সরস্বতী কে সাজাচ্ছেন অন্ধ রাধেশ্যাম।

0
501

সুভাষ চন্দ্র দাশ,ক্যানিং – ‘অন্ধত্ব’ গ্রাস করেছে তাঁর জীবন। তবুও বাগদেবীর আশীর্বাদে প্রতিমা গড়ার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি রাধেশ্যাম হালদার। সোনারপুরের সাহেবপুরের বাসিন্দা। বর্তমানে যাদবপুরের সুভাষ চন্দ্র কামারপাড়ার ‘রুদ্রানী শিল্পালয়ে’ প্রতিমা গড়ার কাজে ব্যস্ত।খুব ছোট বয়সে অজানা রোগে তিনি চোখের দৃষ্টি হারিয়ে ফেলেন। তবে বাগদেবীর আশীর্বাদ তাঁর মাথায় রয়েছে। তাই ছোট থেকেই মাটির জিনিস গড়ার কাজে তাঁর আগ্রহ ছিল আগাধ। তাঁর সেই কাজের প্রতিভা প্রকাশ পেয়েছে ঘরে ও বাইরে। ছোটবেলায় বিভিন্ন ধরনের মাটির জিনিস গড়তেন রাধেশ্যাম। আর তা প্রশংসা কুড়াতো এলাকার মানুষের। ১২ বছর বয়সে তাঁর দৃষ্টি শক্তি একেবারেই হারিয়ে যায়। কিন্তু মাটির জিনিস গড়ার প্রতিভা কমেনি। আর তাই ঘরের গন্ডি ছাড়িয়ে মূর্তি গড়ার কাজে তাঁর ডাক পড়ে শহরেও। ছুটে যান শহরের এক প্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে। কখনো বেহালায় আবার কখনো যাদবপুরে। এবার তিনি যাদবপুরের ‘রুদ্রানীষ শিল্পালয়ে’ প্রতিমা গড়ার সহযোগী শিল্পী হিসাবে কাজ করছেন। কখনো খড় দিয়ে কাঠামো বানানোর কাজে সহযোগিতা করছেন, আবার কখনো কাঠামোয় প্রতিমার মুখ লাগানোর কাজ করছেন। কখনো ছাঁচ থেকে মূর্তি বের করার কাজ করছেন তো কখনো প্রতিমার সোলার সাজ বা পরচুলা লাগানোর কাজ। দৃষ্টিহীন হলেও এসব কাজে বেশ সাবলীল ও দক্ষ তিনি। গত ৪ মাস ধরেই এখানে কাজ করে চলেছেন। দৃষ্টিহীনতার কারনে বিয়ে করেননি। বাড়িতে আরোও ৩ ভাই রয়েছেন। তার মধ্যে মেজো ভাইও দৃষ্টিহীন। এদিন যাদবপুরে বাগদেবীর মাথার চুলের কাজ করতে করতেই রাধেশ্যাম জানান, ছোট বয়েসে প্রথমে রাতে কম দেখতাম। আস্তে আস্তে একদমই চোখের দৃষ্টি শক্তি হারিয়ে যায়। অন্যকোন কাজ করতে পারি না। তাই প্রতিমা গড়ার কাজেই সহযোগী শিল্পী হিসাবে কাজ করি। তাঁর ভাই বলরাম হালদার জানান, দাদা প্রতিমা গড়ার পাশাপাশি মাটির ছোট পশু পাখি, ফল, ফুলদানি এমন তৈরি করেন,যা দেখলে সবাই অবাক হয়ে যায়। এক সময় সাহেবপুরে একটি জায়গায় প্রতিমা গড়ার কাজ করতেন। এখন শহরের বিভিন্ন জায়গায় কাজ করেন।