
বালুরঘাট, দক্ষিণ দিনাজপুর, নিজস্ব সংবাদদাতায:-
কালীপুজো ও দীপাবলির আগে আলোয় ঝলমল করতে চলেছে শহর। ঘরে ঘরে সাজবে প্রদীপের সারি। আর সেই আলোর উৎস তৈরি করতে এখন দিনরাত এক করে কাজ করছেন বালুরঘাটের কুমোরপাড়ার মাটির শিল্পীরা। ছোট বড় হাজার হাজার প্রদীপ তৈরি হচ্ছে তাঁদের কারিগরি হাতে। তবে আলো জ্বালানোর এই উৎসবের আগে তাঁদের জীবনে এখনও ঘনিয়ে আছে অন্ধকার।
কারণ, প্রদীপ বিক্রি করে সংসারের চাকা ঘোরানো যে সহজ নয়, তা তাঁরা বছর বছর টের পাচ্ছেন। কাঁচামালের দাম বেড়েছে, কিন্তু প্রদীপের দাম সেইভাবে বাড়েনি। মাটি, রঙ, ও জ্বালানি — সবকিছুরই খরচ এখন আকাশছোঁয়া। “একটা প্রদীপে যত খরচ পড়ে, বিক্রির সময় তার অর্ধেকও ফেরত আসে না,” — এমনই আক্ষেপ অনেক কারিগরের মুখে।
শুধু খরচ নয়, প্রতিযোগিতার চাপও বেড়েছে। বাজারে এখন প্লাস্টিক ও মেশিনে তৈরি রঙিন প্রদীপের ঢল। কম দামে সহজলভ্য বলে ক্রেতারা সেদিকেই ঝুঁকছেন। ফলে ঐতিহ্যবাহী মাটির প্রদীপের বাজার অনেকটাই ছোট হয়ে এসেছে। তবুও উৎসবের সময় এই কারিগররা থেমে থাকেন না। তাঁরা জানেন, মাটির প্রদীপের আলোর মতোই তাঁদের শিল্পের আলোও নিভে যেতে দেওয়া যায় না।
প্রদীপ শুকনো ও পোড়ানোর কাজ শেষ হলে তা বিক্রির জন্য পাঠানো হয় শহরের বিভিন্ন দোকানে ও হাটে। কেউ কেউ নিজেরাই হাটে গিয়ে বিক্রি করেন। ভোর থেকে রাত পর্যন্ত কাজ, তবুও আয় সীমিত। অনেকে জানান, যদি সরকারি কোনও সহায়তা বা প্রশিক্ষণ প্রকল্প থাকত, তবে পরিস্থিতি কিছুটা বদলাতে পারত।
তবুও আশার প্রদীপ নিভে যায়নি। কালীপুজো ও দীপাবলির আগে ব্যস্ততায় ভরা তাঁদের দিনরাত্রি। হাতের মাটিতে গড়ে ওঠা প্রদীপের সারি যেন প্রতীক — অন্ধকার যতই ঘনাক, আলো জ্বালানোর স্বপ্ন থেমে থাকে না।












Leave a Reply