সুভাষ চন্দ্র দাশ,ক্যানিং – আবার করোনার চোখ রাঙানি বাড়ছে। আক্রান্ত মানুষের গ্রাফ দিন দিন উর্ধ্বমুখী হচ্ছে। ফলে আবার সেই অবরুদ্ধ অবস্থা আসতে শুরু করেছে। অনেক জায়গাতেই মাইক্রো কনটেনমেন্ট জোন ঘোষণা করা হচ্ছে। বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে বাজার দোকান। কারখানার কাজের অবস্থাও বেহাল। কাজ হারাতে শুরু করছেন বহু শ্রমিক। ফলে ওই দিন আনা দিন খাওয়া শ্রমিক পরিবারগুলিতে নেমে আসছে ঘোর অন্ধকার। কাজ হারিয়ে অনেকেই ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন। ছেলে মেয়েদের দুবেলা দুমুঠো ভাতের জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছেন। আর এই সুযোগটাই চায় মানব পাচারকারীরা। এই সময়ে অভাবি সংসারের দুর্বলতাকেই কাজে লাগিয়ে তারা মানব পাচার করে। সক্রিয় হয়ে ওঠে সুন্দরবনের বিভিন্ন প্রান্তের মানব পাচার চক্র। ভালো কাজের লোভ দেখিয়ে অথবা বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে গরিব ঘরের কিশোরী মেয়েদের ফুঁসলিয়ে নিয়ে গিয়ে তারা পাচার করে ভিন রাজ্যে। সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকায় এই মানব পাচারের অভিযোগ হয় প্রায়ই। না জেনে বুঝে পাচারকারীদের চক্রে পা দেয় অনেকেই। আর তারপরে তাদের জীবন হয়ে ওঠে যন্ত্রণাদায়ক। ছোট ছোট কিশোর কিশোরীদের বিভিন্ন খারাপ কাজে লাগানো হয়। তাই করোনার এই কঠিন পরিস্থিতিতে কেউ যাতে পাচারকারীদের চক্রে পা না দেয় সেই জন্যই মানবপাচার রোধে মানুষকে সচেতন করতে ঝড়খালি কোস্টাল থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারীক প্রদীপ রায় ও থানার অন্যান্য পুলিশের পক্ষ থেকে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে সচেতনতার বার্তা দেওয়া হলো মঙ্গলবার। এদিন ঝড়খালি থানা থেকে সমবায় মোড় পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তা করোনা বিধি মেনে স্কুল পড়ুয়ারা পদযাত্রা করল। সঙ্গে থাকলো পুলিশ কর্মীরাও। পুলিশের এমন উদ্যোগে খুশি এলাকার মানুষ। পুলিশের তরফে জানানো হয়, সুন্দরবনের প্রত্যন্ত গ্রামের গরিব মানুষের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে মানব পাচারকারীরা এখানে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তাদের সম্বন্ধে মানুষকে সচেতন করতেই এই উদ্যোগ। ভালোই মানুষের সাড়া পাওয়া গেছে।