নিজে জন্ডিসের রোগী, মারা গেছেন স্বামী, তিন নাবালক সন্তান নিয়ে অর্ধাহারে দিন যাপন পরিবারটির।

আবদুল হাই, বাঁকুড়াঃ- এই মনুষ্য সমাজে হাজারো সমস্যার মধ্যে দিন যাপন কোটি কোটি পরিবারের, সার্চলাইট হয়তো সবের উপর পড়ে না, আবার খবরের শিরোনামেও আসে না সব খবর, আর যে সমস্ত খবর শিরোনামে আসে সেগুলির মধ্যে এমন কিছু খবর থাকে যেগুলো ভীষণ বেদনাদায়ক এবং হৃদয়বিদায়ক আর এরকমই একটি খবরের উপরেই সাংবাদিকের ক্যামেরা হয়েছে অন। ঘটনাটি বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর ব্লকের ক্ষুদিরাম পল্লী সিনহাটি কলোনির। জন্ডিস রোগে আক্রান্ত লক্ষী রুইদাস, স্বামী আট মাস আগেই ইহলোক ত্যাগ করে চলে গেছেন পরলোকে। মৃত্যু কালে তিনি রেখে গেছেন তিন নাবালক সন্তান এবং অসহায় স্ত্রীকে একটি ছোট্ট ঘরে। এক চিলতে ঘরে কোন রকমে গাদাগাদি করে থাকে তিন সন্তানকে নিয়ে অসহায় মা। সংসারের আয় বলতে রেশনের চাল আর লক্ষী ভান্ডারে কয়েকশ টাকা। হতদরিদ্র, দীর্ঘদিন যাবত রোগগ্রস্তা লক্ষ্মী রুইদাস তিন সন্তানকে নিয়ে কোনরকমে দিন কাটাই। সামান্য কয়েক কিলো চাল আর কয়েকশো টাকা দিয়ে চলে না সংসার তাই অধিকাংশ দিন পায়না খেতে পেট ভরে, এই অবস্থায় বারে বারে রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি থাকতে হয় হাসপাতালে। বাড়িতে নাবালক তিন সন্তানের সব দিন জোটে না খাবার, অর্থাভাবে হয়েছে পড়াশোনা বন্ধ। ছোট্ট ঝুপরি ঘরে দারিদ্র্যের ছাপ সব জায়গাতেই পষ্ট, বিদ্যুৎ হীন ঘর ঠিক যেন জীবনের মতই অন্ধকার। তাদের কাছে হাসি-খুশি, আনন্দ এইসব যেন আভিধানিক শক্ত শক্ত ভাষা, বোঝেনা ওই নাবালকেরা, তারা শুধু চায় কবে মা সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে তাদের পাশে থাকবে সর্বসময়, আবদারে মায়ের গলা জড়িয়ে ধরে বলবে, – মা খেতে তো দাও পেট ভরে, খিদের জ্বালা আর যে পারিনা সহ্য করতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *