সৌম্যর সাফল্যে উচ্ছ্বসিত পুরো খাতড়া মহকুমার বাসিন্দারা।

আবদুল হাই, বাঁকুড়াঃ লাল মাটির জেলা বাঁকুড়া আর এই জেলাতে চলতে ফিরতে অনেক না জানা উপখ্যানের কথা উঠে আসছে। উঠে আসছে এই জেলার ভূমিপুত্র ভারতের চন্দ্র বিজয়ের অংশীদারদের নাম। দক্ষিণ বাঁকুড়ার মহকুমা শহর খাতড়া। খাতড়ার বাসিন্দা সৌম্য সেনগুপ্ত ভারতের সফল চন্দ্র অভিযানের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছেন। তাঁর পরিবার সূত্রে যেটা জানা গিয়েছে, সৌম্য বর্তমানে চন্ডিগড়ের সেমি কনডাক্টির ল্যাবরেটরীতে কর্মরত। সেমি কনডাক্টর ল্যাবরেটরির মূল কাজ হল, এই সংস্থা ইসরো কে সেমিকন্ডাক্টার যন্ত্রাংশ সরবরাহ করে।

সৌম্যর এই সাফল্যে উচ্ছ্বসিত পুরো খাতড়া মহকুমার বাসিন্দারা। ছোটবেলা থেকেই মেধাবী এই সৌম্য খাতড়ার কংসাবতী শিশু বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও দুর্গাপুর এ-জোন বয়েজ হাই স্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর স্নাতক ডিগ্রি শেষ করেছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে, পরবর্তীতে ধানবাদের ‘ইন্ডিয়ান স্কুল অফ মাইনস’ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের পরেই গবেষণার কাজ শেষ করেন ‘আই আইটি’ খড়্গপুর থেকে,পরে পোস্ট ডক্টরেট করতে সূদর আমেরিকাতেও পাড়ি দেন তিনি। তবে তাঁর ক্যান্সার আক্রান্ত বাবার আকস্মিক মৃত্যুতে তার বিদেশের ডিগ্রি তিনি শেষ করতে পারেননি।পরবর্তীতে ভারতে ফিরে ২০১৬ সালে যোগদান করেন চন্ডীগড়ে ভারতবর্ষের কেন্দ্রীয় সরকারের আওতায় থাকা ওই সংস্থাতে। এখন সারা পৃথিবীর পাশাপাশি ভারতবর্ষের বিজ্ঞানীদের একটাই চিন্তা ‘রোভার প্রজ্ঞান’ চাঁদের মাটি থেকে কি তথ্য সংগ্রহ করতে পারে। বাঁকুড়ার খাতড়ার এই সৌম্য চন্দ্রযানের জন্য ‘অনবোর্ড প্রসেসর’ বা রকেটে থাকা কম্পিউটার চিপ তৈরি করেছেন। এই চিপগুলির মূল কাজ হল রকেটের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করা। চন্দ্রজান ২ এবং চন্দ্রযান ৩ এই দুই মিশনেই জড়িয়ে রয়েছে সৌম্যর পরিশ্রম।বর্তমানে সৌম্য তার মা,স্ত্রী ও কন্যাকে নিয়ে চন্ডিগড়েই থাকেন।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, ছোটবেলা থেকেই শান্ত প্রকৃতির ছেলে তাদের সৌম্য তার এই সাফল্যে তাদের পরিবার খুবই উচ্ছ্বসিত।

সৌমর স্কুল জীবনের সহপাঠীরা জানান সৌম্য খুব সহজ সরল ছেলে,বন্ধুদের প্রতি সেই ছোটবেলার মতোই প্রীতি ও ভালোবাসা বজায় আছে। ছোটবেলার থেকে তার ওই মেধা দেখে তারা আশাবাদী ছিলেন ও কোনো একটা ভালো জায়গায় পৌঁছবে সে।

সৌম্যর শিক্ষাগুরুরা জানান ‘আজ গর্বে তাদের বুকটা ফুলে যাচ্ছে নিজেদের হাতে তৈরি করা ছাত্রের এই ধরনের সাফল্যে’। সৌম্য বন্ধু এবং শিক্ষাগুরুর পাশাপাশি বেজায় খুশি তাঁর স্কুলের কচিকাঁচা থেকে শুরু করে বর্তমান প্রধান শিক্ষক সকলেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *