পূর্ব মেদিনীপুর, নিজস্ব সংবাদদাতা:- খেলতে খেলতে হঠাৎই অসুস্থ কোলাঘাট গভর্মেন্ট পলিটেকনিক কলেজের গৌতম রাউৎ নামে ইলেকট্রিক ইঞ্জিনিয়ার তৃতীয় বর্ষের ৫ ম সেমিস্টারের এক ছাত্র। ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকদের তৎপরতায় ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়, সেখান থেকে ডাইলোসিসের পর ভয়ানক রিপোর্টে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য, জানা গিয়েছে ওই ছাত্রের দুটি কিডনিই নষ্ট। দরিদ্র দিনমজুর পরিবারের ছেলে গৌতম পড়াশুনার পাশাপাশি রাজ মিস্ত্রির জোগারের কাজ করে নিজের পরিবার চালাতেন। শিক্ষকরা বলছেন পড়া শোনাতেও যথেষ্ট মেধাবী গৌত্তম। তার বাড়ি পার্শ্ববর্তী জেলা হাওড়ার উলুবেড়িয়া তে, বাবা একজন কৃষক। বর্তমানে ওই ছাত্র কলকাতা পিজি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কিন্তু সাধ্য নেই এই মারাত্মক রোগের চিকিৎসা করার, কলেজের সহপাঠীরা জানতে পেরেই স্টেশন থেকে বাজার, কার্যত রাস্তায় ঘুরে ঘুরে বন্ধুর জন্য অর্থ সংগ্রহ করছেন, উদ্দেশ্য একটাই মৃত্যুর মুখ থেকে সহপাঠীকে সুস্থ করে পুনরায় কলেজে ফিরিয়ে আনা। শুধু ছাত্ররাই নয় কলেজের শিক্ষকরাও সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছেন পাশে থাকার। পরিবার সূত্রে খবর ছাত্রের বাবা একাধিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব থেকে শুরু করে একাধিক সংস্থার সম্মুখীন হয়ে ছিলেন সাহায্যের জন্য। কিন্তু কোন আশানুরূপ ফল পাইনি। ছেলেকে সুস্থ করতে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন পরিবারের সদস্যরা। এই পরিস্থিতিতে বন্ধুর পাশে দাড়িয়ে কলেজর সহপাঠীরাই দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ তাদের অসুস্থ সহপাঠীকে সুস্থ করে কলেজে ফিরিয়ে আনতে। প্রতিনিয়তঃ বাড়ি থেকে দেওয়া টিফিনের খরচ বাঁচিয়ে সঞ্চয় করছেন সহপাঠীর চিকিৎসার উদ্দেশ্যে। ছাত্র-ছাত্রীদের এহেন উদ্যোগ ব্যাপকভাবে দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা জুড়ে। শুধু সচেষ্টতাই নয় রাজনীতিবিদ নেতা মন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে সারা ভারতবর্ষের মানুষের কাছে ছাত্র-ছাত্রীদের কাতর আবেদন একটু সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন-আমরা ফিরে পেতে চাই আমাদের সহপাঠীক। নিজেদের প্রতিনিয়ত খরচ বাঁচিয়ে সঞ্চয় করার পাশাপাশি খোঁজ খবরও চালিয়ে যাচ্ছেন সোশ্যাল মিডিয়াত, কোন সংস্থার সাহায্যের হাত তাদের দিকে বাড়িয়ে দিল কিনা, দীর্ঘ সপ্তাহখানেক এর এই ছাত্র-ছাত্রীদের সহপাঠীর উদ্দেশ্যে লড়াই অন্যান্য স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে সহপাঠীর প্রতি ভালোবাসা, শ্রদ্ধা, দায়বদ্ধতা এবং বন্ধু প্রীতির এক অবিস্মরনীয় দৃষ্টান্ত বলে মনে করছে সামাজিক মহল। তবে ছাত্র-ছাত্রীদের এহেন সংগ্রাম কতটা আশানুরূপ ফল দেবে? নিজেদের সহপাটিকে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে দিতে কতটাইবা সক্ষম হবে তা সময়ের অপেক্ষা। তবে শিক্ষিক সহ কলেজের ছাত্র ছাত্রীদের পশ্চিম বাংলা তথা ভারতবাসীর কাছে করজোড়ে আবেদন এগিয়ে আসুন, অসহায় গরিব এই ছাত্রের পাশে দাঁড়িয়ে তাকে সুস্থকরে পুনরায় ফিরিয়ে দিন আমাদের কলেজে। আমরা ফিরে পেতে চাই আমাদের সহপাঠীর সাথে চরম আনন্দের সেই দিন গুলো।
দুটি কিডনিই নষ্ট দরিদ্র দিনমজুর পরিবারের ছেলের, সাহায্যের আবেদন।

Leave a Reply