‘প্রশ্ন-ঘুষ’কাণ্ডে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের সাংসদপদ খারিজ – কে কি বলছে আসুন জেনে নিই।

নদীয়া, নিজস্ব সংবাদদাতা:-  ‘প্রশ্ন-ঘুষ’কাণ্ডে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের সাংসদপদ খারিজ হয়ে গিয়েছে। লোকসভার এথিক্স কমিটির রিপোর্ট শুক্রবারই লোকসভায় জমা পড়ে। তার পরেই নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া মেনে ধ্বনিভোটে খারিজ হয়ে যায় মহুয়ায় সাংসদপদ।সূত্রের খবর, রিপোর্টে আছে, তৃণমূলের সাংসদ লোকসভার লগইন আইডি অন্যের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার কাজকে ‘অনৈতিক আচরণ’ এবং ‘সংসদের অবমাননা’ হিসাবে অভিহিত করা হয়েছে। এথিক্স কমিটি রিপোর্টে মহুয়াকে কড়া শাস্তি দেওয়ার সুপারিশ করেছে। একই সঙ্গে রিপোর্টে আরও সুপারিশ করা হয়েছে যে, মহুয়ার সাংসদপদ যেন খারিজ করা হয়। এ ছাড়াও রিপোর্টে মহুয়ার বিরুদ্ধে সরকারি তদন্তের কথাও বলা হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘‘মহুয়া মৈত্রের অত্যন্ত আপত্তিকর, অনৈতিক, জঘন্য এবং অপরাধমূলক আচরণের প্রেক্ষিতে কমিটি ভারত সরকারের কাছে সুপারিশ করছে যে, তাঁর বিরুদ্ধে যেন নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক আইনি তদন্ত করা হয়।’’ এ ছাড়াও এথিক্স কমিটি রিপোর্টে মহুয়া মৈত্র এবং দর্শন হীরানন্দানির মধ্যে নগদ অর্থ লেনদেনের ‘মানি ট্রেইল’-এরও তদন্ত করানোর সুপারিশ করেছে। রিপোর্টে মেনে নেওয়া হয়েছে যে, ওই আর্থিক বিষয়ে তদন্ত করার মতো প্রযুক্তিগত কাঠামো কমিটির নেই। তাই যেন সরকার তার তদন্ত করে। তবে লোকসভা থেকে বহিষ্কার হবার পর তুমি যাননি কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্র। সংবাদ মাধ্যমের সামনে রীতিমতো একরাশ ক্ষোভ উপড়ে দিয়েছেন মহুয়া।তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেছেন। সেই সঙ্গে দিয়েছেন লড়াইয়ের হুঁশিয়ারি।তিনি জানিয়েছেন, এই ঘটনার শেষ দেখে তিনি ছাড়বেন। আগামী ৩০ বছর লোকসভার ভিতরে এবং বাইরে লড়াই করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তৃণমূলের বহিষ্কৃত সাংসদ। তবে মহুয়া মৈত্রর সংসদ পথ খারিজের পর নদীয়া জেলায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানোতোর । সিপিআইএম বিজেপি কংগ্রেস সবাই মন্তব্য রেখেছেন এই ব্যাপারে । সিপিআইএমের পক্ষ থেকে প্রবীণ নেতা এস এম সাদি জানাচ্ছেন ,অত্যন্ত তড়িঘড়ি আদানীদের স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য মহুয়া মৈত্রকে, বহিষ্কার করা হয়েছে। অপরদিকে নদিয়া জেলা কংগ্রেসের সভাপতি অসীম কুমার সাহা মহুয়া মৈত্রের সাংসদ পথ খারিজ প্রসঙ্গে বক্তব্য দিতে গিয়ে বলেন ,এটা নতুন কোন ব্যাপার নয় ,মোদি সরকার বারবার এহানো কার্যক্রম করে থাকে ।এর আগেও রাহুল গান্ধীর ক্ষেত্রে একই কাজ তারা করে ছিল । তারা অত্যন্ত আশাবাদী রাহুল গান্ধীর মতোই মহুয়া পরবর্তীতে ক্লিনচিট পাবে । তবে মহুয়ার বিরুদ্ধে একেবারে খুব উপড়ে দিয়েছে নদীয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অর্জুন বিশ্বাস। তিনি জানাচ্ছেন মহুয়া মৈত্র কৃষ্ণনগরের সাংসদ হয়েও কৃষ্ণনগরের জন্য কোনরকম কথা সংসদে জানাননি, অপরদিকে নিজের আইডি, পাসওয়ার্ড অন্যজনের কাছে দিয়ে রেখে, টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন করেছে সংসদ ভবনে ।সেটা সামনে আসার পরই এথিক্স কমিটি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ।এতে সঠিক সিদ্ধান্ত বলেই মনে করছে তারা । তৎসহ রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকারও কটাক্ষ করতে ছাড়েনি মহুয়া মৈত্র কে । তিনি বলছেন যে পাপ মহুয়া মৈত্র করেছেন ,তার ফল তিনি পাচ্ছেন । কিন্তু কৃষ্ণনগর শহর তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ দত্ত জানাচ্ছেন, মহুয়া মৈত্রর সাথে যে কাজ করা হলো তা খুবই অনৈতিক । বিজেপির পরিচালিত স্পিকার এই কাজ করেছে। বিজেপি চায় বিরোধীদের কন্ঠ রোধ করতে। মহুয়া মৈত্র যেভাবে সংসদে বিরোধীদের বিরুদ্ধে সওয়াল করেন ,সেখানেই কার্যত অপদস্ত হয় কেন্দ্রের সরকার । ঠিক সেই কারণেই রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে ,মহুয়া মৈত্রর সাথে এই আচরণ । তবে পরবর্তীতে মহুয়া মৈত্র আবার কৃষ্ণনগরের মানুষের সাথে থেকে এবং মানুষের মত নিয়েই আবার তার পুরনো ভঙ্গিতে ফিরে আসবেন । কৃষ্ণনগরের মানুষ সব সময় মহুয়া মৈত্রের পাশে রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *