রাজ্য থেকে কেন্দ্রের মন্ত্রীদের প্রতিশ্রুতির বন্যা তবুও হাল ফেরেনি আজাদ হিন্দ বাহিনীর প্রতিষ্ঠাতার জন্মভিটার।

পূর্ব বর্ধমান, রামকৃষ্ণ চক্রবর্তীঃ- বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সফর সঙ্গী হয়েছিলেন বিপ্লবী রাসবিহারী বসু জাপান যাবার জন্য । রবি ঠাকুরের আত্মীয় পি এন ঠাকুরের ছদ্মবেশে পৌঁছে গিয়েছিলেন জাপানে । ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি বা আজাদ হিন্দ বাহিনী প্রতিষ্ঠা করে দেশ স্বাধীনতা এনে দিতে সব চেয়ে বড় ভূমিকা পালন করে ছিলেন ।দেশের জন্য অনেক কিছু করলেও দেশ তাকে ভুলে গেছে ।অবজ্ঞায় অবহেলায় তার জন্মভূমির বসত ভিটা । রাসবিহারী বসুর জন্ম স্থানে নেতা আসে নেতা যায়, বিধায়ক আসে বিধায়ক যায়। বিডিও আসে বিডিও চলে যায়,রাজ্যর মন্ত্রী আসে মন্ত্রী চলে যায় এমন-কি কেন্দ্রের মন্ত্রী আসে কেন্দ্রের মন্ত্রীরাও চলে যায় তবুও হাল ফেরেনি আজাদ হিন্দ বাহিনীর প্রতিষ্ঠাতা বীর বিপ্লবী রাসবিহারী বসুর পূর্ব বর্ধমান জেলার রায়নার সুবলদা গ্রামের বসতবাড়ি। এত বড় মাপের একজন স্বাধীনতার সংগ্রামীর বসতবাটি দেখলে চোখে জল আসবে। কতটা অবজ্ঞা আর অবহেলা করলে এরকম পরিস্থিতি হয়। দেশের এক নম্বর স্বাধীনতা সংগ্রামী হিসাবে প্রতিষ্ঠিত এশিয়ার মুক্ত সূর্য রাসবিহারী বসুর বসত বাটিতে একটি শৌচালয় ছাড়া কিছু নেই। নেতা, মন্ত্রী ,প্রশাসনিক আধিকারিকরা আসেন আর প্রতিশ্রুতির বন্যা বইয়ে দিয়ে যান, প্রতিশ্রুতিস্বরূপ বলেন, মিউজিয়াম বানাবেন বড় বিল্ডিং করে বিপ্লবী কে সম্মান জানানো হবে ।ইতিহাস মেলা করে পরবর্তী প্রজন্ম কে জানানো হবে বিপ্লবীর কাজ কর্ম । কাজ হয় না কিছুই শুধু চলে প্রতিশ্রুতি । বিপ্লবীর বসতভিটা যাওয়ার দুদিকে রাস্তা সম্পূর্ণ ভাবে ব্লক করে দেয়া হয়েছে। একদিকে ধান মেলে রাস্তাকে বন্ধ রাখা হয়েছে ।অন্যদিকে গরু ছাগল বেঁধে সে রাস্তায় যাতায়াত করার উপায় থাকে না ।এমনকি টেক্টার দাড়িয়ে আছে রাস্তার উপর যাওয়া-আসা করার কোনো সুযোগ নেই। অন্য রাস্তা ঘুরে আসতে হয় । বলার কেউ নেই কথা শোনার কেউ নেই। বিপ্লবীর জন্মভিটা গরু ছাগল বাধার এবং ঘুঁটে দেওয়ার একটা সুন্দর জায়গা করেছেন এলাকার কিছু বাসিন্দারা। ১৮৮৬ সালে ২৫ মে রাস বিহারী বসু রায়নার সুবলদাহ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ।এই বিপ্লবীর মৃত্যু হয় ১৯৪৫ সালের ২১ জানুয়ারি জাপানে । বড় বড় ঐতিহাসিক রা স্বীকার করেছেন রাসবিহারী বসু জন্ম গ্রহণ না করলে বা আজাদ হিন্দ বাহিনী গঠন না করলে ভারতের স্বাধীনতা আরো পিছিয়ে যেতে পারত। সুভাষচন্দ্র বসুকে প্রতিষ্ঠিত করে সারা ভারতবর্ষের মনে উজ্জ্বল দাগ রেখেছেন রাসবিহারী বসু । যিনি জাপানের নাগরিকত্ব নিয়েছিলেন ভারতকে স্বাধীন করবেন বলে । জাপান সরকার তাকে সেই দেশের সর্বোচ্চ সম্মান রাইজিং সান পুরস্কারে সম্মানিত করেছিলেন কিন্তু খুবই দুর্ভাগ্য তিনি ভারত রত্ন হতে পারেননি । সারাটা জীবন তিনি উৎসর্গ করেছিলেন দেশের স্বাধীনতার জন্য। তার প্রতি অবজ্ঞা অবহেলা কোন সুশীল সমাজ মেনে নিতে পারছেন না কিন্তু করার কিছু নেই। মন্ত্রী থেকে প্রশাসনিক আধিকারিক সবাই এসেছেন কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। কিছুদিন আগে রাজ্যের মন্ত্রীর স্বপন দেবনাথ 5 লক্ষ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও এক টাকাও দেননি । কেন্দ্রের অর্থ প্রতিমন্ত্রী পঙ্কজ চৌধুরী এসেছিলেন প্রতিশ্রুতির বন্যা বইয়ে দিয়েছিলেন কিন্তু কানা করিও বিপ্লবীর বসত ভিটার জন্য জোটেনি ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *