ঘটনার পর ২৪ ঘন্টা কেটে গেল গ্রেপ্তার করা যায়নি মূল আসামিদেরকে।

সুভাষ চন্দ্র দাশ, ক্যানিং :- বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ক্যানিংয়ের গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ধর্মতলার জেলেপাড়া সংলগ্ন পিয়ারের পার্ক এলাকায় তিনজন তৃণমূল কর্মী খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্তদের কে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। মূলত মূল অভিযুক্ত গ্রেপ্তার না হওয়ায় ক্ষোভ বাড়ছে নিহতের পরিবারদের মধ্যে। শুক্রবার তাই নিহত স্বপন মাঝির পরিবারের লোকজন ক্যানিং থানার পুলিশ আধিকারিকদের সামনেই বিক্ষোভ দেখায়।

বৃহস্পতিবার সকালে একুশে জুলাই এর প্রস্তুতি মিটিংয়ে যাওয়ার পথে ক্যানিং থানার গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ধর্মতলা এলাকায়  দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হয় তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য স্বপন মাঝি এবং তার দুই সহকর্মী ঝন্টু হালদার ও ভূতনাথ প্রামানিক। শুক্রবার সকালে দেহগুলি ময়নাতদন্তের পর গ্রামে আসে। গ্রামে আসতেই এলাকার মানুষজন ভিড় জমান তিন পরিবারের বাড়িতে। তারপর দেহগুলি সৎকার করা হয় পুলিশের কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে।

ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট জানানো হয়েছে স্বপন মাঝিকে দুটি গুলি করা হয়। তারপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়। অন্যদিকে ভূতনাথের শরীরে মেলে একটি গুলি চিহ্ন। কিন্তু ঝন্টু হালদারের শরীরে কোন গুলির চিহ্ন পাওয়া যায়নি। শুধুমাত্র অস্ত্র দিয়েই কুপিয়ে তাকে খুন করা হয়েছে।

এই ঘটনার পর এলাকার প্রায় প্রতিটি বাড়িতে পুরুষ শূন্য । বহু বাড়িতে তালা লাগিয়ে অন্যত্র চলে গিয়েছে পরিবারের সদস্যরা। পুলিশ বাহিনী টহল দিচ্ছে এলাকাতে। পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে ধর্মতলা এলাকাতে।

এই ঘটনা ইতিমধ্যেই পুলিশের কাছে নিহতের পরিবারের তরফ থেকে ছয় জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হয়েছে। এই ৬ জন হলো রফিকুল সর্দার, জালাল উদ্দিন আখন্দ, বশির শেখ, বাপি ওরফে দেলওয়ার সেখ, এবায়দুল্লাহ মন্ডল ও আলী হোসেন লস্কর। তবে এই ঘটনায় জড়িত মূল আসামিদেরকে এখনো পর্যন্ত গ্রেফতার করতে পারিনি পুলিশ। নিহত স্বপন মাঝির দাদা মধু মাঝি ক্যানিং থানাতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তবে এখনও পর্যন্ত ছয় জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। যার মধ্যে দুই মহিলাও আছে। খুনের অভিযুক্তরা মোটরসাইকেলে চেপে এলাকা থেকেই গা ঢাকা দিয়েছে এমনই অনুমান পুলিশের। ইতিমধ্যেই অপরাধীদের ধরার জন্য ক্যানিং, জয়নগর, কুলতলী, বাসন্তী সহ বিভিন্ন এলাকায় চালানো হচ্ছে তল্লাশি। তবে অভিযুক্তদের কাউকে ধরা সম্ভব হয়নি।

শুক্রবার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের একটি দল। যে এলাকায় খুন করা হয়েছিল সেই এলাকা থেকে বেশকিছু নমুনাও সংগ্রহ করেন তাঁরা। শুধু তাই নয় আশপাশ এলাকা থেকেও বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহের কাজ করেছেন ফরেনসিক দলের বিশেষজ্ঞরা। এদিকে বৃহস্পতিবার খুনের সময় ব্যবহৃত বিস্ফোরণ না হওয়া বেশ কয়েকটি বোমাকে বোম স্কোয়াডের কর্মীরা গিয়ে নিষ্ক্রিয় করার কাজ করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *