রানাঘাটের হবিবপুরে ৪০০ বছরের প্রাচীনশীতলা মায়ের পুজো।

নদীয়া, নিজস্ব সংবাদদাতা:-  রানাঘাট হবিবপুর পুরাতন বাজারের প্রাচীন ও ঐতিহ্য জাগ্রত শীতলা মায়ের পুজো আনুমানিক ৪০০ বছরের প্রাচীন তাকে ঘিরে চলে ১০ দিন উৎসব ও মেলা।
এখানকার শীতলা মা শুধুমাত্র একটা বট বৃক্ষে পূজিত হয়ে আসছে বিগত ৪০০ বছর ধরে। কথায় আছে বিশ্বাসে মেলায় বস্তু তর্কে বহুদূর হয়তো এই মায়ের কাছে না আসলে অনেকে বিশ্বাস করতে পারবে না এমনটাই জানাচ্ছেন পুজো উদ্যোগতারা ।
এখানে কোনো মূর্তি হিসেবে পূজিত হয়না শুধুমাত্র বট গাছটি শীতলা দেবী হিসেবে পূজিত হয়ে আসছে ৪০০ বছর ধরে।
কথিত আছে গঙ্গা নদী প্রবাহিত ছিল এই বট বৃক্ষে পাশ দিয়ে কোনো এক সময় চাঁদ সদাগর বাণিজ্য করতে গিয়ে এই স্থানে বটো বৃক্ষ নিজে পূজা দিয়েছিলেন।
প্রথমে এক অবাঙালি ব্রাহ্মণ পুজো করলেও বর্তমানে হবিবপুরের ভট্টাচার্য বাড়ির পুরুষেরা বংশানুক্রমিক এই পূজার দায় ভার পায়।
কথিত আছে মায়ের স্বপ্ন আদেশ”হয় ভট্টাচার্য পরিবার কে পুজো করবার তারপরথেকেই তারা পুজো করে আসছেন । চৈত্র মাসের শীতলা অষ্টমী তিথিতে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষের সমাগম হয় এই পুজোতে । তারপর ব্রাহ্ম মুহূর্ত সময়কালে ভট্টাচার্জি বাড়ির বর্তমান পুরোহিত গদাই ভট্টাচার্য চন্ডী পাঠ দাঁড়া দেবী শক্তির গুনোগান করেন।
লোকমূখে শোনা যায় এক সময় বট বৃক্ষের সামনে দিয়ে ভাগীরথী গঙ্গা নদী প্রবাহিত ছিল। এখন গঙ্গা ৭ কিলোমিটার দূরে তারাপুরে অবস্থান করছে।

মা শীতলা দেবী এতই জাগ্রত যারা মায়ের কাছে আসেন বা পূজা দেন তারা উপলব্ধি করতে পারেন এই দেবী কে ভক্তিভরে ডাকলে মা ভক্তদের মনোবাঞ্ছা পূরন করেন এবং অনেকের মনোবাঞ্ছা পূরন হলে তাদের ওজনে বাতাসা ছিটান ভক্তরা। ৬ দিনের হরিনাম সংকীর্তনে ৩ টনের অধিক পরিমাণে বাতাসা ছিটানো হয় ভক্তদের মাঝে।

শুধু হবিবপুর গ্রামের মানুষ এই পূজা সামিল হোন না রাজ্য বিভিন্ন প্রান্তের ভক্তদের পাশাপাশি দেশ বিদেশের ভক্তদের ঢল নামে এই পূজাতো এবছর ১০ হাজারের অধিক ভক্তদের সমাগম ঘটবে অনুমান করা হচ্ছে পূজা দিতে সকাল থেকে বিরাট লম্বা লাইন পড়ে ভক্তরা ডালা সাজিয়ে অনেন ডাবের জল, গঙ্গার জল, দুধ ,আলতা, সিঁদুর ফল, ফুল নিয়ে এসে মায়ের কাছে ভক্তি ভরে পূজা দেন মহা সমারোহে পুজো হয়, অঞ্জলী পরে ও বিশেষ হোমজঙ্গ হয় এবং এখনও পর্যন্ত এই দশদিনের উৎসবে অধিকাংশ বাড়িতে নিরামিষ আহার করে থাকেন তাদের বাড়িতে কোনো আমিষ খান না । এই শীতলা মায়ের বিভিন্ন মতবাদ আছে এখানে আগে একজন অবাঙালি সাধুঁ থাকত তিনি স্বপ্নাদেশ পেয়েছিল মায়েরা ৭ বোন মায়েরা এই বট বৃক্ষে অবস্থান করে আছেন আজও সাধারণ মানুষের ধারণা বিশ্বাস, এই বট গাছে অবস্থান করে আছেন লোক মূখে শোনা যায় অনেক ভক্তকে মা দেখা দিয়েছেন।পুজোর আগেরদিন অধিবাস পুজোর দিন নিয়ম অনুযায়ী পুজোর দিন ভোরবেলা মাকে ১০৮ কলশি গঙ্গার জল দিয়ে মাকে স্নান করাতে হবে তাই প্রতিবছর হাজার হাজার ভক্তদের দেখা যায় ১৪ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে আসা যাওয়া করে শান্তিপুর থানার অন্তর্গত কুমলে গঙ্গার থেকে জল নিয়ে এসে মাকে স্নান করানো হয়।যদিও পুজো ঘিরে চলে ১০দিনের কীর্তন ও অনুষ্ঠান। এদিন রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী জগন্নাথ সরকার মন্দিরে গিয়ে পুজো দিয়ে ভোট প্রচার শুরু করেন। অপরদিকে মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী বর্ণালীদের আয়ো মাতৃ মন্দিরে গিয়ে পূজা অর্চনা করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *