দঃ দিনাজপুর, নিজস্ব সংবাদদাতাঃ- দিল্লি গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর পা ধরুন বা হাত ধরুন লাভের লাভ কিছুই হবে না। চোরেরা ভেতরে ঢুকবেই, আগামী ২০ তারিখ দিল্লিতে মুখ্যমন্ত্রীর রাজ্যের বকেয়া নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ করা নিয়ে আজ বালুরঘাটে সাংবাদিক বৈঠকে এই মন্তব্য করেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। পাশাপাশি তার দাবি প্রটোকল মেনে প্রধানমন্ত্রী সব সময় সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা সময় চাইলে সময় দিয়ে থাকেন। এর মধ্যে নতুনত্ব কিছু নেই। এছাড়াও ইন্ডি জোটকে তিনি কেনিয়া টিমের সাথে তুলনা করে বলেন দেশের মানুষ কেনিয়া টিমের কে কোচ হলো বা কে ক্যাপ্টেন হলো। সে নিয়ে যেমন কোন খোজ রাখে না। তারা খোজ রাখে ইন্ডিয়া টিমের কোচ ও ক্যাপ্টেন কে হলো তা নিয়ে। তেমনি এই জোটের কে উপস্থিত থাকল আর কেই বা ক্যাপ্টেন বা কোচ হলো সে নিয়ে কেউ মাথা ঘামায় না।পাশাপাশি তার দাবি দেশের মানুষ ঠিক করেই নিয়েছে তৃতীয় বারের জন্য নরেন্দ্র মোদীকেই প্রধানমন্ত্রী পদে দেখতে।
এর পাশাপাশি সংসদে গ্যাস কান্ড নিয়ে মুলচক্রীর সাথে এই রাজ্যের নাম জড়িয়ে যাওয়া নিয়ে তৃনমুলকে আক্রমন শানিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতির অভিযোগ এই রাজ্যে তৃনমুল কংগ্রেস মোদী বিরোধীতা করতে করতে যে ভাবে রাষ্ট্রের বিরোধীতায় নেমে গেছে তাতে দেশের সুরক্ষার ব্যাপারে বড় সড় প্রশ্ন উঠে গেছে। তার দাবি রাজ্যের মানুষের উচিত বিষয়টি গভীর ভাবে ভেবে দেখা তৃনমুল যে ভাবে রাষ্ট্রীয় সুরক্ষার নামে যে ভাবে ছেলে খেলা করছে তাতে যদি আগামী দিনে আপনার বাড়ির পাশে বোম ফাটে তখন কি আপনি ওই পাচশো টাকা পাওয়ার জন্য নিজের জীবন বাচাতে পারবেন। এব্যাপারে রাজ্যের মানুষকে ভেবে দেখারও কথা বলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি। তিনি এও দাবি করেন সংসদ কান্ডে জড়িতর তৃনমুলের নেতার সাথে ছবি পাওয়া গেছে, সে নিয়ে আমি নিজেও ট্যুইট করেছি এক্স হ্যান্ডেলে, যা নিয়ে সারা ভারতে সোরগোল পড়ে গেছে। এব্যাপারে তার দাবি সত্যটা সামনে আসা একান্ত প্রয়োজন।
এর পাশাপাশি গতকাল সুপ্রিম কোর্টে অভিষেকের মামলা খারিজ প্রসংগে বলেন বিচারপতির উপর মানসিক চাপ ও ভয় দেখাতে অভিষেক এই মামলা করেছিল নিজেকে বাচাতে। কিন্তু আমাদের বিচার ব্যবস্থ্যা এখন ও নির্ভিক। যতই সি আই ডি দিয়ে ভয় দেখানো হোক চোরে রা ধরা পড়বেই এবং তাদের জেলে যেতে হবেই। মাননীয়া বিচারপতি যে কাজটাই করছেন তা দেখে ভয় পেয়ে ওই নেতাই মামলা সরানো ও সংবাদ মধ্যমে নিষেধাজ্ঞা জারি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিল এবং যথারীতি সুপ্রিম কোর্টা তা খারিজ করে দিয়েছে। চুরি করেছে যে তার খবর সংবাদ মধ্যমে বের হবে না তাই কি হয় ? এরপরেই তিনি যোগ করেন চুরি করলে জেলে যেতেই হবে।
এরপাশাপাশি গতকাল সরকারি এম্ব্যুলেন্স না পেয়ে টাকার অভাবে বন্ধ থাকা চাবাগানের এক চা শ্রমিকের মৃত্যু নিয়ে সুকান্ত মুখ্যমন্ত্রীর উত্তরবংগের পাহাড়ে এসে চা পাতা তোলাকে কটাক্ষ করে বলেন উনি এখানে চাপাতা তোলার কায়দার ছবি তুলতে আসেন। চা শ্রমিকদের কল্যানের জন্য নয়।তার আরো অভিযোগ এর আগে তিনি কি একটা সুন্দরী প্রকল্প চালু করেছিল সেটা ফ্লপ হয়ে গেছে। এবার তাই ভোটের আগে ভোট কিনতে নতুন লালিপপের টোপ চা শ্রমিকদের সামনে ঝুলিয়ে গেছেন। কাজের কাজ যে কিছু যে হয় নি। তা গতকালের এই চা শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনা ফের চোখে আংগুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। সে জন্যই গতবার ও খালি হাতে উত্তরবংগ থেকে তৃনমুলনেত্রীকে ফিরতে হয়েছে এবারও খালি হাতেই ফিরতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
অপরদিকে এস এস কে এম ও প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী বালুর ও কালিঘাটের কাকু সুজয় ভদ্রের কেবিনে থাকা নিয়ে ক্ষোভ ব্যাক্ত করে সুকান্ত বলেন এর আগে এস এস কে এম এসে একটি শিশু গুরুতর অসুস্থ থাকা সত্বেও শয্যা মেলেনি অথচ এই সব চোরেরা বহাল তবিয়তে জেলের মেঝেতে শুয়ে থাকার বদলে এখানে আরামে দিন কাটাচ্ছে।তার দাবি অবিলম্বে এদের চুলের মুঠি ধরে জেলে নিয়ে যাওয়া উচিত। যাতে সাধারন রোগীরা চিকিৎসা র জন্য শয্যা পায়। তিনি এস এস কে এম হাসপাতাল কর্তিপক্ষের ও এই নিয়ে কড়া সমালোচনা করেন এভাবে চোরেদের সেলটার দিয়ে রাখার জন্য।
এর পাশাপাশি গত বুধবার ধূপগুড়িতে এক আদিবাসি মহিলার গনধর্ষনের ঘটনার নিন্দা করে রাজ্য বিজেপির সভাপতি বলেন এই রাজ্যে নারীদের সুরক্ষা নেই তা নিয়ে আমরা বার বার অভিযোগ জানিয়েছি।ধূপগুড়ির ঘটনা তা ফের একবার প্রমান করল। অথচ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী একজন মহিলা। এটাই লজ্জার।
অন্যদিকে আগামী ২৪ ডিসেম্বর বিগ্রেডে গীতা পাঠের আসরে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিত থাকা নিয়ে বলতে গিয়ে তৃনমুল যে এই গীতা পাঠেও ভয় পাচ্ছে তার প্রমান তৃনমুল নেতা কল্যান ব্যানার্জীর হঠাৎ করে গীতা পাঠ। রাজ্য বিজেপির সভাপতির দাবি গীতা পাঠের যে অনুষ্ঠান তার সাথে বিজেপি বা কোন রাজনৈতিক দলের যোগ নেই, এখানে রাজ্যের সব সাংসদ ও বিধায়ক থেকে মুখ্যমন্ত্রীকেও তারা আমন্ত্রন জানিয়েছেন। যারা আসবেন তারা আসবেন, বাধা দিলে যেখানে বাধাপ্রাপ্ত হবেন সেখানেই তারা বসে পড়ে গীতা পাঠ করবেন বলে তিনি জানান।
অপরদিকে দুয়ারে সতকারে লক্ষীর ভান্ডারে মহিলাদের ভীড় প্রসংগে বলতে গিয়ে বলেন, ভোটের আগে গাজর ঝুলিয়ে ভোট আদায়ের চেষ্টা মাত্র।তিনি অভিযোগ জানিয়ে বলেন এর আগেও এরা দুবার দুয়ারে সরকারে গিয়ে ফর্ম ফিলাপ করেও কিছু পায় নি।তাই এবার ও আশায় ভীড় জমিয়েছে তারা। তার আরো দাবি এই লক্ষীর ভান্ডার নিয়ে রাজ্য সরকারের উচিত জনসমক্ষে একটা তালিকা প্রকাশ করা। তাতে তারা জানাক এখনও পর্যন্ত কত লোক এই সুবিধা পেয়েছে ও কত টাকা রাজ্য সরকার খরভ করেছে এই প্রকল্পে। তাহলেই আসল সত্যটা সামনে বেড়িয়ে যাবে, বলে তিনি দাবি করেন। তিনি আরো বলেন তার দল ও অন্নপুর্না ভান্ডার চালু করবেন পাশাপাশি বেকার সমস্যার সমাধান করবেন ক্ষমতায় এলে। তাই মানুষকে বলব লক্ষীর ভান্ডার থেকে টাকা নিয়ে এদের প্রত্যাখ্যান করুন রাজ্যের উন্নয়নের জন্য।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার আজ বালুরঘাটের একটি হোটেলে আয়োজিত ” বার্তালাপ ” অনুষ্ঠানে হাজির থেকে আরো দাবি করেন সম্প্রতি রেলমন্ত্রকের তরফ থেকে বালুরঘাট শিয়ালদার মধ্যে নতুন ট্রেন চালানোর ছাড়পত্র মিলেছে যদি প্রধানমন্ত্রী ২৪ ডিসেম্বর কলকাতায় আসেন তাহলে সম্ভবত সেদিন প্রধানমন্ত্রীর হাত দিয়েই এই আধুনিক কোচ দ্বারা চালিত নতুন ট্রেনটির উদ্বোধন হবে।তবে সবটাই নির্ভর করছে প্রধানমন্ত্রীর সফর সুচী নির্ধারনের উপরে বলে মন্তব্য করেন বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত।
Leave a Reply