শিলিগুড়ি, নিজস্ব সংবাদদাতা:- শিলিগুড়ি মাল্লাগুড়ির বিজেপি কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শোনালেন পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন দার্জিলিং-এর বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা এবং দার্জিলিং জেলা বিজেপি সভাপতি অরুণ মণ্ডল।
শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেন, তিনি শিলিগুড়িতে পা রাখতেই বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, যা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন রাজ্যে বিদ্যুতের ঘাটতি নেই, তাহলে এই বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতা কেন? চা শিল্পকে ঘিরে রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন শুভেন্দু। তাঁর দাবি, চা বাগানের জমিতে নানা অবৈধ প্রকল্প চলছে। মুখ্যমন্ত্রীর আমলে উত্তরবঙ্গের প্রকৃতি ধ্বংস করে চলছে তৃণমূলের লুট। চা শ্রমিকরা বঞ্চিত, অথচ চা বাগানের মালিকদের আর্থিক সুরক্ষা দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ‘চা সুন্দরী’ প্রকল্পের নামে লেবার ওয়েলফেয়ার বোর্ডের অর্থাৎ কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থ অপব্যবহার করা হচ্ছে। অসংগঠিত শ্রমিকদের কল্যাণের টাকা “মাছের তেলে মাছ ভাজা”-র মতো ব্যবহৃত হচ্ছে বলেও অভিযোগ তোলেন তিনি। রেশন, রাস্তাঘাট ও হাসপাতালের উন্নয়নের প্রসঙ্গে শুভেন্দুর দাবি, এইসব প্রকল্প কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থে হচ্ছে, কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী সেগুলো নিজের কৃতিত্ব হিসেবে প্রচার করছেন। জল জীবন মিশন ও ন্যাশনাল রুরাল মিশনের টাকা খরচ করে রাজ্য সরকার শিলান্যাস কর্মসূচির নামে প্রচার করছে বলে অভিযোগ করেন শুভেন্দু। স্কুল সার্ভিস কমিশনের দুই অফিস মালদা ও শিলিগুড়িতে থাকলেও, মুখ্যমন্ত্রী কোনো উল্লেখযোগ্য প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারেননি বলেও তিনি দাবি করেন।
পরিযায়ী শ্রমিক সমস্যা নিয়েও সরব হন শুভেন্দু। তিনি জানান, মালদা থেকে কোচবিহার পর্যন্ত প্রায় ২২ লক্ষ শ্রমিক জীবিকার জন্য রাজ্যের বাইরে পাড়ি দিচ্ছেন। এটি বর্তমান সরকারের ব্যর্থতা বলেই ব্যাখ্যা দেন তিনি।উত্তরবঙ্গ থেকে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আসে, অথচ উত্তরবঙ্গই সবচেয়ে বেশি বঞ্চিত — এই দাবি তুলে মুখ্যমন্ত্রীকে ‘শোষক’ আখ্যা দেন শুভেন্দু। তিনি কটাক্ষ করে বলেন, মুখ্যমন্ত্রী নিজেকে ‘রানী মা’ ভাবেন এবং প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কল্পনা করেন।
সাংবাদিক বৈঠকের শেষে তিনি জানান, আগামী মাসে বিজেপি ‘উত্তরকন্যা অভিযান’-এ নামবে। মুখ্যমন্ত্রীর সাম্প্রতিক উত্তরবঙ্গ সফরে তিনি বাংলাদেশ নিয়ে কিছু বলেননি, কিন্তু বিহার ও অসমকে আক্রমণ করেছেন — এই বিষয়েও কটাক্ষ করেন শুভেন্দু অধিকারী।
Leave a Reply