Skip to content
  • Monday, 19 May 2025
  • 3:01:52 AM
  • Follow Us
Sob Khabar

Sob Khabar

  • হোম
  • রাজ্য
    • উত্তর বাংলা
      • আলিপুরদুয়ার
      • কোচবিহার
      • দক্ষিণ দিনাজপুর
    • দক্ষিণ বাংলা
      • পশ্চিম মেদিনীপুর
      • পুরুলিয়া
      • পূর্ব মেদিনীপুর
      • ২৪পরগনা
        • গোসাবা
  • কলকাতা
  • দেশ
  • বিদেশ
  • ওপার বাংলা
  • খেলা
  • বিনোদন
    • ভ্রমণ
    • সাক্ষাৎকার
  • লাইফস্টাইল
  • স্বাস্থ্য
  • সাহিত্য
  • রেসিপি
  • সম্পাদকীয়
  • Home
  • দামাল মেয়ে কুহেলি (ধারাবাহিক উপন্যাস; পঞ্চম পর্ব) : দিলীপ রায়।
Featured সাহিত্য

দামাল মেয়ে কুহেলি (ধারাবাহিক উপন্যাস; পঞ্চম পর্ব) : দিলীপ রায়।

sobkhabaradmin May 14, 2023 0
               কুহেলির কান্নার আওয়াজে গাঁয়ের মানুষের ভিড় । অনেক লোকজনের মধ্যে কানাই কাকা ছুটে এসে ভাইঝিকে সান্ত্বনা দিয়ে বলল,  “তোর ভয় কী ? আমরা তো আছি । তুই দুশ্চিন্তা করিস না মা  !“  
      অতো লোকের মাঝে মাতৃসম কাকীমার বলার ভঙ্গিমা অশোভনীয় ।  কাকীমা  বলল, “তোর বাবা তোকে রেখে পান্তা মাসিকে নিয়ে পালিয়ে গেলো । একটিবারের জন্য তোর কথা ভাবলো না । আমরা থাকলে কী হবে ? আমরা সবসময় তোকে আগলে রাখতে পারবো না । ঐদিকে আমার ছেলেপুলেদের দেখবো, নাকি তোকে  সামলাবো । আচ্ছা জ্বালায় পড়া গেলো । না চাইতেই ভাসুরের মেয়ে এখন আমাদের সংসারের  অতিরিক্ত বোঝা হয়ে দাঁড়ালো  !”
       কান্না থামিয়ে কুহেলি কাকীমাকে হাত জোড় করে বলল, “দোহাই কাকীমা, আমি তোমাদের বোঝা হয়ে থাকবো না । সুতরাং আবোল-তাবোল  কথা বন্ধ রাখো । সম্ভব হলে বাবাকে ফিরিয়ে এনে দাও, নতুবা আমি একাই আমার বাড়িতে বাঁচতে পারবো । সেক্ষেত্রে আমি তোমাদেরকে বিরক্ত করবো না ।“ 
       রাত বাড়ছে । গাঁয়ের দলুই জেঠু এগিয়ে এসে কুহেলির মাথায় হাত রেখে বললেন, “চিন্তা করিস না মা । গাঁয়ে আমরা তোর পাশে রয়েছি । দরকার হলে আমরা তোর পাশে সর্বদা থাকবো । এখন তোকে একটা কাজ করতে হবে মা ?”
      কী কাজ জেঠু ?
      বাবা নিখোঁজ !  সুতরাং থানায় জানাতে হবে । 
       থানায় এত রাত্রে আমি কীভাবে  যাবো ? 
       একা যাবে কেন ? কেউ না গেলে আমি তোর সাথে যাবো । তবে …?
       তবে কী জেঠু ?
       এ-ক্ষেত্রে তোর কাকুর যাওয়া উচিত  !  
       কানাই কাকাকে দলুইবাবু ডাকলেন  এবং বললেন, “তোমার দাদাকে পাওয়া যাচ্ছে না, এই বিষয়টা থানায় জানাতে হবে  এবং এফ-আই-আর করতে হবে । নতুবা পরে থানায় ‘না-জানানোর’  জন্য কথা উঠতে পারে ! তা ছাড়া থানায় জানানো তোমার কর্তব্যের মধ্যে পড়ে । দাদাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, সেক্ষেত্রে তুমি হাত-পা গুটিয়ে থাকতে পারো না ।  সুতরাং থানায় তোমাকে অবশ্যই জানাতে হবে ।  
        কানাই বলল, “দলুই দাদা, আমি থানায় এই সব কাজে কোনোদিন যাইনি । সুতরাং আমার সঙ্গে  কয়েকজন গেলে ভাল হতো । 
      “তোমাদের সাথে আমি যাচ্ছি । তোমরা বরং রেডি হয়ে নাও । আমরা এক্ষুণি বেরিয়ে যেতে চাই  !” বললেন দলুইবাবু ।          
       দলুই জেঠু ও কানাই কাকাকে নিয়ে থানায় পৌঁছালো কুহেলি  । তখন থানায় বড়বাবু ছিলেন না । তিনি জরুরি মিটিংয়ে মহাকুমা অফিসে গেছেন । সেখান থেকে ফিরে থানায় ঢোকেননি । সুতরাং থানার ডিউটি অফিসার এফ-আই-আর নিতে গররাজি । তাঁর বক্তব্য, “বড়বাবুর নির্দেশ ছাড়া আমি আপনাদের বক্তব্য ডায়েরি করতে পারব না । আপনারা বরং আগামীকাল  আসুন ।“ ০.   
      কুহেলি লক্ষ্য করলো, “কানাই কাকার মুখ শুকনো । সে বারংবার দলুই জেঠুর দিকে তাকাচ্ছে । এখন কী করণীয়, সেটাই বুঝে উঠতে পারছে না । তা ছাড়া কানাই কাকা  থানা-পুলিশের কিচ্ছু বোঝে না । এতকাল এইসব ঝুট ঝামেলা বড় ভাই হিসাবে  বাবা সামলাতো । তাই কানাই কাকা ধন্দে, তারা এখন কী করবে ?”  
       দলুই জেঠু প্রমাদ গুণলেন,  থানা থেকে বাড়ি ফিরে গেলে চলবে না । একটা কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে ফিরতে হবে । তিনি চাইছেন,  এফ-আই-আর করে তবেই বাড়ি  ফিরবেন । তাই কুহেলি লক্ষ্য করলো -- দলুই জেঠু কানাই কাকাকে বললেন, “চলো কানাই, আমরা থানার বড়বাবুর ফোন নম্বরটা নিই । তারপর বড়বাবুর সাথে কথা বলে একটা সিদ্ধান্তে আসা যাবে ।“  
     “সেটাই ভাল দাদা । বড়বাবুর সঙ্গে কথা বললে একটা সুরাহার পথ বের হবে ।“  কানাই কাকা দলুই জেঠুকে বলল ।
       থানার ডিউটি অফিসারের কাছ থেকে বড়বাবুর ফোন নম্বর সংগ্রহ করলেন দলুই জেঠু । থানার ডিউটি অফিসার দলুই জেঠুকে সতর্ক করে দিয়ে বললেন, “বড়বাবুকে কখনই বলবেন না, আমি আপনাকে ফোন নম্বর দিয়েছি । কেননা  বড়বাবু জানতে পারলে  অহেতুক আমাকে  প্রশ্নবাণে জর্জরিত করবেন ।“
       “ঠিক আছে । নিশ্চিন্ত থাকুন । আমি আপনার কাছ থেকে ফোন নম্বর পেয়েছি, সেটা বড়বাবুকে জানাচ্ছি না ।‘ দলুই জেঠু থানার ডিউটি অফিসারকে আশ্বস্ত করলেন ।
       থানার বাইরে বেরিয়ে এসে দলুই জেঠু  থানার বড়বাবুকে ফোন করলেন । রিং হচ্ছে, কিন্তু ফোন তুলছেন না । পুনরায় ফোন করলেন দলুই জেঠু  । ঐদিক থেকে উত্তর, “হ্যালো, আপনি কে বলছেন ?”
        স্যার, আমি কাঞ্চন নগরের দলুইবাবু বলছি ।
        এত রাত্রিতে ফোন ?
        হ্যাঁ স্যার । আমরা থানায় এসেছি আপনার সাথে দেখা করতে  । 
        থানায়  আমি নেই ।  এখন আমি বাড়িতে । হঠাৎ আপনাদের থানায়  আসার  কারণ জানতে পারি  ? 
        স্যার, সর্বনাশ হয়ে গেছে  !  আমাদের গাঁয়ের সানাইকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না । তার একমাত্র মেয়ে কুহেলি । কুহেলির কান্না থামানো যাচ্ছে না । কুহেলির আবার মা নেই । খুব সমস্যা ! বাড়িতে এখন শুধুমাত্র কুহেলি । তাই আমরা থানায় এসেছি এফ-আই-আর করতে ।
         কিন্তু এখন আমি থানায় যেতে পারবো না ।
        দরকার নেই । আপনাকে আসতে হবে না । বরং আপনি থানার ডিউটি অফিসারকে বলে দিন,  যাতে তিনি আমাদের বক্তব্য ডায়েরি করেন । 
       ঠিক আছে । বলে দিচ্ছি । তবে ডিউটি অফিসার মিসিং ডায়েরি  করবেন ।
      “তাতে আমাদের আপত্তি নেই ।“  দলুই জেঠু বললেন । 
       ডায়েরি করে বাড়ি ফিরতে ফিরতে ভোর চারটে  । আর ঘুমালো না কুহেলি । সকাল বেলায় স্নান সেরে  মাথার চুল শুকোতে  উঠোনে এসে দাঁড়ালো  । এমন সময় চার-পাঁচজন ঠ্যাটা ছেলে কুহেলিকে ইঙ্গিত করে বলল, “তোমাকে পাহাড়া দেওয়ার জন্য আমরা এসেছি ।“
      কুহেলি নীরব !
      কুহেলির নীরবতা অবলোকন করে তারা অপ্রাসঙ্গিক কথাবার্তার বিচ্ছুরণ ঘটাতে পারলো  না । অবশেষে তারা পালিয়ে গেলো । কিন্তু কুহেলি মনে মনে ভাবলো, “তার জীবনে এইসব উটকো মানুষের ঝামেলার দিন শুরু  । তবুও কুহেলি দমবার পাত্রী নয় । কুহেলির মতে, সময়-সুযোগ মতো  প্রত্যেকেই উপযুক্ত জবাব দেবে । নেহাত আজ মন খারাপ !  মেজাজ ভাল নেই  । নতুবা তিনটেকে ঘা-কতক দিলেই পাহাড়া দেওয়ার সখ ঘুচিয়ে দিতে পারতো । কুহেলি যেমন শারীরিক দিয়ে শক্ত, তেমনি মনের দিক দিয়েও  সমানভাবে শক্ত ও তেজি ।  যার জন্য তার ভয়ডর কম । 
     এখন কী করবে ভেবে কূল-কিনারা পাচ্ছে না কুহেলি । সামনে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা । পড়াশুনায় মন বসছে না । ঘরে যেটুকু চাল-ডাল আছে, তাতে কয়েকদিন চলবে । তারপর কী হবে ? ইতিমধ্যে কাকীমা পরামর্শ দিয়ে গেছে, এই পরিস্থিতিতে কুহেলির মামা বাড়িতে চলে যাওয়া উচিত ।  সেটাও ভেবেছে কুহেলি । মামা বাড়িতে থাকলে, নিরাপত্তার দিক দিয়ে  নিশ্চিন্তে থাকবে । কিন্তু সেখানেও থাকা নিয়ে তার সংশয় ! কেননা একটাই মামা । মামা ঠিক আছেন । কিন্তু মামীমার আচরণ একটু অন্যরকম । এর আগে মামা বাড়িতে যখন বেড়াতে গেছে, তখন মামীমা  সহজভাবে কুহেলির সঙ্গে মিশতেন না । তাঁর হাবভাব ছিল,  আপদ বিদায় হলে বাঁচি  । তাই আগে মায়ের অবর্তমানে যতোবার মামা বাড়ি বেড়াতে গেছে, ততোবার কুহেলির মনে হয়েছে মামীমা ভাবছেন আপদ বিদেয় হলে ভাল হতো । মামীমা সম্বন্ধে কুহেলির অভিজ্ঞতা  বাবাকে তৎক্ষণাত জানিয়েছিল । কিন্তু বাবা বুঝিয়েছিল, “কয়েকটা দিনের মামলা । কোনোরকমে মানিয়ে চলাটাই যুক্তিযুক্ত !” কুহেলি  ছোট হলেও তখন বুঝেছিল, মা চলে গেছে মানেই তার মা-হীন জীবনে অনেক দুঃখ কষ্ট সইতে হবে । 
     কিন্তু এইরকম একটা  অকল্পনীয় বিপদের সম্মুখীন হবে সেটা কুহেলি কস্মিনকালেও  ভাবেনি ! বাবা তাকে না জানিয়ে এইরূপ একটা সিদ্ধান্ত নেবে, তার ভাবনার অতীত । বাবা সবসময় তাকে নিয়ে  তটস্থ থাকতো । বাপ-বেটির বন্ডিং  ছিল অন্যের কাছে ঈর্ষণীয়  !  বাবা কোথাও গেলে এমনকি  বাজারে গেলেও তাকে জানিয়ে যেতো । তেমনি বাবা না খেলে কুহেলি কখনও একা খেতে বসতো না । শীতলের সঙ্গে মেলামেশা নিয়ে পান্তা মাসি তাকে অনেক কটু কথা শুনিয়েছে, কিন্তু বাবা তাকে একটা কথাও বলেনি । বাবার বিশ্বাস ছিল, “তার মেয়ে কখনই এমন কোনো অপ্রীতিকর কাজ করবে না যেটা তার (সানাইয়ের) সম্মানে আঘাত লাগে ।“  তবুও কুহেলি বাবাকে জানিয়ে রেখেছিল, “শীতল তার সঙ্গে মিশছে । তবে সেটা নিছক বন্ধু পর্যায়ে !” তখন বাবা বলেছিল, “তুমি সবার সঙ্গে মিশবে । সেক্ষেত্রে বাধা নেই । কিন্তু তুমি বড় হয়েছো । তাই ভাবতে হবে, মেলামেশাটা তোমার জীবনে যেনো কোনোরকম অশান্তি না নিয়ে আসে ?” মাথা নেড়ে কুহেলি বাবাকে আশ্বস্ত করে বলেছিল, “বেগতিক বুঝলে আমি তোমাকে প্রথম জানাবো ।“
     পান্তা মাসি বাড়িতে ঢোকার পর থেকে বাবার মনের পরিবর্তন হতে শুরু করে । প্রথমদিকে পান্তা মাসির আচার আচরণ ঠিক ছিল । যতো দিন যেতে লাগলো, পান্তা মাসি নিজস্ব সংসারের জন্য বেঁকে বসলো । তখন দুই নৌকায় পা দিয়ে চলা বাবার পক্ষে খুব কষ্ট হচ্ছিলো । সেটা কথাবার্তায় বোঝা যেতো । তবুও মেয়ের মাথায় হাত দিয়ে সর্বদা বলতো, “বাবা, তোমাকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে । আমি তোমাকে নিজের পায়ে দাঁড়ানো দেখতে চাই ।“   কিন্তু সেই বাবা কুহেলিকে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর দৃশ্য দেখে যেতে পারলো না । তবুও এই হতাশার মধ্যেও কুহেলি স্থির প্রতিজ্ঞ, “সে বাবার কথা রাখবেই ।“  যেভাবে হোক  নিজের পায়ে দাঁড়াবে  । পড়াশুনা চালিয়ে যাবে । তাতে যতো ঝড়ঝঞ্ঝাট আসুক, সে তার টার্গেট পূরণে স্থির প্রতিজ্ঞ  । 
      এক সপ্তাহ বাদে স্কুলে গেলো কুহেলি ।  ইতিমধ্যে স্কুলে চাউর হয়ে গেছে, কুহেলির বাবা কোনো এক বিধবা মহিলাকে নিয়ে পালিয়েছে ।  স্কুলে ছেলে-মেয়ে সকলের অবান্তর প্রশ্নবাণে কুহেলির কান ঝালাপালা । লজ্জার মাথা খেয়ে তার কাছের মেয়ে বন্ধুরা আরও একটু এগিয়ে কুহেলিকে জিজ্ঞাসা করলো, “তোর নতুন মা-টা কেমন ?  তারা সুখ আহ্লাদের জন্য তোকে ফেলে  পালিয়ে গেলো ? তুই বাড়িতে এখন একা থাকবি কীভাবে ?”
    স্কুলে বন্ধু-বান্ধবীদের অপ্রীতিকর কথার হাত থেকে রেহাই পেতে  ক্লাস না করে বাড়ি ফিরে এলো  কুহেলি । ফাঁকা বাড়িতে কুহেলি একা ।  কিচ্ছু ভাল লাগছে না । সকালে সেদ্ধ ভাত রান্না করে খেয়ে গেছে । এখন ঘরে খাওয়ার কিছু নেই । বাড়ি ফেরার পর তার খিদে চূড়ান্ত । শেষে বাধ্য হয়ে দুটি রুটি বানিয়ে কাঁচা লঙ্কা দিয়ে খেয়ে নিলো । অন্য সময় হলে, বাবা ব্যতিব্যস্ত হয়ে উঠতো মেয়েকে খাওয়াবার জন্য । তাই বাবার কথা ভেবে কুহেলির মন খারাপ ! চোখে জল আসার মতো ।  স্কুল থেকে ফিরে এসে বাবার জন্য কুহেলির মন ছটফট  । মায়ের ফটোর সামনে গিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলতে লাগলো, “মা, তুমি কেন আমাদের ছেড়ে চলে গেলে । তুমি চলে না গেলে আজ আমাকে এই অন্ধকার জীবনে প্রবেশ করতে হতো না ।“  
       হন্তদন্ত হয়ে কানাই কাকা ছুটে এসে বলল, তোদের জমিতে পাশের গ্রামের নলিনী চাষ করছে । আমি গিয়ে জিজ্ঞাসা করতেই নলিনী বলল, “তারা তোদের সমস্ত চাষের জমি কিনে নিয়েছে ।“  জমি বিক্রির ব্যাপারে তুই কী কিছু জানিস !  
     না কাকা । আমি কিচ্ছু জানি না । আমাদের কতো বিঘা চাষের জমি,  সেটাও আমি জানি না । সবটাই বাবা দেখতো । কখন জমি বিক্রি হলো বা কারা জমি কিনলো,   এসব ব্যাপারে আমার কিচ্ছু জানা নেই ।  
    তাহলে তোর সংসার চলবে কী করে ?  
    চোখের জল ফেলে কুহেলি কাকাকে বলল, “আমি কিচ্ছু জানি না কাকা ।“
     দাদা, এইভাবে জমি বিক্রি করে বাড়ি ছেড়ে নিরূদ্দেশ হবে আমরা কেউ  কিচ্ছু টের পাইনি । মেয়েটা বড় হয়েছে সেটা জেনেও তার বোঝা উচিত ছিল মেয়ের বাঁচার  জন্য একটা ব্যবস্থা করে যাওয়া । মেয়েটা এখন কীভাবে বাঁচবে ? কানাই কাকা মাথা চুলকিয়ে বলল,   “ সেটাই এখন বড়  চিন্তা !”  
     কাকা,  তুমি উতলা হবে না । যেভাবে হোক বাঁচতে পারব । নতুবা আমাকে উপায়ের পথ ভাবতে হবে ? একটা ব্যবস্থা ঠিক হয়ে যাবে ।
       “তা হয় না মা ।“  কানাই কাকা অনেকটা নরম । কুহেলির জন্য চিন্তিত !  তাই আবার বলল, “একটা কথা বলবো মা । তুই বরং তোর মামা বাড়ি চলে যা । নতুবা এখানে থাকা তোর প্রচণ্ড কষ্ট হবে । আমি কাকা হয়ে সেটা দেখতে পারবো না । তোর কাকীমাকে তুই চিনিস । সুতরাং তোর একা থাকাটাও আমার কাছে মানসিক চাপের হয়ে উঠবে । মামা বাড়ি গেলে তুই পড়াশুনাও  চালিয়ে যেতে পারবি । 
      তুমি ভেবো না কাকা । আরও কয়েকটা দিন যাক । আমার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা হয়ে যাক । তারপর চিন্তা করব, মামা বাড়ি যাব কিনা ?  
    কুহেলির কথা শুনে কানাই কাকা ফ্যাল ফ্যাল করে তার দিকে তাকিয়ে রইল । কানাই কাকা চোখের জল মুছতে মুছতে কুহেলির বাড়ি ত্যাগ করলো ।
   বিকেলে হঠাৎ শীতল এসে হাজির । কুহেলির সব কথা শুনেছে । বাড়িতে ফেরার পর থেকে বাড়ির সকলে মিলে শীতলকে চেপে ধরেছে, তুই যার সঙ্গে মেলামেশা করিস্‌ তার বাবা একটা বিধবা মহিলাকে নিয়ে গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছে । তোর আবার সানাইয়ের মেয়ের সঙ্গে মেলামেশা  । এটা কতটা লজ্জার, সেটা তুই বুঝতে পারবি না । বাড়ির এই ধরনের কথায় আমি প্রচণ্ড বিরক্ত । কেউ একটিবারের জন্য বলল না, কুহেলি কেমন আছে  বা এখন কোথায় আছে  ?   তাই বাড়ি ফিরে  ছুটে এলাম তোমার সঙ্গে দেখা করতে । আরও একটা খবর জানিয়ে রাখি, আমি কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে ভর্তি হয়েছি । সুতরাং এখন থেকে কলকাতাতে থাকতে হবে । সেইজন্য তোমাকে নিয়ে আমার দুশ্চিন্তা বেশী । জানি না, কীভাবে তোমাকে সহযোগিতা করতে পারবো  ? এই মুহূর্তে তোমার খুব কাছাকাছি  থাকাটা আমার ভীষণ দরকার ? 
   আমাকে নিয়ে একটুও ভাবতে হবে না  শীতলদা  । আমি যেভাবে হোক বাঁচবো  ! কতো মানুষ অসহায় ! তারাও তো পৃথিবীতে বেঁচে আছে । সুতরাং আমিও তাদের মতো বেঁচে থাকতে পারবো  । তুমি এক্টুও চিন্তা করবে না । 
     চোখ বন্ধ করে তোমার ডান হাতটা এগিয়ে দাও  ?
     চোখ বন্ধ করে কেন ?
     মুখে বলা যাবে না ।
     চোখ বন্ধ করে কুহেলি ডান হাত এগিয়ে দিলো  । এবার শীতল পকেট থেকে একশ টাকা নোটের একটা বাণ্ডিল তার হাতে দিয়ে বলল, “এটা রেখে দাও । কাজে লাগবে । এখন থেকে টাকার দরকার হলে নির্দ্বিধায় বান্দাকে বলবে । আমি যেভাবে হোক তোমার হাতে টাকা পৌঁছে দেবো । এটা আমার নিজস্ব সিদ্ধান্ত !” 
     কিন্তু কুহেলি কিছুতেই  টাকা নেবে না  । শীতলের মুখের উপর  কুহেলির একটাই কথা, “আমি টাকা নিতে পারবো না । ছোটবেলা থেকে বাবা আমাকে একটা জিনিস শিখিয়েছে, “নিজের পায়ে দাঁড়াতে !” সেই ক্ষেত্রে কারও কাছ থেকে টাকা নিয়ে আমি বাঁচতে পারবো  না । তুমি আমাকে ভুল বুঝবে  না । আমি তোমার কাছ থেকে কিছুতেই টাকা নেওয়া সম্ভব না । এটা আমার ব্যক্তিসত্তা অর্থাৎ আমার নীতিতে বাধবে । তুমি প্লীজ জোর করো না ।  
    রেগে গেলো শীতল । তুমি এখন কীভাবে  চলবে ? নিশ্চয় হাতে কোনো টাকা পয়সা নেই । তোমাকে আবার আমার অনুরোধ, প্লীজ টাকাটা রাখো । ভবিষ্যতে কাজে লাগবে । 
      জোড় হাত করে কুহেলি বলল, “শীতলদা, আর অনুরোধ করবে না । তোমার কাছে  এটা আমার অনুরোধ ।“ 
                                                    ( চলবে )
sobkhabaradmin

Website:

Related Story
Featured দেশ সাহিত্য
আজ ১৯ মে, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।।।।
sobkhabaradmin May 19, 2025
Featured সাহিত্য
ত্রিগুণ – “সত্ত্ব, তমঃ ও রজঃ” – একটি বিশেষ পর্যালোচনা।।।
sobkhabaradmin May 19, 2025
Featured দক্ষিণ বাংলা দেশ বিবিধ রাজ্য সাহিত্য
সব্যসাচী লেখক সৌরীন্দ্রমোহন মুখোপাধ্যায় এর প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি।।।।
sobkhabaradmin May 19, 2025
Featured দেশ বিবিধ সাহিত্য
১৯শে মে বাংলা ভাষা অন্দোলন – একটি পর্যালোচনা : দিলীপ রায় ।
sobkhabaradmin May 19, 2025
Featured দেশ বিনোদন ভ্রমণ সাহিত্য
মানুষের জীবনে “ভ্রমণ”এর প্রাসঙ্গিকতা : দিলীপ রায়।
sobkhabaradmin May 19, 2025
Featured উত্তর বাংলা জলপাইগুড়ি দেশ বিবিধ রাজ্য
আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগেই লুপ ব্রিজে ফাটল!
sobkhabaradmin May 18, 2025
Featured উত্তর বাংলা দক্ষিণ দিনাজপুর দেশ বিনোদন বিবিধ রাজ্য লাইফস্টাইল
রবিবার দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বংশীহারীর বেস আর-নুর মডেল স্কুলের গার্লস ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হলো উত্তরবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা কর্মশালা।
sobkhabaradmin May 18, 2025
Featured উত্তর বাংলা দক্ষিণ দিনাজপুর দেশ বিবিধ রাজ্য লাইফস্টাইল
গোপন সূত্রের খবরে বিশেষ অভিযান চালিয়ে ব্রাউন সুগার উদ্ধার সহ ২ জনকে গ্রেফতার করলো গঙ্গারামপুর থানার পুলিশ।
sobkhabaradmin May 18, 2025
Featured উত্তর বাংলা ওপার বাংলা দক্ষিণ দিনাজপুর দেশ বিবিধ রাজ্য লাইফস্টাইল
হিলি স্থলবন্দরে কেন্দ্রীয় নিষেধাজ্ঞায় ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্যে প্রভাব।
sobkhabaradmin May 18, 2025
Featured উত্তর বাংলা দক্ষিণ দিনাজপুর দেশ বিবিধ রাজ্য লাইফস্টাইল
রবিবার দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাটে পালিত হলো আন্তর্জাতিক মিউজিয়াম দিবস।
sobkhabaradmin May 18, 2025

Leave a Reply
Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

YOU MAY HAVE MISSED
Featured দেশ সাহিত্য
আজ ১৯ মে, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।।।।
sobkhabaradmin May 19, 2025
Featured সাহিত্য
ত্রিগুণ – “সত্ত্ব, তমঃ ও রজঃ” – একটি বিশেষ পর্যালোচনা।।।
sobkhabaradmin May 19, 2025
Featured দক্ষিণ বাংলা দেশ বিবিধ রাজ্য সাহিত্য
সব্যসাচী লেখক সৌরীন্দ্রমোহন মুখোপাধ্যায় এর প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি।।।।
sobkhabaradmin May 19, 2025
Featured দেশ বিবিধ সাহিত্য
১৯শে মে বাংলা ভাষা অন্দোলন – একটি পর্যালোচনা : দিলীপ রায় ।
sobkhabaradmin May 19, 2025

Copyright © 2025 | Powered by WordPress | Newsio by ThemeArile