নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদাঃ- — পড়নে লুঙ্গি ও সাদা পাঞ্জাবি,পায়ে চটি জুতা ও হাতে বোতাম মোবাইল। বয়স ৫৫। সাদাসিধে মানুষ। এক সাধারণ কৃষক থেকে আজ ছ’টি লাইসেন্স প্রাপ্ত কারখানার মালিক তিনি। নিজের পরিশ্রমের অর্থ দিয়ে ধীরে ধীরে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে গড়ে তুলেছেন কাঠ চেরাই কারখানা,লেদ কারখানা,মুড়ি কারখানা,
আটা কারখানা,সরিষা তেল কারখানা ও পরিশ্রুত পানীয় জল কারখানা। একজন কৃষক সফলভাবে কারখানা প্রতিষ্ঠা করে শতাধিক শ্রমিকের কর্মসংস্থান ঘটিয়েছেন এবং তাদের রুজি-রোজগারের ব্যবস্থা করেছেন। স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাবের পাশাপাশি গ্রামীণ উন্নয়নকে উৎসাহিত করছেন হরিশ্চন্দ্রপু্রের মহম্মদ হাসেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,হাসেনের বাড়ি হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লকের ভিঙ্গোল গ্রাম পঞ্চায়েতের লক্ষণপুর গ্রামে। তার দুই মেয়ে ও এক ছেলে। বয়স্ক মা রয়েছে। লক্ষণপুর বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় প্রায় এক একর জমিতে ছটি কারখানা গড়ে তুলেছেন তিনি।
মঙ্গলবার সকালে ফিতা কেটে চাঁচল মহকুমার মধ্যে বড় পরিশ্রুত পানীয় জলের কারখানার উদ্ভোধন করলেন তিনি। উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের কৃষি সেচ ও সমবায় কর্মাধ্যক্ষ রবিউল ইসলাম, জেলা পরিষদের সদস্য বুলবুল খান ও ভিঙ্গোল গ্রাম পঞ্চায়েতের কংগ্রেসের প্রাক্তন প্রধান বিমান বিহারী বসাক। তাঁর প্যাকেজিং জলের বোতল, সরিষার তেল,মুড়ি ও আটা পন্য সামগ্রী জেলা জুড়ে সরবরাহ হয়। হাসেন বলেন, তিন ভাইয়ের মধ্যে আমি মেজো। পুরাতন বাস্তুভিটা খোকড়া গ্রামে। অর্থাভাবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গন্ডি পার করতে পারিনি। লক্ষণপুর বাস স্ট্যান্ডে চাষবাস করে জমানো টাকা দিয়ে প্রথমে কাঠ চেরাই কারখানা খুলি। বড়ো হয়ে উঠার জেদ চেপে ধরে। এরপর ধীরে ধীরে আরও পাঁচটি কারখানা গড়ে তুলি। এদিন
পরিশ্রুত পানীয় জলের কারখানার উদ্ভোধন করলাম। এলাকার শতাধিক শ্রমিক কারখানা গুলিতে কাজ করছেন। সরকারি অর্থ সহায়তা পেলে পরবর্তীতে জুস কারখানা খোলার ইচ্ছে রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা নাজির হোসেন বলেন, কঠোর পরিশ্রম আজ হাসেন কে সাফল্যের শিকড়ে পৌঁছে দিয়েছে। তার কারখানায় এলাকার মানুষ কাজ করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছে।
জেলা পরিষদের কৃষি সেচ ও সমবায় কর্মাধ্যক্ষ রবিউল ইসলাম বলেন,হাসেন যাতে ভবিষ্যতে আরও মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারেন তার জন্য জেলায় লোনের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব।
এক সাধারণ কৃষক থেকে আজ ছ’টি লাইসেন্স প্রাপ্ত কারখানার মালিক তিনি।

Leave a Reply