জিপিএফ থেকে ৪ লক্ষ টাকা তছরুপ—দোষী আদালত কর্মচারীকে ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড।

বালুরঘাট, নিজস্ব সংবাদদাতা :- জিপিএফ একাউন্ট থেকে প্রায় চার লক্ষ টাকা তছরুপের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা আদালতের এক বিলিং ক্লার্ককে শুক্রবার সশ্রম কারাদণ্ডের সাজা শুনিয়েছে আদালত। সাজা পাওয়া ওই কর্মচারীর নাম সৌভিক মজুমদার।

জানা গেছে, ৩ মার্চ ২০২২ তারিখে তৎকালীন জেলা জজের নির্দেশে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা আদালতের চিফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার সুভাষচন্দ্র রায় বালুরঘাট থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে উল্লেখ ছিল, আদালতের তিন কর্মচারী—নাজারিয়াস মুর্মু, চিরঞ্জিত কামতি এবং ধনঞ্জয় ঘোষের জিপিএফ একাউন্ট থেকে একাধিক পর্যায়ে মোট প্রায় চার লক্ষ টাকা তছরুপ করা হয়েছে। তদন্তে উঠে আসে, এই তছরুপের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন একাউন্টস সেকশনের বিলিং ক্লার্ক সৌভিক মজুমদার।

অভিযোগ অনুসারে, সৌভিক মজুমদার সরকারি নিয়ন্ত্রিত IFMS সিস্টেমে হেরফের করে ওই টাকা ভুয়ো একাউন্টে ট্রান্সফার করেন, যা বিভিন্ন ব্যক্তির নামে ছিল। আর্থিক প্রতারণার সেই তথ্য তদন্তে প্রমাণিত হয়।

এই মামলার প্রসঙ্গে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর ঋতব্রত চক্রবর্তী জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে তৎকালীন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গৈরিক রায় বিষয়টি তৎকালীন জেলা জজ জীবন কুমার সাধুকে অবহিত করেন। পরবর্তীতে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে মামলা আদালতে রুজু হয়।

শুক্রবার এডিজে ফার্স্ট কোর্টের বিচারক সন্তোষ কুমার পাঠক রায় প্রদান করেন। তিনি দোষী সৌভিক মজুমদারকে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৭৭(এ) ধারায় সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং চার লক্ষ টাকা জরিমানা করেন। জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়।

বিচারক আরও নির্দেশ দেন, জরিমানার অর্থ থেকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা নাজারিয়াস মুর্মুকে, নব্বই হাজার টাকা চিরঞ্জিত কামতিকে এবং এক লক্ষ ষাট হাজার টাকা ধনঞ্জয় ঘোষকে প্রদান করা হবে। বাকি প্রায় দশ হাজার টাকা জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষকে (DLSA) দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পাবলিক প্রসিকিউটর ঋতব্রত চক্রবর্তী বলেন, “সরকারি অর্থের নিরাপত্তা নিশ্চিত রাখতে আদালত একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়েছে। এই রায় ভবিষ্যতে এমন আর্থিক অনিয়ম রুখতে দৃষ্টান্ত হিসেবে কাজ করবে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *