কোচবিহার, ২২ জুলাইঃ প্রায় সাড়ে ৯ থেকে ১০ ঘন্টা তল্লাশির পর অবশেষে বিকেল ৪ টায় মেখলিগঞ্জ পরেশ অধিকারীর বাড়ি থেকে বেরলেন ইডি আধিকারিকেরা। এদিন সকালে আচমকাই মেখলিগঞ্জে পরেশ অধিকারীর বাড়িতে আচমকাই হাজির হন ইডি আধিকারিকরা। যদিও বিষয়টি জানা নেই বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। এসএসসি দুর্নীতি সংক্রান্ত মমলার তদন্তে তৎপর কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডি। সাত সকালেই দুই মন্ত্রীর বাড়িতে পৌঁছে গেলেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আধিকারিকরা।
জানা গিয়েছে, বিকেল চারটা নাগাদ আজকের মত তল্লাশি শেষ করে ইডি আধিকারিক সহ নিরাপত্তা বাহিনী মেখলিগঞ্জ শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর বাড়ি থেকে বেরিয়ে অন্যত্র চলে যান।
আজ সকাল সকাল আসাম নাম্বারের চারটে ইনোভা গাড়ি নিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর বাড়িতে তল্লাশির জন্য আসেন ইডি আধিকারিকরা। বেলা চারটা নাগাদ ম্যারাথন তল্লাশির পর তারা বেরিয়ে যান। এদিন সকালে তল্লাশি চালানোর সময় বাড়িতে ছিলেন মন্ত্রীকন্যা অঙ্কিতা অধিকারী এবং তার স্ত্রী। তল্লাশির সময় তাদের মোবাইল ফোন ইডি আধিকারিকের হেফাজতে রাখা হয় বলে জানা গিয়েছে।
সুত্রের খবর, ইডি আধিকারিকদের এই ম্যারাথন তল্লাশির সময় মন্ত্রীকন্যা এবং তার স্ত্রীকে কোন মতেই বাড়ির বাইরে বের হতে দেয়নি। একবার মন্ত্রী-স্ত্রী বাইরে বের হতে চেয়েছিলেন কিন্তু তাকে বের হতে দেওয়া হয়নি। বাড়ির চারদিকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তার ঘেরা টপে রাখা হয়েছিল শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রী মন্ত্রীর বাড়ি। বর্তমানে মন্ত্রীর পরিবারের দুই সদস্য অঙ্কিতা এবং মন্ত্রী স্ত্রী বাড়ির বাইরের গেটের দরজা বন্ধ করে দিয়েছেন ভেতরে সংবাদ মাধ্যমকে ঢুকতে দিচ্ছেন না। স্বাভাবিক কারণেই মন্ত্রীকন্যা এবং মন্ত্রী স্ত্রীর কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
অপরদিকে,অনেক চেষ্টা করেও ইডির আধিকারিকদের বক্তব্য মেলেনি এবং সংবাদ মাধ্যমের কাছে কোন মুখ খোলেন নি তারা। এবার দেখার বিষয় কেন এসেছিল ইডি মন্ত্রী পরেশ চন্দ্র অধিকারীর মেখলিগঞ্জের বাড়িতে? সব থেকে বড় বিষয় রাজ্য পুলিশকেও মন্ত্রীর বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
ইডি কিংবা মন্ত্রীর পরিবার এবং মন্ত্রী কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি তবে টেলিফোনে মন্ত্রী পরেশ চন্দ্র অধিকারীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, “হয়তো তার বাড়ির সকলের মোবাইল ইডি আধিকারিকেরা নিয়ে চলে গেছে। তবে তার সাথে বাড়ির কারোর এখনও কোথা হয়নি। তাই এব্যাপারে তিনি বলতে পারবেন না।”
উল্ল্যেখ্য,পরেশের মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীকে স্কুল শিক্ষিকা হিসেব নিয়োগের ক্ষেত্রে বেনিয়মের অভিযোগ ওঠে। প্রভাব খাটিয়ে যোগ্য প্রার্থীকে তালিকা থেকে সরিয়ে অঙ্কিতার নাম তালিকায় তোলার অভিযোগ ওঠে। সেই মামলায় আদালতের নির্দেশে ইতিমধ্যেই চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে মন্ত্রী কন্যাকে।মামলাকারী ববিতা সরকারকে সেই পদে নিয়োগও করা হয়েছে ইতিমধ্যে। তবে, নিয়োগ দুর্নীতির শিকড় ঠিক কোথায়, কারা কারা এর সঙ্গে যুক্ত, কী ভাবে এগোত নিয়োগ প্রক্রিয়া, তা খুঁজে বের করতেই তৎপর হয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। প্রথমে আদালতের নির্দেশে এই মামলার তদন্ত শুরু করে সিবিআই। পরে ইডিও তদন্ত শুরু করে। নিয়োগের জন্য কোনও আর্থিক লেনদেন হয়েছে কি না, সেটা খুঁজে বের করতে চায় ইডি।
এ দিন শুধু পরেশ অধিকারী ও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে নয়, অন্তত ১০ জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছে ইডি-র টিম। এসএসসি-র প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিু প্রসাদ সিনহার বাড়িতেও গিয়েছিলেন আধিকারিকরা।
দীর্ঘ ৯ ঘণ্টা তল্লাশির পর অবশেষে পরেশ অধিকারীর বাড়ি থেকে বেড়িয়ে গেলেন ইডি আধিকারিকেরা।

Leave a Reply