মনিরুল হক, কোচবিহার: বর্ষা নামতেই হু হু করে বাড়ছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা। দক্ষিণবঙ্গ থেকে উত্তরবঙ্গ,সর্বত্রই দেখা যাচ্ছে একই ছবি। বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও। তাতেই সিঁদুরে মেঘ দেখতে শুরু করেছে স্বাস্থ্য দফতর। পুর এলাকাগুলিতেও ডেঙ্গি প্রতিরোধ কর্মসূচিতে জোর দেওয়া হয়েছে। কোচবিহার পুরসভার উদ্যোগে প্রতিটি ওয়ার্ডে এক যোগে চলছে ডেঙ্গু প্রতিরোধ কর্মসূচি। বিভিন্ন ড্রেন ও জলাশয়গুলিতে ছাড়া হচ্ছে গাপ্পি মাছ। মশার লার্ভা দমনে এই মাছ বড় ভূমিকা রাখে। জন্মাবার সঙ্গে সঙ্গেই মশার লার্ভা খেয়ে ফেলে এই বিশেষ প্রজাতির মাছ। পাশাপাশি নিয়মিত ওয়ার্ডগুলিততে সাফাই কর্মসূচিও চলছে। স্বাস্থ্য কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে কেউ জ্বরে আক্রান্ত রয়েছেন কিনা তার খোঁজ রাখছেন। একইসঙ্গে শুরু হয়েছে সচেতনতামূলক প্রচারাভিযান।
জানা গেছে, কোচবিহার পৌরসভার ১,১৪.১৬ এই তিনটি ওয়ার্ডে এখনও পর্যন্ত তিনজন নাগরিক ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। যদিও তার আগ থেকেই ডেঙ্গু নিয়ে সচেতনতা মূলক কর্মসূচি নিয়েছে কোচবিহার পৌরসভা। সেই অনুযায়ী সোমবার কোচবিহার পৌরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষের উদ্যোগে পৌরসভার ২০টি ওয়ার্ডে ডেঙ্গুতে থেকে সাধারণ মানুষ ও নাগরিকদের বাঁচাতে ২০ টি ওয়ার্ডে ১ লক্ষ ২০ হাজার গাপ্পি মাছ ছাড়া হয় বলে জানা গিয়েছে পৌরসভা সূত্রে।
এদিন এবিষয়ে কোচবিহার পৌরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, কোচবিহার পৌরসভার ২০টি ওয়ার্ড রয়েছে। সেই ওয়ার্ডে এখনও পর্যন্ত ৩ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে। তারা বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। সুস্থ রয়েছে তারা। তবুও পৌরসভার ২০ টি ওয়ার্ডে সাধারণ নাগরিকদের ডেঙ্গুর হাত থেকে বাঁচাতে আমরা কোচবিহার পৌরসভার পক্ষ থেকে স্যানিটাইজেশন করা, স্প্রে করা এবং স্বাস্থ্য কর্মীরা প্রতিটি বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছে।এর পাশাপাশি ওয়ার্ড গুলির বিভিন্ন নালায় বা ড্রেনে মশার উপদ্রপ থেকে কমাতে এবং ডেঙ্গু জ্বরের হাত থেকে বাঁচাতে পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে ৬ হাজার করে গাপ্পি মাছ ছেড়ে দেওয়া হয়। আজ ২০ টি ওয়ার্ডে প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার গাপ্পী মাছ ছাড়া হলো। এর পাশাপাশি বিভিন্ন ওয়ার্ড বাসীদের কাছে অনুরোধ নিজে সচেতন থাকুন এবং পাশের বাড়ির লোকজনকে সুস্থ থাকতে সহযোগিতা করুন। কারণ আপনার বাড়ির নোংরা বা ড্রেন অপরিকারের কারণে পাশের বাড়ির লোকজন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হতে পারে। পৌর নাগরিকদের সেদিকে নজর দেওয়ার অনুরোধ করলেন কোচবিহার পৌরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ।
উল্লেখ্য, কোচবিহার পৌরসভা দীর্ঘদিন ধরে ডেঙ্গু নিয়ে নানা সচেতনামূলক কর্মসূচি নেওয়ার পরেও ডেঙ্গু আটকাতে পারে নি পৌরসভা। গত মাসের থেকে বর্তমান সময় ধরে কোচবিহার পৌরসভার ৩ টি ওয়ার্ডে ৩ জন নাগরিক ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। তাদের প্রত্যেকের বাড়িতে গিয়ে দেখা ও কথা বলেন চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। এবং তারা প্রত্যেকে এখনও হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সেই কারণে ডেঙ্গু ঠেকাতে পৌরসভার ২০ টি ওয়ার্ডে প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার গাপ্পি মাছ বিভিন্ন ড্রেন বা জলাশয়ে ছাড়া হয় বলে জানা গিয়েছে কোচবিহার পৌরসভা সূত্রে।
Leave a Reply