প্রকৃতিকে ভালোবেসে জঙ্গলের মধ্যে কদম গাছের ওপরে ঘর বানিয়ে একাকী জীবন কাটিয়ে চলেছেন মাচান বাবা।

নদীয়া, নিজস্ব সংবাদদাতা:- প্রকৃতিপ্রেমী হয়তো অনেক দেখেছেন কেউ ভালোবাসে পশু পাখিকে আবার কেউ ভালবাসে গাছপালাকে। প্রকৃতিপ্রেমী মানুষেরা প্রকৃতিকে ভালোবেসে একাধিক কিছু উৎসর্গ করেন। তবে নবদ্বীপের মাচান বাবাকে দেখলে সে সবই হার মেনে যায়। দীর্ঘ 17 বছর ধরে গঙ্গার পাড়ে জঙ্গলের মধ্যে কদম গাছের ওপরে ঘর বানিয়ে একাকী জীবন কাটিয়ে চলেছেন তিনি। নাম শ্যামল দাস অতীতে পেশা ছিল কাঠের মিস্ত্রী। এলাকায় কাঠের মিস্ত্রি হিসেবে নামও ছিল তার প্রচুর। সেই দক্ষতাতেই বর্তমানে কদম গাছের উপরে একটি ঘর বানিয়ে দীর্ঘ সতেরো বছর ধরে রয়েছেন তিনি।

একসময় ঘর পরিবার সবই ছিল কিন্তু সবকিছু ত্যাগ করে সন্ন্যাস জীবন নিয়ে নবদ্বীপের রানীর চড়া এলাকায় বর্তমানে মাচান বাবার স্থান গাছের ওপরে। একা একাই নিজের দক্ষতার বলে গাছের উপর একটি ঘর বানিয়েছেন তবে সেই ঘরে নেই কোন বৈদ্যুতিক আলো কিংবা ফ্যানের। একাই থাকেন তবে বর্তমানের সঙ্গী গাছের পোকামাকড়, কুকুর, হনুমান, এমনকি সাপও বলে জানান তিনি।

প্রতি রোববার মাচান বাবা শহরের বুকে নামেন ভিক্ষে করতে। লোকে যে যা দেয় তাই খান। ঘরের মধ্যে রয়েছে একাধিক ঠাকুরের মূর্তি ও ছবি নিয়মিত পুজো করেন তিনি এরপর সেই পুজোর প্রসাদ ভাগ করে খান পশুপাখি এমনকি হনুমানের সাথেও। তিনি জানান বর্তমানে এদেরকে নিয়েই তার জীবন। এদের সাথে ভালো বন্ধুত্ব হয়ে যাওয়ার কারণে কোন পশু পাখি কোনদিনও ক্ষতি করেনি মাচান বাবার।

তার ঘরে রয়েছে একটি রেডিও আমরা মাচান বাবার গাছে উঠে ঘরে যাওয়ার মত পরিস্থিতি পেলাম না। তবে ক্যামেরা নিয়ে যেটুকু স্থানে পৌঁছলাম দেখলাম অন্ধকারাচ্ছন্ন ঘরের মধ্যে রয়েছে একটি স্টোভ যেখানে ভিক্ষে করে যা পান তাই দিয়ে রান্না করে খান। তবে বর্ষার দিনে একটু সমস্যা হয় তার বলে জানালেন তিনি। স্টোভের ভেতরে জল ঢুকে যায় তখন আগুন ধরতে চায় না তাই রান্না করতে সমস্যা হয়। একবার এলাকার কিছু মানুষ দু একটি ত্রিপল দিয়ে সাহায্য করলেও সরকারি কোনো সুযোগ সুবিধা এখনো পর্যন্ত পাননি বলে দাবি করেন তিনি।

প্রকৃতিকে ভালোবেসে তাদের সাথে মিশে যাওয়া এবং দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে গাছের উপরে ঘর বানিয়ে থাকার মাচান বাবাকে শ্রদ্ধা করেন গোটা নবদ্বীপবাসী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *