আবদুল হাই,বাঁকুড়া:- বাঁকুড়ার প্রত্যন্ত গ্রামে দেখতে পাবেন একটি আস্ত আবহাওয়া কেন্দ্র। আলিপুরের আবহাওয়ার পূর্বাভাস প্রয়োজন হয় না এই প্রত্যন্ত গ্রামে। গ্রামবাসীরা স্বয়ংক্রিয় আবহাওয়া কেন্দ্রের মাধ্যমে তাদের চাষবাসে এনেছেন বিকাশ। কৃষি কাজের ক্ষেত্রে আবহাওয়ার ভূমিকা অপরিসীম। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী কৃষকরা বীজ বপন, চাষবাস এবং ফসল কাটেন। বিশেষ করে বাঁকুড়া জেলা রুক্ষ সুক্ষ লাল মাটিতে আবহাওয়ার পূর্বাভাস আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তবে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর নয়, বাঁকুড়া জেলার ছাতনা ব্লকে মিরগা গ্রামে বসানো রয়েছে একটি স্বয়ংক্রিয় আবহাওয়া কেন্দ্র। এই স্বয়ংক্রিয় আবহাওয়া কেন্দ্রটি ব্যবহার করে পাঁচ দিন আগের আগাম আবহাওয়ার পূর্বাভাস পেয়ে যান গ্রামবাসীরা। মূলত আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রাম মিরগা এবং হরিবাদী। গ্রামের দেওয়ালে লেখা থাকে ঠিক কিরকম হতে চলেছে আগামী পাঁচ দিনের আবহাওয়া।
ডিআরসিএসসি নামক একটি সংগঠন এই স্বয়ংক্রিয় আবহাওয়া কেন্দ্র বসিয়েছেন। বাঁকুড়া জেলার ছাতনা ব্লকে তিনটি এবং পুরুলিয়া জেলার কাশিপুর ব্লকে ৫ টি আবহাওয়া কেন্দ্র রয়েছে। মূলত একজন আধিকারিক এসে স্বয়ংক্রিয় আবহাওয়া কেন্দ্র থেকে আগাম পাঁচ দিনের আবহাওয়া পূর্বাভাসের তথ্য নথিভুক্ত করেন। তারপর সেই তথ্যগুলি, ডি আর সিএসসির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীকে দিয়ে দেওয়া হয়। আগাম পাঁচ দিনের পূর্বাভাস লেখা থাকে গ্রামের কিছু বিশেষ দেওয়ালে। সঙ্গে দেওয়া থাকে আবহাওয়া অনুযায়ী চাষে ভালো ফলন পেতে ঠিক কি কি করতে হবে। গরিব চাষীদের জীবনযাত্রার উন্নয়ন এবং খাদ্যাভাসের পরিবর্তন করতেই এই উদ্যোগ ডিআরসিএসসির।
গ্রামের কৃষক বাবলু মুর্মু জানান যে এই স্বয়ংক্রিয় আবহাওয়া কেন্দ্র ব্যবহার করে চাষ করতে যথেষ্ট ভালো ফল পাচ্ছেন তারা। ৫ দিন আগে থেকেই জেনে যাচ্ছেন ঝড় বৃষ্টির খবর। ফলে কখন বীজ ফেলা, বপন এবং ফসল কাটার ভালো সময় সেই বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হচ্ছে কৃষকদের। সঙ্গে আবহাওয়ার আগাম পূর্বাভাসে মোবাইলে নোটিফিকেশনে চলে আসে বলে জানিয়েছেন এই কৃষক।
লাল মাটির জেলা বাঁকুড়া। বাঁকুড়া জেলায় জলকষ্ট প্রতিবছর দেখা যায়। বিভিন্ন আবহাওয়া জনিত কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয় চাষাবাদ। মূলত শিল্পহীন কৃষি কেন্দ্রিক প্রান্তিক এই জেলায় প্রান্তিক কৃষকদের আবহাওয়ার সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ করতে আমরা দেখেছি বারবার। এই পরিস্থিতিতে বাঁকুড়া জেলার ছাতনা ব্লকের প্রত্যন্ত আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রামে স্বয়ংক্রিয় আবহাওয়া কেন্দ্র যথেষ্ট নজর কেড়েছে মানুষের।
Leave a Reply