রসিকবিল বনাঞ্চল সংলগ্ন এলাকায় শুরু হল আদিবাসী সম্প্রদায়ের উৎসব।

মনিরুল হক, কোচবিহারঃ বনাঞ্চল সংলগ্ন এলাকায় আদিবাসী সম্প্রদায়ের উৎসব শুরু হল। রসিকবিল বনাঞ্চল সংলগ্ন পাগলীরকুঠির পাগলীর ধামে শুরু হলো আদিবাসী সম্প্রদায়ের ১৯ দেবতার পুজো উৎসব। মূলত ওই এলাকার বন বস্তির রাভা সম্প্রদায়ের মানুষ এই পুজো উৎসব শুরু করলেও ওই ধামে ১৯টি দেবতার মধ্যে যেমন রয়েছে কালী, শিব, মাসান, পাগলা, পাগলী, কালসুর, কামসুর তেমনি রয়েছে মুসলিম সম্প্রদায়ের পাগলাপীর মূর্তি।
জানা গেছে, বাশ নৃত্যের মধ্য দিয়ে পূজার সূচনা হয়। পুজো শেষে প্রসাদ খেয়ে সুসজ্জিত পোশাকে ৫০ জনের একটি দল বাঁশ কাঁধে নিয়ে বাজনা নিয়ে মাগনের উদ্দেশ্যে বের হন। রাভা সম্প্রদায়ের মানুষেরা এই পূজার সূচনা করলেও বর্তমানে গ্রামের সমস্ত মানুষই পুজোর সঙ্গে যুক্ত থাকেন। উল্লেখ্য, যে পাগলীর কুঠি গ্রামের নাম হয়েছে পাগলী ধাম থেকেই।
পুজো কমিটির সহ সম্পাদক কান্তেশ্বর রাভা বলেন, সব মিলিয়ে প্রায় সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষের বিভিন্ন দেবদেবীর প্রতীক হিসেবে ১৯ টি দেবতার মূর্তি সাত দিন ধরেই পূজিত হবেন ধামে। ১৯৬০ সালে বাবুই রাভা, দুর্লভ রাভা, কাশীনাথ রাভা প্রমুখেরা তান্ত্রিক মতে প্রথম ওই পূজোর শুরু করেন। প্রথমে ওই পূজোর কোন দেবতার মূর্তি ছিল না। ১৯টি দেবতার প্রতীক হিসেবে ১৯ টি বাঁশ কে পুজো করা হতো। পরবর্তীতে তাদের অনুপস্থিতিতে তান্ত্রিক না পাওয়ায় পুরোহিত মতে ১৯ টি দেবতার মূর্তি তৈরি করে পুজো করা হয়। আজ থেকে এই পূজার সূচনা হলো। ২৯ জানুয়ারি পূর্ণাঙ্গভাবে সেখানে পুজো হবে। সাত দিন ধরে ১৯ টি দেবতার প্রতীক হিসেবে ১৯টি বাঁশকে সাজিয়ে বাজনা সহ ৫০ জনের একটি দল সাতটি গ্রামে ঘুরে মাগন তুলবে। ২৯ জানুয়ারি শেষ দিনে পুজোর অঙ্গ হিসেবে সেখানে পাঠা, কবুতর, হাঁস বলি দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে একটি ভেলায় করে ওই ১৯টি বাঁশ এর সঙ্গে একটি জ্যান্ত ছাগল বেঁধে তা রায়ডাক নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হবে। সেই উপলক্ষে প্রতিবছর ধাম এলাকায় একটি মেলা অনুষ্ঠিত হয়। আশপাশের সমস্ত গ্রাম অঞ্চল থেকে মানুষেরা মানত করতে ওই পুজোতে অংশগ্রহণ করেন বলে জানান কান্তেশ্বর বাবু।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *