নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা:-বিধানসভা ভোটে ভাঙ্গা পায়ে খেলা হয়েছিল পঞ্চায়েত ভোটে ভালো পায়ে খেলা হবে। আরো ভয়ংকর খেলা হবে। ধুলিস্যাৎ হয়ে যাবে বিরোধীরা। জামানত বাজেয়াপ্ত হবে বিরোধীদের। বিরোধীদের উদ্দেশ্যে কার্যত হুংকার দিয়ে রাখলেন তৃণমূল নেতা। পাল্টা কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি এবং কংগ্রেস। বিজেপির দাবি সন্ত্রাস মুক্ত নির্বাচন হলে জনসাধারণ তৃণমূলকে মুছে দেবে। কংগ্রেসের দাবি বিধানসভার ভুল মানুষ আর করবে না।শাসক বিরোধীর বাক যুদ্ধে পঞ্চায়েত ভোটের প্রাক্কালে সরগরম এলাকার রাজনীতি। তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা। বছর ঘুরলেই পঞ্চায়েত ভোট। হাতে সময় আর মাত্র কয়েক মাস। প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে সব রাজনৈতিক দল। মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লক কার্যালয়ে সোমবার তৃণমূলের একটি দলীয় বৈঠক হয়। সদ্য ঘোষণা হয়েছে ব্লক তৃণমূলের যুব কমিটি। এরপর ঘোষণা হবে অঞ্চল কমিটি। পঞ্চায়েত ভোটে যুবশক্তিকে সামনে রেখে কি ভাবে এগোবে দল সেই নিয়ে আলোচনা করে নেন শাসকদলের নেতারা। সাথে হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লক সম্মেলন নিয়েও আলোচনা করা হয়। উপস্থিত ছিলেন মালদা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জম্মু রহমান, আরেক সাধারন সম্পাদক বুলবুল খান, হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লক পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ মনিরুল ইসলাম সহ অন্যান্য নেতৃত্ব। পাখির চোখ পঞ্চায়েত ভোট। বিধানসভা ভোটের ফলাফল ধরে রাখতে মরিয়া শাসকদল। প্রস্তুতিতে কোন রকম খামতি রাখতে নারাজ তারা। বৈঠক থেকে কার্যত সেই বার্তায় দিয়ে দিয়েছে তৃণমূল নেতারা। আর সেখান থেকেই বিরোধীদেরকে এক হাত নেন তৃণমূল নেতা জম্মু রহমান। তিনি বলেন বিধানসভা ভোট পুরসভা ভোটের মতো পঞ্চায়েত ভোটেও বিরোধীরা কুপোকাত হবে। প্রত্যেকটি বুথে জামানত বাজেয়াপ্ত হবে বিরোধীদের। মমতা ব্যানার্জির উন্নয়নের সামনে দাঁড়াতে পারবে না বিরোধীরা। সাথে তিনি বলেন বিধানসভা ভোটের সময় দুর্ঘটনার কারণে মুখ্যমন্ত্রীর পা ভেঙে গেছিলো। এবার ঈশ্বরের কৃপায় তিনি সুস্থ আছেন। তাই আরো ভয়ংকর খেলা হবে। “পাগলে কি না বলে ছাগলে কিনা খায়” বিরোধীদেরকে এই ভাবেও কটাক্ষ করেন তিনি। নির্বাচনি সন্ত্রাস প্রসঙ্গকে অস্বীকার করে পাল্টা সংবাদ মাধ্যমের দিকে আঙুল তুলেন। এদিকে তৃণমূলের এই হুংকারের পর থেমে থাকে নি বিজেপি। বিজেপির দাবি হরিশ্চন্দ্রপুরের অধিকাংশ পঞ্চায়েত বিজেপি জিতবে। মানুষ তৃণমূলের সন্ত্রাস রুখে দেবে। জমানত তৃণমূলেরই বাজেয়াপ্ত হবে। কংগ্রেসের কটাক্ষ মমতার নাটক ধরে ফেলেছে মানুষ।
মালদা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জম্মু রহমান বলেন, বিরোধীরা সব সময় বড় বড় কথা বলে। বিধানসভা ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট হওয়ার পরেও তারা হেরে গেছে। মানুষ উন্নয়ন দেখে ভোট দিচ্ছে। পঞ্চায়েত ভোটে জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।
বিজেপির জেলা কমিটির সদস্য কিষাণ কেডিয়া বলেন, হরিশ্চন্দ্রপুর দুইটি ব্লকের অধিকাংশ জায়গায় বিজেপি জিতবে। তৃণমূলের দুর্নীতির জবাব দেবে সাধারণ মানুষ। তৃণমূল রক্তের খেলা খেলার চেষ্টা করবে। কিন্তু জনসাধারণ এবার সব আটকে দেবে।
হরিশ্চন্দ্রপুর ব্লক কংগ্রেসের সভাপতি বিমান বিহারী বসাক বলেন, মানুষ বিধানসভায় যেটা ভুল করেছে পঞ্চায়েত ভোটে সেটা শুধরে নেবে। তৃণমূলের উন্নয়ন বলতে গোটা শিক্ষা দপ্তর জেলে। চারিদিকে সন্ত্রাস আর দুর্নীতি।
প্রসঙ্গত এক সময় হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকা জুড়ে রাজনৈতিক আধিপত্য ছিল বাম এবং কংগ্রেসের। বর্তমানে হাত ধরেছে এই দুই দল। কিন্তু সারা রাজ্যের সঙ্গে হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকাতেও তাদের প্রভাব যথেষ্ট কমে গেছে। সেখানে একচ্ছত্র প্রভাব শাসকদলের। কিছুটা হলেও নিজেদের জমি তৈরি করতে পেরেছে বিজেপি। তবে দুর্নীতি ইস্যুতে জর্জরিত শাসকদল। পঞ্চায়েত ভোটে তাই এলাকায় রাজনৈতিক সমীকরণ কোন দিকে যায় সেখানে তাকিয়ে সকলে।
Leave a Reply