লবনধারা গ্রামের প্রায় প্রতিটি আদিবাসী বাড়িতে তার অর্থবহ চিহ্ন পাওয়া যায়।

পূর্ব বর্ধমান, রামকৃষ্ণ চক্রবর্তীঃ- কমপক্ষে তিনশ বছর আগের ঘটনা। পূর্ব বর্ধমানের আউসগ্রামের ঘন জঙ্গলের গা ছম ছম করা পরিবেশে দেবশালা অঞ্চলের ‘বড়ডোবা’-র তীরে ছিল এক বিশাল বটগাছ। শোনা যায় পায়রা অথবা চিল সেই গাছের উপর এসে বসে। তখন ঐ ডোবাকেই কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে এক আদিবাসী পাড়া।

অন্যদিকে আছে আর এক কাহিনী। এই রাজ্যের সবচেয়ে কলঙ্কময় ইতিহাস লুকিয়ে আছে ১৯৭২ সাল জুড়ে। নকশালদের দাপটে রক্তরঞ্জিত হয়ে ওঠে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত। রেহাই পায়নি আউসগ্রামের বেনাচাপড়া। আতঙ্কিত হয়ে এলাকার বাসিন্দারা চলে আসে বড়ডোবায়। গড়ে তোলে এক 'নতুনগ্রাম'। কিন্তু নতুনগ্রাম হিসাবে পরিচিতি পায়নি।  হয়ে উঠেছে লবনধারা। সেই নাম আজও চলে আসছে। 
এসব ঘটনা এলাকার প্রবীণ কাছে শোনা যায়।

 ইতিহাস সাক্ষী আছে - যুগ যুগ ধরে আদিবাসী রমণীদের সৌন্দর্যের প্রতি আলাদা প্রীতি আছে। শত দুঃখ-কষ্ট বা অভাবের মধ্যেও কোনোদিনও সেটা তারা ভোলেনি। ব্যক্তিগত ভাবে তারা যেমন সাজতে ভালবাসে তেমনি গৃহস্থালির মধ্যেও সেই সৌন্দর্য ধরা পড়ে। লবনধারা গ্রামের প্রায় প্রতিটি আদিবাসী বাড়িতে তার অর্থবহ  চিহ্ন পাওয়া যায়। মনসা মন্দিরে যেমন আছে সাপের চিত্র, তেমনি কোথাও আছে রাধাকৃষ্ণের মূর্তি। পশুপাখি, মাছ ইত্যাদি তো আছেই।

স্হানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে কোনো একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্হার উদ্যোগে বোলপুর থেকে পেশাদার শিল্পীরা এসে এইসব চিত্র অঙ্কন করে গ্যাছেন। তবে যিনিই অঙ্কন করুন না কেন তার মধ্যে আদিবাসীদের স্বাভাবিক ঐতিহ্য ধরা পড়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *