বিনিয়োগের অভাবে ধুঁকছে মালদা জেলার আইটি পার্ক।

নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা—– রাজ্য সরকারের উদ্যোগে গত পাঁচ বছর আগে ২০১৮ সালের ১৩ই আগস্ট রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে ভার্চুয়ালি ভাবে মালদা জেলার একমাত্র ওয়েবেল আইটি পার্ক পথ চলা শুরু করে। তবে জেলার শিক্ষিত যুব সমাজ স্বপ্ন দেখেছিল এবার হয়তো কর্মসংস্থানের সমস্যা অনেকটা সমাধান হবে। হয়তো জেলায় কাজ করার সুযোগ পাওয়া যাবে। কিন্তু মাঝে অতিক্রান্ত দীর্ঘ পাঁচ পাঁচটি বছর। রয়েছে পাঁচ তলা বিশিষ্ট ঝা চকচকে বিল্ডিং কিন্তু প্রশ্ন? তাহলে কর্মসংস্থান কোথায়। রয়েছে অত্যাধুনিক পরিকাঠামো। রয়েছে নির্দিষ্ট প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র, রয়েছে নাইট শিফটে কাজ করার সুযোগ, রয়েছে ২৪ ঘন্টা পরিষেবা। কিন্তু যে উদ্দেশ্যে আইটি পার্ক খোলা হয়েছিল এখনো তা সেই উদ্দেশ্য সফল হয়নি। যার কারণ বিনিয়োগের অভাবে ধুঁকছে মালদা জেলার আইটি পার্ক।
জানা গিয়েছে, মালদা জেলার পুরাতন মালদা ব্লকের নলডুবি এলাকার ৩৪ নং জাতীয় সড়কের ধারে অবস্থিত ওয়েবেল আইটি পার্কে। এখানে একই ছাদের তলায় থাকতে পারবে ৪০টি কোম্পানি। কিন্তু বর্তমানে রয়েছে মাত্র ২০ টি কোম্পানি। প্রত্যেকটি ছোট ছোট কোম্পানি। ২০ টি কোম্পানিতে কর্মরত রয়েছে মোট ১৫০ জন কর্মী। ফলতো স্বাভাবিকভাবেই জেলায় কর্মসংস্থানের বেহাল দশার হাল ফেরাতে পারেনি আইটি পার্ক। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে কেন মালদার আইটি পার্কে বড় কোন কোম্পানি আসছে না। কেন বড় কোন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা বিনিয়োগ করছে না। রাজ্য সরকার এবং জেলা প্রশাসনের উদ্যোগ নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। রাজ্য সরকারের এই ব্যর্থতা নিয়ে শুরু হয়েছে শাসক বিরোধীদের মধ্যে রাজনৈতিক চাপানৌউত্তর।

এ বিষয়ে মালদা বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক গোপালচন্দ্র সাহা রাজ্য সরকারের ব্যর্থতা কে দায় চেপেছেন। তিনি জানান, ঝাঁ চকচকে বিল্ডিং রয়েছে তবে এখনো পর্যন্ত জেলায় কর্মসংস্থান নেই, যার কারণে বেকার যুবক-যুবতীরা কর্মসংস্থানের সন্ধানে বাইরে যাচ্ছে, এটা পুরোপুরি রাজ্য সরকারের ব্যর্থতা। শুধু ঝাঁ চকচকে বিল্ডিং তৈরি করে রাখলে হবে না তার জন্য উদ্যোগ প্রয়োজন। আমি পুরোপুরি রাজ্য সরকারের ব্যর্থতা মনে করছি।

যদিও এই বিষয়ে পাল্টা বিজেপির কটাক্ষকে মানতে নারাজ মালদা জেলা পরিষদের তৃণমূলের সহ-সভাধিপতি এটিএম রফিকুল হোসেন। তিনি জানান, আইটি পার্কে যাতে সঠিকভাবে কর্মসংস্থান হয় এর জন্য রাজ্য এবং জেলা প্রশাসন যথেষ্ট তৎপর রয়েছে। আগামী দিনে বড় বড় কোম্পানি নিয়ে আসার চেষ্টা প্রশাসনিক দিক থেকে করা হচ্ছে এবং জেলার কর্মসংস্থানের দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে আইটি পার্কের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইনচার্জ জয়রাজ ত্রিবেদী জানান, শুরুর প্রথম থেকে বিনিয়োগ ভালোই ছিল তবে মাঝখানে লক-ডাউনের জেরে বড় বড় কোম্পানি ছেড়ে চলে গেছে। আমরা চাইছি নতুন নতুন কোম্পানি আসুক এবং বিনিয়োগ করুক। এমনিতে আইটি পার্কের দুটি সমস্যা রয়েছে। পাশে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক গেছে অথচ বাস স্টপেজের কোন ব্যবস্থা নেই যার কারণে সমস্যায় পড়তে হয় বিভিন্ন কর্মীদের। তাছাড়াও উচ্চ বাতি স্তম্ভের ব্যবস্থা নেই সন্ধ্যা হলে, গোটা এলাকা চত্বর অন্ধকার ছন্ন হয়ে পড়ে আমরা প্রশাসনের কাছে আর্জি রাখবো এই দুটি সমস্যা যেন সমাধান করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *