প্রতিষ্ঠার দিন প্রবল বৃষ্টির জন্যই,বাবার নামকরণ করা হয় শ্রী শ্রী জল্লেশ্বর জীউ।

আবদুল হাই, বাঁকুড়াঃ বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর ব্লকের ভড়া গ্রামের শ্রী শ্রী ৺জল্লেশ্বর জিউয়ের গাজন উৎসব টি অনুষ্ঠিত হয় জৈষ্ঠ মাসে বাগ্দী ষোল আনার ঠিক করা দিন অনুযায়ী। যা আবাল গাজন বা ছেলে গাজন রূপেও পরিচিত। ভড়া গ্রামে ৩২ টি শিব মন্দির থাকলেও চৈত্র সংক্রান্তিতে বা পরে কোন গাজন অনুষ্ঠিত হয় না ।গতকাল শুক্রবার ছিল রাতগাজন আজ শনিবার দিন গাজন।বর্তমানে শ্রী শ্রী জল্লেশ্বর জীবের আবাল গাজন টি জৈষ্ঠ্য মাসে উন্মাদনার সঙ্গে মহাসমারোহে, মহা ধুম ধাম করে অনুষ্ঠিত হয়। রাত গাজনের দিন দুপুর বেলা যখন বাবাকে আহ্বান জানানো হয় তখন পুরানো প্রথা অনুযায়ী টিন ও বাজানো হয়ে থাকে। স্থানীয় সানবাঁধা পুকুরের পাড় থেকে বাগ্দী ষোলআনার সকলে মিলে গাঁইতি, শাবল, কোদাল ইত্যাদি সঙ্গে নিয়ে মহানন্দে খাদু বাগদী ,বাবাকে মাথায় নিয়ে ও চাকতিগুলি বাঁশের মধ্যে পরিয়ে পঁচাই বাগ্দী, শশী বাগ্দী, কানাই বাগ্দী প্রমুখরা কযেদিন ঠাকুরকে আনা হয়। সেদিন আকাশ ভাঙ্গা বৃষ্টি হয়। দিনের বেলা দেখে যেন রাত্রিবেলা মনে হচ্ছিল, এতো বৃষ্টি যে ঢাক বাজানো সম্ভব হয়নি, ছোট ছেলেরা টিন বাজিয়ে বাবাকে নিয়ে এলো। আর প্রতিষ্ঠার দিন এত বৃষ্টির জন্যই বাবার নামকরণ করা হয় শ্রী শ্রী ৺জল্লেশ্বর জীউ। স্থানীয় বাসিন্দা পরেশনাথ সামন্ত জানান,”রাতগাজনে দিন মূল মন্দির থেকে বিকেলে বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র সহযোগে শালপাট যায় গাজন তলার ঘাটে। ঘাটে শালপাট গুলি রেখে পূজার অর্চনা করা হয়। রাত্রিতে পুনরায় শালপাট গুলি ওই একইভাবে মূল মন্দিরে ফিরে আসে পরে এবং তারপরে সকল ভক্তসন্ন্যাসীরা ফলমুলআহারাধিসহ জলগ্রহণ করেন। বহু জনসমাগম ঘটে দূরদূরান্ত থেকে লোকজন গাজন উপলক্ষে এখানে সমবেত হয়। রাত গাজনের প্রধান আকর্ষণ বানফোঁড়া এবং বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে তৎ সঙ্গে নাচ। বানফোঁড়া উৎসব নানান বাদ্যযন্ত্র সহকারে চলতে থাকে পরদিন সকাল পর্যন্ত। এরপর আসে দিন গাজন দিন গাজনের দিন বহু বাবার মূল মন্দিরে বহু ভক্তের সমাগম হয়। সারাদিনই চলতে থাকে বাবার পূজা অর্চনা। বিকেলে আবারও উৎসব এবং মেলা হনুমানতলা এলাকায় রাতগাজনের মত একই রকম মেলা বসে। উপবাসী ভক্তসন্ন্যাসীরা হনুমানতলা থেকে বাবার মূল মন্দির পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার পথ প্রণাম সেবা(ডান্ডিখাটা) খাটতে খাটতে আসে আর যিনি পাটভক্তা অর্থাৎ প্রধান সন্ন্যাসী তিনি গড়িয়ে গড়িয়ে বাবার মন্দির পর্যন্ত আসে। তবে সবই তো শ্রী শ্রী জল্লেশ্বর বাবার কৃপা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *