বিষ্ণুপুর শহরের ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন রক্ষাকালী মন্দিরে দুঃসাহসিক চুরির ঘটনায় প্রবল চাঞ্চল্য ছড়াল শহরে।

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাঁকুড়াঃ- বিষ্ণুপুর শহরের ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন রক্ষাকালী মন্দিরে দুঃসাহসিক চুরির ঘটনায় প্রবল চাঞ্চল্য ছড়াল শহরে। শুক্রবার রাতে মন্দিরের সিসি ক্যামেরা ভেঙে প্রায় ২০ কেজি ওজনের প্রণামী বাক্স নিয়ে চম্পট দিল দুষ্কৃতিরা। ওই ঘটনায় শহরে পুলিশি নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বিষ্ণুপুরের মানুষের ভক্তি আর আবেগের স্থান এই রক্ষাকালী মায়ের মন্দির। জাগ্রত এক দেবী মন্দির বলে পরিচিত এই রক্ষাকালী দেবী। সেখানে কেউ চুরি করতে পারে বলে স্থানীয়রা বিশ্বাস করতে পারেন না। কিন্তু মানুষের সব বিশ্বাসকে ভুল প্রমাণিত করে ওই মন্দিরেই চুরির ঘটনায় মানুষের সেই বিশ্বাসে নাড়া দিতে শুরু করেছে। ঘটনার খবর পেয়ে শনিবার সকালে শহরের মধ্যস্থল রসিকগঞ্জ এলাকায় ওই মন্দিরে ছুটে যায়। লোহার মোটা রড দিয়ে ৫ ফুট উচ্চতার ওই প্রণামী বাক্স আটকানো থাকে। রাতে খোলা ওই মন্দিরে কেউ পাহারায় না থাকলেও সিভিক ভলেন্টিয়াররা সহ ২ জন নেপালী রাত পাহারাদার সেখানে টহল দিয়ে যায়। তাই এর আগে একবার চুরির চেষ্টা করা হলেও টহলরত পাহারাদারদের জন্য সেবার দুষ্কৃতিরা প্রণামী বাক্স নিয়ে যেতে পারেনি। কিন্তু এবার সেই টহলদারির ফাঁকেই এই চুরির ঘটনায় বিস্মিত মন্দির কমিটির সদস্যরা থেকে স্থানীয় মানুষ। চুরির ঘটনার কথায় মন্দির কমিটির কোষাধক্ষ্য শিবশংকর কর্মকার বলেন ‘আমরা ভাবতেও পারিনা এই রক্ষাকালী মায়ের মন্দিরে কেউ চুরি করতে পারে বলে। মন্দিরের নিরাপত্তার জন্য প্রচুর হ্যালোজেন লাইট লাগানো রয়েছে। রাতে সিভিক ভলেন্টিয়ার থেকে ২ জন নেপালি পাহারাদার টহল দিয়ে যায়। এর আগে একবার চুরির চেষ্টা করা হয়েছিল কিন্তু সিভিক ভলেন্টিয়ারদের নজরে পড়ায় দুষ্কৃতীরা ধরা পড়ে যায়। এখন দুষ্কৃতীরা এসে প্রথমেই সিসি ক্যামেরাটা ভেঙে দিয়েছিল। ক্যামেরা ভাঙ্গার আগে মুখ ঢাকা অবস্থায় দুষ্কৃতীদের মন্দিরে আসতে দেখা গেছে। পুলিশ সেই ফুটেজ নিয়ে গিয়েছে। পুলিশ আশ্বাস দিয়েছে ঘটনার তদন্ত করে দুষ্কৃতীদের ধরার চেষ্টা করা হবে বলে’। ওই মন্দিরের পুরোহিত শ্যামাপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় বলেন ‘মায়ের মন্দিরের সকালে পুজো হয়ে থাকে। বিকালে সন্ধ্যা আরতি হয়। এরপরেও রাত ১১-১২টা পর্যন্ত এলাকার মানুষ মন্দিরে বসে থাকেন। স্থানীয় মানুষ থেকে ভক্তরা মায়ের ওই প্রণামী বাক্সে প্রণামী দিয়ে থাকেন। মোটা লোহার প্রায় ২০ কেজি ওজনের ওই প্রণামী বাক্স লোহার রড দিয়ে আটকানো থাকে। তাই কিভাবে শহরের মধ্যস্থলে এই মন্দির থেকে অত বড় প্রণামী বাক্স দুষ্কৃতীরা নিয়ে গেল সেটাই বুঝতে পারছি না। এর আগে কোনদিন মায়ের মন্দিরে চুরির ঘটনা ঘটেনি’। পুলিশ জানিয়েছে, রক্ষা কালী মন্দিরে চুরির ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *