নিজস্ব সংবাদদাতা, বালুরঘাট : দক্ষিন দিনাজপুর জেলার তপনের ভীকাহারে রয়েছে জাগ্রত মা মন্দির বাসিনী মন্দির।লোকশ্রুতিতে এলাকার লোকজন বামাকালী বলে ডাকে। দীপান্বিতা অমাবস্যায় মায়ের কাছে পুজো দিতে অসংখ্য ভক্তের ভিড় জমে এই মন্দিরে।
তপন থানার ভিকাহারে প্রায় তিনশো বছরেরও বেশি প্রাচীন এই মন্দির বাসিনী দেবীর মন্দির। জনশ্রুতি এক তান্ত্রিক এখানে তন্ত্র চর্চা করতেন।জনশ্রুতি তিনি সিদ্ধি লাভের জন্য একটি মেয়েকে মন্দিরের বেদীর জায়গায় গর্ত করে সমাহিত করেন। আবার পুরনো বাসিন্দাদের দাবি কোন মেয়ে নয় খোদ তান্ত্রিক কেই এই খানে সমাহিত করা হয়।তার উপরেই গড়ে ওঠে এই মন্দির। শুধু এই মন্দির নয় এই মন্দিরকে ঘিরে গড়ে উঠেছিল দুর্গা মন্দির সহ অনান্য দেবদেবীর মন্দির।যদিও আজ আর সে সব মন্দিরের ধ্বংসস্তুপের দু একটি ইটের ভাংগাচোড়া দেওয়ালের চিনহ ছাড়া আর কিছুই খুজে পাওয়া যায় না।তবে স্থানিও মানুষজন থেকে দুরদুরান্ত থেকে আসা ভক্তদের বিশ্বাসে ও ভক্তিতে একটুও চিড় ধরাতে পারে নি।লোকশ্রুতি গভীর রাতে মন্দির চত্বর থেকে ধূপ, ফুলের গন্ধ পাওয়া যায়। বর্তমানে অমাবস্যার কালীপুজোর দিন মাটির কালীমূর্তি পূজিত হয়। কিন্তু প্রথা মেনে এই বামা কালীর গায়ের রং ও চক্ষুদান হয় কালীপুজোর দিন এবং রাতেই মায়ের মূর্তি গড়া সম্পূর্ণ করে প্রতিমা স্থানিও মৃৎশিল্পির কারখানা থেকে কাঁধে চাপিয়ে মূল মন্দিরে নিয়ে আসা হয় বলে জানান স্থানিও বাসিন্দারা।৩০০ বছর ধরে চলা যে রীতির আজও কোনও পরিবর্তন হয়নি।
সেই ভক্তির আবেগকে প্রাধান্য রেখে প্রতি বছরই তপনের ভিকাহারের মন্দির বাসিনী তথা বামা কালীপুজোকে কেন্দ্র করে ভক্তদের উন্মাদনা থাকে তুঙ্গে। এবছরও তার ব্যতিক্রম হবে না বলেই আশা স্থানিওদের। গত দু-বছর অবশ্য করোনার জেরে ভক্তদের ভিড় কিছুটা কম ছিল। এবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় আবার সেই চেনা ভিড় দেখা যাবে বলে আশা স্থানিওদের। কেননা এলাকায় জাগ্রত মন্দির বাসিনী তথা বামাকালি মায়ের কাছে ভক্তরা যা মানসা করেন, মা তাদের মনসকামনা পুরন করে বলে জনশ্রুতি। তাই তো জেলা তো বটেই জেলার বাইরের দুরদুরান্ত থেকে এই পুজোতে ভক্তরা এসে পুজো দেন। তাদের মানস পুরন হওয়ায় অনেক ভক্তজন মায়ের কাছে পাঠা বলি দেন।তাই আজও ভীকাহারের মন্দির বাসিনী তথা বামা কালীর মতো কয়েক শতাব্দী ধরে বহু পুজো সহজ সাধনার ধারা বেয়ে, তান্ত্রিক সাধনার পথ দিয়ে গোপন অবগুন্ঠনে, লোকশ্রুতি, ঐতিহ্য ও রহস্য নিয়ে আজও হয়ে চলেছে।
Leave a Reply