জপমালার থলি বানাচ্ছে হযরত – সম্প্রীতির এক অনন্য নজির পূর্বস্থলীর সিংহজুলিতে।

সিংহজুলি, নিজস্ব সংবাদদাতা:- “মোরা এক বৃন্তে দুটি কুসুম হিন্দু মুসলমান , মুসলিম তার নয়ন মনি হিন্দু তাহার প্রাণ “। দেশ জুড়ে যতই সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা থাকুক না কেন কবির এই লাইন গুলিকে সত্যি করে দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে হিন্দুদের জপমালার থলি তৈরি করে সম্প্রীতির এক অনন্য নজির সৃষ্টি করে চলেছেন পূর্বস্থলী ১ নম্বর ব্লকের সিংহজুলির বাসিন্দা হযরত মণ্ডল। শুধু তাই নয়, নিজের নিপুণ হাতে তাতে ফুটিয়ে তুলছেন হিন্দুদের নানা দেবদেবীর ছবি।
বিগত ১৫ বছর ধরে হিন্দু দেব-দেবীর বিভিন্ন ছবি এমব্রয়ডারি কাজের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলছেন জপ মালার থলিতে। এখানেই তিনি থেমে থাকেন নি। এই শিল্পকলার মাধ্যমে তিনি কর্মসংস্থানের দিশা দেখিয়েছেন। তার হাত ধরে তার স্ত্রী রুপিয়া খাতুন বিবি সহ গ্রামের আরো মুসলিম মহিলারা তার কাছে কাজ শিখে এই জপমালা থলি তৈরি করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। এভাবেই সম্প্রীতির এক অনন্য নজির সৃষ্টি করে চলেছেন এই এলাকার হযরত, রুপিয়া, আনোয়ারা,শাহানারা, রুনা খাতুনেরা। স্থানীয় সিংহজুলি মসজিদ পাড়া এলাকার হযরত মন্ডল এমব্রয়ডারির কাজের জন্য দিল্লিতে যান। সেখান থেকে বাড়িতে ফিরে আসার পরে মায়াপুরের ইসকনের এক ব্যক্তির সাথে তার পরিচয় হয়।সেই সূত্র ধরে প্রথম তিনি এই কাজ করেন । তারপর থেকে এটাকেই তিনি পেশা হিসেবে বেছে নেন। পাশাপাশি গ্রামেরই ১৫-১৬ জন মুসলিম মহিলাকেও কাজ শিখিয়ে তিনি স্বাবলম্বী করেছেন। অন্যদিকে ভিন গ্রামের হিন্দু মহিলারাও তার থেকে এই কাজ শিখে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। হযরত এর কথায় আমরা হিন্দু-মুসলিমের মধ্যে কোন ভেদাভেদ দেখিনা। এই জপ মালার থলির চাহিদা নদীয়ার মায়াপুরে অনেক বেশি। আর তাই সেখানে এই জপমালার থলি পাঠিয়ে তিনিও লাভবান হচ্ছেন, অন্যদিকে হজরতের শেখানো পথ ধরে স্বাবলম্বী হচ্ছেন এলাকার হিন্দু ও মুসলিম মহিলারা। যা অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি সম্প্রীতির অনন্য নজির সৃষ্টি করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *