তৃণ্ময় বেরা,ঝাড়গ্রাম:- গত শিক্ষাবর্ষে অস্থায়ী ভবনে পঠন-পাঠন চালু হয়েছে ঝাড়গ্রামের সাধু রামচাঁদ মুর্মু বিশ্ববিদ্যালয়। শহরের অদূরে জিতুশোলে নতুন ভবনের কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, আগামী মে মাসে ঝাড়গ্রামে আসবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখন ওই নতুন ভবনের দ্বারোদঘাটন করতে পারেন তিনি। সূত্রের খবর, ১৫ মে মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ভবনের বেশিরভাগ অংশ তাদের হস্তান্তরের জন্য পূর্ত দফতরকে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। উচ্চশিক্ষা দফতরে প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র ও বিভিন্ন সামগ্রী চেয়েও পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি দূরের পড়ুয়াদের স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরের লাগোয়া জিতুশোলে ৫ নম্বর রাজ্য সড়কে বাস স্টপের জন্য দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থাকে চিঠিও দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
২০১৭ সালে ৪ এপ্রিল ঝাড়গ্রাম জেলা ঘোষণার দিন ঝাড়গ্রামে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপর ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের নামকরণ হয়েছে সাধু রামচাঁদ মুর্মু বিশ্ববিদ্যালয়। শহর থেকে প্রায় দশ কিলোমিটার দূরে ঝাড়গ্রাম-লোধাশুলির রাজ্য সড়কের ধারে জিতুশোলে সরকারি জমিতে প্রথম দফায় প্রায় ১২৫ কোটি টাকা খরচ করে তৈরি হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন, তিনটি অ্যাকাডেমিক ব্লক, হস্টেল (ছাত্রাবাস, ছাত্রীনিবাস), অতিথিশালা, অ্যাকটিভিটি সেন্টার, গ্রন্থাগার ভবন ইত্যাদি। এরমধ্যে চারতলা প্রশাসনিক ভবন শেষের মুখে। দোতালা অতিথিনিবাসের কাজ এখনও কিছুটা বাকি রয়েছে।
ঝাড়গ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, নতুন ভবনে দ্রুত পঠন-পাঠন চালুর জন্য পূর্ত দফতরের কাছে প্রশাসনিক ভবন ও তিনটি অ্যাকাডেমিক ব্লকের ৪১টি ঘর হস্তান্তর করতে বলা হয়েছে। এরমধ্যে ১৬টি ক্লাস ঘর, একটি রিসেপশন, অধ্যাপকদের বসার জন্য ৪টি ও প্রশাসনিক আধিকারিকদের জন্য ২০টি ঘর থাকবে। প্রতিটি ক্লাসে ১৭টি বেঞ্চ ও হাইবেঞ্চ, চেয়ার ও টেবিল ও বোর্ড ও আইটি সামগ্রী চেয়ে উচ্চশিক্ষা দফতরে আবেদন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেল অবশ্য এখনই চালু হচ্ছে না। তা চালু হবে আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে।
ঝাড়গ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অমিয়কুমার পান্ডা বলেন, ‘‘নতুন ভবনে পঠন-পঠন চালুর জন্য প্রাথমিক পরিকাঠামো কী কী প্রয়োজন তা উচ্চ শিক্ষা দফতরে জানিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বাস স্টপের জন্য দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থাকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছি। পূর্ত দফতরকে বাস স্টপের জন্য নাম প্লেট লাগানোর জন্য জানানো হয়েছে।’’ পূর্ত দফতরের ঝাড়গ্রাম ডিভিশনের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার রবীন্দ্রনাথ দে বলেন, ‘‘প্রশাসনিক ও আ্যকাডেমি ব্লকের কাজ শেষের মুখে। ১৫ মের মধ্যে কিছু ঘর চেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সেইমতো কিছু ঘর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ছেড়ে দেব। অতিথিনিবাস ও ছাত্রাবাস কিছুদিন পর হস্তান্তর করা হবে।’’
গত বছর ঝাড়গ্রাম রাজ মহিলা কলেজে ভবনের চারতলায় অস্থায়ী ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজকর্ম শুরু হয়েছে। সেখানেই বসছেন উপাচার্য, রেজিস্টার, পরীক্ষা নিয়ামক সহ বিভিন্ন আধিকারিকরা। সেখানেই অস্থায়ী ভাবে পঠন-পাঠনও হচ্ছে। গত বছর থেকে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে সাঁওতালি, ইংরাজি, অঙ্ক এবং সাংবাদিকতা ও জনসংযোগ এই চারটি পঠন-পাঠন শুরু হয়েছে। চারটি বিভাগে প্রথম বর্ষে মোট ১৭৫ জন পড়ুয়া রয়েছেন। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আধিকারিক জানান, আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে বিজ্ঞান ও কলা বিভাগ মিলিয়ে আরও দশটি বিষয়ে পঠন-পাঠন চালু হওয়ার কথা রয়েছে।
ঝাড়গ্রামে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্বোধন করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী, প্রস্তুতি তুঙ্গে।

Leave a Reply