নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা;;০১অক্টোবর: মায়ের শেষ কৃত্যের জন্য খুনের সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে পেরোলে নিয়ে আসা হলো পুলিশি পাহারায়।আসামিকে দেখতে ভেঙে পড়ল ভিড়। মোতায়েন বিশাল পুলিশ বাহিনী। ৮ মাস আগে হরিশ্চন্দ্রপুরের ভালুকা স্টেশনে ঘটে যাওয়া নৃশংস মোজাম্মেল হত্যা কাণ্ডের অভিযুক্ত ১২ জনের যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা করে মালদা কোর্ট। এরপরই ওই ১২ জন যাবজ্জীবন প্রাপ্ত আসামিদেরকে রাজ্যের বিভিন্ন জেলে স্থানান্তর করা হয়। গতকাল শুক্রবার গভীর রাতে এই যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে থাকা হরিশ্চন্দ্রপুরের রাঙ্গাইপুর গ্রামের বাসিন্দা মালেক কস্তুর ওরফে বাবলুর মা মারা যাওয়াতে তাকে প্যারোলে হরিশ্চন্দ্রপুর নিয়ে আসে বালুরঘাট পুলিশ। হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি দেওদূত গজমের এবং স্থানীয় শাসকদলের নেতারাই ব্যবস্থা করেন তাকে আনার জন্য। এদিন এই যাবজ্জীবন প্রাপ্ত আসামীকে ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজিয়েছিল হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ। আসামিকে দেখতে এলাকার আশে-পাশের গ্রাম ভেঙ্গে পড়ে রাঙ্গাইপুর এলাকায়। চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকা জুড়ে। গতকাল রাত্রে যাবজ্জীবন সাজপ্রাপ্ত আসামী বাবলু মৃত মায়ের শেষ কার্যসম্পন্ন করার পরেই তাকে নিয়ে পুনরায় বালুরঘাট রওনা দেয় বালুরঘাট জেলা সংশোধনাগারের পুলিশ কর্মীরা।অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে তৎপর ছিল পুলিশ।
প্রসঙ্গত বছর আটেক আগে জমি বিবাদের জেরে হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকার রাঙ্গাইপুর গ্রামের এক ইটভাটার মালিক মোজাম্মেল হককে মালদা কাটিহার গামী ট্রেন থেকে ভালুকা রোড স্টেশনে নামিয়ে নিশংস ভাবে খুন করে এলাকার একদল দুষ্কৃতী। ভোজালীর কোপে তার দেহকে টুকরো টুকরো করে কেটে বস্তা বন্দী করে দৌলতনগর ব্রিজের নিচে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। ওই খুনের ঘটনায় এলাকার বেশ কয়েকজনের নামে অভিযোগ দায়ের করে মোজাম্মেলের পরিবার। দীর্ঘদিন ধরে কোর্টে কেস চলার পরে গত আট মাস আগে রাঙ্গাইপুর গ্রামেরই ১২ জন অভিযুক্তকে যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা করে মালদা জেলা আদালত। এই সাজাপাত্র আসামিদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন এই মালেক কস্তুর ওরফে বাবলু।
এদিকে বাবলুর স্ত্রী জুলেখা বিবি জানান আমার স্বামী নির্দোষ। তাকে চক্রান্ত করে এই মামলায় ঢোকানো হয়েছে। বাড়িতে ছোট ছোট পাঁচটা ছেলেমেয়ে রয়েছে। পরিবারের একমাত্র উপার্জন কারী ছিল আমার স্বামী। স্বামী জেলে চলে যায় পরিবারের উপার্জন বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এখন আমি গ্রামে ভিক্ষাবৃত্তি করি, ছেলে মেয়েদের মুখে অন্ন তুলে দিচ্ছি।
এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা মনসুর রহমান জানান স্থানীয় এক মার্ডার কেসের অভিযুক্ত বাবলু আজ তার মাকে মাটি দেওয়ার জন্য গ্রামে এসেছে। বালুরঘাট পুলিশ তাকে গ্রামে নিয়ে এসেছে। এদিন মায়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন করেই তাকে সঙ্গে করে পুনরায় জেলে নিয়ে যায় বালুরঘাট পুলিশ।
স্থানীয় তৃণমূল নেতা হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান রিষবা খাতুনের স্বামী আফজাল হোসেন বলেন, পুলিশের সহযোগিতায় এবং আমাদের স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের ব্যবস্থাপনায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি বাবলুকে নিয়ে আসা হয়েছিল ওর মায়ের শেষকৃত্যে অংশগ্রহণ করার জন্য। তারপর আবার ওকে নিয়ে চলে যাওয়া হল।
ভারতবর্ষের সংবিধান অনুযায়ী যে কোন আসামিরও মানবাধিকার রয়েছে। এক্ষেত্রে পুলিশ যথাযোগ্য দায়িত্ব পালন করেছে।












Leave a Reply