
নিজস্ব সংবাদদাতা, পশ্চিম মেদিনীপুর:- সম্পর্ক নিয়ে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন যুবতী। কিন্তু তার পরিণতি যে এতটা ভয়ঙ্কর হবে, তা ভাবতে পারেননি কেউ। বিয়ের কথা বললেই এড়িয়ে যেতেন যুবক—এমনটাই অভিযোগ যুবতীর বাড়ীর লোকের। মাঝেমধ্যে বিয়ে নিয়ে দু’জনের মধ্যে অশান্তিও হতো। বুধবার রাতে যুবককে ভিডিয়ো কল করেন যুবতী। তাঁকে বিয়ে করতে বলেন ,রাজি হননি ঐ যুবক । এরপরেই ভিডিয়ো কল চলাকালীন আত্মঘাতী হন যুবতী। ঘটনা টি চন্দ্রকোনা থানার ধর্মপোতা গ্রামের । পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম সাথী ঘোষাল (১৯)। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই যুবতীর প্রেমিক সৌমাল্য মাহাতোকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যুবতীর কাছ থেকে বিভিন্ন অছিলায় অভিযুক্ত যুবক টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন রয়েছে এমন ও অভিযোগ । প্রতারণার অভিযোগে অভিযুক্ত যুবক কে গ্রেপ্তার করেছে চন্দ্রকোনা থানার পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সাথী চন্দ্রকোণার গোপসাই কলেজের ডি ফার্ম বিভাগের ছাত্রী। সৌমাল্য গড়বেতার জামগেড়িয়ায় থাকেন। একটি দোকানে কাজ করেন তিনি। বছর দু’য়েক আগে ফেসবুকে সাথীর সঙ্গে সৌমাল্যর পরিচয় হয়। সেখান থেকে তাঁদের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর থেকে মাঝেমধ্যে যুবতীর থেকে টাকা নিতেন ওই যুবক বলে অভিযোগ। বাড়ির থেকে পাওয়া হাতখরচের টাকা জমিয়ে ওই যুবককে দিতেন যুবতী। যুবতীর বাড়ীর সদস্যদের দাবী। প্রেমিক যুবককে বিয়ে করতে বললেই তিনি এড়িয়ে যেতেন। এর মধ্যে যুবতীর সম্বন্ধ খোঁজা শুরু হয়। বাড়িতে সৌমাল্যর কথা জানান যুবতী। কিন্তু সৌমাল্য বিয়েতে রাজি হচ্ছিলেন না বলে অভিযোগ। যুবতী কাছ থেকে নেওয়া টাকাও ফেরত দিচ্ছিলেন না ।
বুধবার সন্ধ্যায় সাথীর বাড়ির লোকজন কেউ ছিলেন না। সাথী নিজের ঘর বন্ধ করে ওই যুবককে ভিডিয়ো কল করেন। অভিযোগ, ভিডিয়ো কল চলাকালীন আত্মঘাতী হন যুবতী। সে সময়ে আত্মঘাতী বাড়ির লোক এসে ঘরের দরজা ভেঙে ঢুকে তরুণীর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান। তাঁরা চন্দ্রকোণা গ্রামীণ হাসপাতালে যুবতীকে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন।
সাথীর বাবা নির্মল ঘোষাল বলেন, ‘মেয়ে কয়েক মাস ধরে মানসিক অবসাদে ভুগছিল। ভাবতাম পড়ার চাপ। দিন কয়েক আগে হঠাৎ ওর ফোন ঘেঁটে আমরা এই সম্পর্কের কথা জানতে পারি। মেয়েও বিষয়টি আমাদের জানায়। তারপরে এই পরিণতি। আমার আর কিছু বলার নেই। আমার একমাত্র সন্তান ছিল। আমরা কী নিয়ে বাঁচব, জানি না।’ সাথীর মা মেয়ের শোকে বার বার জ্ঞান হারাচ্ছেন। সাথীর মৃতদেহ চন্দ্রকোণা থানার পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছেন।
চন্দ্রকোণা থানার পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘আমরা উভয়ের ফোন নিজেদের হাতে নিয়েছি। তদন্তের কাজ শুরু করেছি। ময়নাতদন্তের পরে বিষয়টি পরিষ্কার হবে।’












Leave a Reply