দঃ দিনাজপুর, নিজস্ব সংবাদদাতাঃ- টোটোর সিটের নিচে লুকিয়ে দেদারে চলছে চোলাই মদ পাচার। বালুরঘাট ব্লকের বিভিন্ন গ্রামীণ এলাকা থেকে মাঝেমধ্যেই এই খবর আসছিল আবগারি দপ্তরের কাছে। কিন্তু হাতেনাতে ধরতে পারছিলেন না পুলিশ আধিকারিকরা। অবশেষে গত কয়েকদিন ধরেই সাদা পোশাকে পুলিশ মোতায়েন করে বিভিন্ন এলাকায় ওঁত পেতে বসেছিল আবগারি দপ্তর। গত কয়েকদিনে একাধিক টোটো উদ্ধার করেছে পুলিশ। যা থেকে প্রায় ৫০০ লিটার চোলাই মদ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সোমবার রাতে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে জলঘর গ্রামে পাকড়াও করে ১০৩ লিটার চোলাই উদ্ধার করেছে আবগারি।
খালি চোখে দেখে মনে হবে একটি যাত্রীবাহী টোটো চলছে। রাজ্য সড়ক থেকে শুরু করে গ্রামের সরু গলিতে অবাধে এই টোটোর যাতায়াত। কিন্তু সেই টোটো চালকের সিটের নিচে থেকে শুরু করে যাত্রীদের বসার জায়গার নিচে সাদা জারে চলছে চলায় মদের কারবার। স্বাভাবিকভাবে টোটোর পেছনের সিটের নিচে একাধিক ব্যাটারি থাকে। কিন্তু সেই ব্যাটারির পাশেই রয়েছে মুখ বন্ধ চোলাই মদের বাক্স। দীর্ঘদিন ধরেই আবগারি পুলিশের কাছে এই টোটোর সিটের নিচে চোলাই সরবরাহের অভিযোগ আসছিল। কিন্তু হাতেনাতে পাকড়াও করতে পারছিলেন না তারা। গত কয়েকদিন ধরেই শহরের পার্শ্ববর্তী গ্রামীণ এলাকায় আবগারি পুলিশ সাদা পোশাকে ঘুরছিলেন। তারপরে সেই টোটোগুলির হদিশ পেতেই ইউনিফর্ম পরিহিত পুলিশদের খবর দিয়ে সেগুলো ঘটনাস্থলে পৌঁছে বাজেয়াপ্ত করা হচ্ছে। বর্তমানে বালুঘাটের চকভবানী এলাকার আবগারি দপ্তরে এমন কয়েকটি টোটো আটক করা রয়েছে। যেখানে সিটের নিচে ভর্তি চোলাই মদের জার। এমনকি গত তিন মাসে তিনজন মহিলা সহ আট জনকে টোটো সমেত চোলাই মদ কারবারে গ্রেপ্তার করেছে আবগারি পুলিশ।
চক্রাগুর বাসিন্দা নিরেন মাহাতো বলেন, ‘এই চোলাই মদের নেশায় গ্রামে গঞ্জে প্রচুর সংসারে অশান্তির সৃষ্টি হচ্ছে। নেশার টাকা যোগাড় করতে না পেরে অপরাধ জগতে প্রবেশ করছে। দিনের পর দিন চোলাইয়ের রমরমা বেড়ে যাচ্ছিল। আবগারি পুলিশের এই অভিযানের ফলে অনেকটাই এই কারবারিরা গুটিয়ে যাবে আশা করছি।’
আবগারি দপ্তরের অফিসার ইনচার্জ কার্তিক চন্দ্র দে জানান, ‘বিশ্বাসযোগ্য সূত্র মারফত পাওয়া খবরেই আমরা এই অভিযান চালিয়েছি যেখানে প্রথমে দু চারজন সাদা পোশাকে পুলিশ পাঠাই। তারপর ইউনিফর্ম পুলিশ আধিকারিকরা গিয়ে সেগুলো উদ্ধার করে। ইউনিফর্ম ডিউটিতে গিয়ে পাকড়াও করা সম্ভব হয় না। তাই এই উপায় নেওয়া হয়েছে। তাছাড়াও, নাকা চেকিং ও পেট্রোলিং এর মাধ্যমে অনেক চোলাই মদ উদ্ধার হয়েছে। গত কয়েকদিনে প্রায় ৫০০ লিটার চোলাই মদ বাজেয়াপ্ত হয়েছে। সোমবার রাতে জলঘর পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে ১০৩ লিটার উদ্ধার হয়েছে। সবগুলোই টোটোর সিটের নিচে মজুদ ছিল।”
Leave a Reply