ্বাস। পেশায় তিনি হকারি করেন, বাবা মারা যাওয়ার পর বৃদ্ধামাকে নিয়ে তিনি একাই থাকেন একটি ভাঙাচোরা বাড়িতে। আবাস যোজনা তো দূরে থাক ন্যূনতম বিনামূল্যে পানীয় জল পেতে চাতক পাখির মতন প্রতীক্ষায় রয়েছে না চার মাস যাবত।
দীর্ঘদিন ধরেই তিনি বাম মনোভাবাপন্ন। আর তার জেরে নাকি ওই ওয়ার্ডে অন্যান্য বাড়িতে বিনামূল্যে জলসংযোগ পৌঁছালেও এখনো ওই ব্যক্তির বাড়িতে জলের সংযোগ দেওয়া হয়নি। পৌরসভা থেকে শুরু করে একাধিক জায়গায় দরবার করেও তার সমস্যার সমাধান হয়নি। উপ পৌরপিতা কৌশিক প্রামানিক মৌখিক আশ্বাস দিলেও সমস্যার সমাধানের ব্যাপারে সদর্থক ভূমিকা দেখা যায়নি এমনই দাবি সম্ভু বাবুর । স্থানীয় কাউন্সিলর পুষ্প দেবনাথ কে জানালে তিনি ওয়ার্ড সভাপতির সাথে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেন। শম্ভু বিশ্বাসের অভিযোগ, তিনি দীর্ঘদিন ধরে বাম সর্মর্থক, শাসকদলের বিরোধী হওয়াতেই জলের সংযোগ প্রদানের ক্ষেত্রে এই গড়িমসি। ঘটনার প্রতিবাদ জানালে তাকে প্রাণে মারার হুমকি দেন এক কাউন্সিলর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি এমনটাই শম্ভু জানিয়েছে।

যদিও তার বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে কাউন্সিলর পুষ্পা দেবনাথ জানিয়েছে ” উনার সমস্ত কাগজপত্র ঠিকঠাক থাকলে সবার মত উনিও জলের সংযোগ পাবেন। তবে পৌরসভার জল সংযোগকারী কর্মীদের ভ্যানে তালা মেরে কাজে ব্যাঘাত ঘটিয়ে উনি যেভাবে হেনস্থা করেছেন সেটা অত্যন্ত খারাপ কাজ হয়েছে”।
তৃণমূল ওয়ার্ড সভাপতি পরিমল দেবনাথ সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, দলকে কালিমা লিপ্ত করার জন্যই তার এই চক্রান্ত, ওয়ার্ডে বিভিন্ন ধরনের বিরোধীরাও বাস করেন, তারাও বিনামূল্যে জল পেয়েছে।

তবে শান্তিপুর পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান, কৌশিক প্রামানিক আমাদের জানান, মৌখিকভাবে বিষয়টি জানালেও উনি যদি লিখিতভাবে অভিযোগ জমা করেন, এবং উপযুক্ত কাগজপত্র যদি সঠিক থাকে তাহলে নিশ্চয়ই উনি বিনামূল্যেই জল পাবেন। শান্তিপুর পৌরসভার কোনো ওয়ার্ডে এমন কোনো নিদর্শন দেখা যায়নি । মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের এই প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে শান্তিপুর পৌরসভাও যথেষ্ট তৎপর।
শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী জানা যায় শম্ভু বিশ্বাস, শান্তিপুর পৌরসভায় লিখিত অভিযোগ করতে চলেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *