বালুরঘাট রেল স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া ও ভারতীয় রেলের তরফে তৈরি করা হচ্ছে সাইলো গোডাউন।

নিজস্ব সংবাদদাতা, বালুরঘাট, ১৭ ডিসেম্বর:- বালুরঘাট রেল স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া ও ভারতীয় রেলের তরফে তৈরি করা হচ্ছে সাইলো গোডাউন। যেখানে খাদ্যশস্য জলীয় বাষ্পমুক্ত অবস্থায় রাখা হবে। হিলি – বালুরঘাট রেল সম্প্রসারণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে বাংলাদেশে পণ্য রপ্তানিতে এই উদ্যোগ ফলদায়ী হবে বলে জানান বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার।

সাইলো গুদাম ঘরগুলি সাধারণত লম্বা, নলাকার কাঠামো আকারের হয়। যা উপরের দিক থেকে লোড করা হয়। নীচের দিক থেকে মাধ্যাকর্ষণ দ্বারা সাহায্যকারীর মাধ্যমে আনলোড হয়। এটি শস্যের একটি স্থিরবস্থা নিশ্চিত করে ও এক জায়গায় জমা হওয়ার কোনও সুযোগ নেই। ট্রেন থেকে লোড করার জন্য সুবিধাজনক এই অত্যাধুনিক গোডাউন। একটি মালিকানাধীন বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ভারতীয় রেল ও ফুট কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া এই উদ্যোগ নিয়েছে। লম্বা চিমনির মধ্যে দিয়ে মালগাড়ি সরাসরি গোডাউনের ভিতরে খাদ্যশস্য লোড করতে পারবে। স্বয়ংক্রিয় ভাবে আনলোডও হবে। জলীয় বাষ্পমোক্ত অবস্থায় থাকায় খাদ্যশস্য দীর্ঘদিন সাইলোগুলোতে মজুত রাখা যাবে। বালুরঘাট স্টেশন সংলগ্ন রেলের জমিতে ৪০ একর জায়গা জুড়ে এই গোডাউন তৈরি করা হচ্ছে। পর্যবেক্ষণ ও তদারকির জন্য হায়দ্রাবাদের একটি কোম্পানি ৩০ বছরের জন্য লিজ নিয়েছে। সেই সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, মোট তিনটি সাইলো তৈরি করা হচ্ছে। যেখানে মোট ৫০ হাজার মেট্রিক টন খাদ্যশস্য দীর্ঘ সময় ধরে মজুদ করা সম্ভব হবে। বালুরঘাটের ধাউল ও বোয়ালদের মৌজার রেল লাইনের পাশেই এই গোডাউন তৈরির প্রকল্প তৈরি হচ্ছে। বর্তমানে হিলি বালুরঘাট রেল সম্প্রসারণের জন্য জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে। এটি সম্পূর্ণ হলেই বাংলাদেশের খাদ্যশস্য রপ্তানি করা সহজ হবে। তার সঙ্গে বাংলাদেশ হয়ে আসাম, মেঘালয় সহ বিভিন্ন রাজ্যে খাদ্যশস্য পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে উপকৃত হবে এই প্রকল্প।

বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার জানান, ‘দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তিনদিকে বাংলাদেশ দিয়ে ঘেরা এই দুর্বলতাকে আমরা সবলতায় পরিণত করছি। হিলি বালুরঘাট রেল সম্প্রসারণ কাজ হয়ে গেলে শুধু বাংলাদেশে রপ্তানি নয়, বাংলাদেশ হয়ে তুরা পর্যন্ত খাদ্যশস্য নিয়ে যাওয়া যাবে। হিলি একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থলবন্দর হবে। রেল দপ্তরের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি পিপিপি মডেলে সাইলো গোডাউন তৈরি হচ্ছে। যা হয়ে গেলে প্রচুর পরিমাণ কর্মসংস্থান হবে ও এই জেলার অর্থনীতি আরও চাঙা হবে।’

বালুরঘাটের বঙ্গরত্ন প্রাপক সমাজসেবী তাপস চক্রবর্তী বলেন, ‘এই প্রান্তিক জেলায় উন্নত মানের গোডাউন তৈরি হলে কর্মসংস্থানের পাশাপাশি বেকার সমস্যা অনেকটা দূর হবে। তাছাড়াও এই খাদ্যশস্য মজুদ হলে শুধু বালুরঘাট বা জেলা নয়, পুরো উত্তর-পূর্ব ভারতের বাসিন্দারা উপকৃত হবেন।’

জয়েন্ট মুভমেন্ট কমিটি ফর হিলি – তুরা করিডরের আহবায়ক নবকুমার দাস জানান, ‘সাইলো গোডাউনে জলীয় বাষ্প থেকে বাঁচিয়ে খাদ্যশস্য দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে সংরক্ষণ করা যায়। ফলে এখান থেকে বাংলাদেশ হয়ে মাত্র ৮০ কিলোমিটার দূরে মেঘালয় অনায়াসে খাদ্য পণ্য পৌঁছে দেওয়া যাবে। ট্রেনের মাধ্যমে পণ্য সরবরাহের ফলে মাঝে কেউ মুনাফা লড়তে পারবে না। ভারত সরকারের অনেকটা আয়ের পথ খুলে যাবে। কেন্দ্র সরকারের এই প্রকল্পের উপর বিশেষ নজর দেওয়া উচিত।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *