কবরস্থান যাওয়ার রাস্তা বন্ধ, মরা মহানন্দার কোমরজল পেরিয়ে শববাহী গ্রামবাসী।

মালদা, নিজস্ব সংবাদদাতাঃ – কবরস্থান ও শ্মশানে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। অন্য পথ না থাকায় মরা মহানন্দার এক কোমর জল ভেঙে কবরস্থানে নিয়ে যেতে হল শবদেহ এমনি ভিডিও ভাইরাল যদিও এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি সংবাদ মাধ্যম । চরম দুর্ভোগের এই চিত্র দেখা গেল হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লকের তুলসীহাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের বসতপুর গ্রামে।
গ্রামে একদিকে কবরস্থান, অন্যদিকে শ্মশান। সেচদপ্তরের জায়গায় ছিল কাঁচা রাস্তা। বাসিন্দারা শবদেহ কবরস্থান ও শ্মশানে নিয়ে যেতেন এই রাস্তা দিয়েই। তাঁদের অভিযোগ,স্থানীয় বাসিন্দা সাত্তার আলি সেচ দপ্তরের ৫০ শতক জায়গা দীর্ঘদিন দখল করে চাষবাস করছেন। সেজন্য তিনি কবরস্থান ও শ্মশানে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে প্রায় দুই কিলোমিটার ঘুরে আঙ্গারমুনি গ্রাম হয়ে কবরস্থান ও শ্মশান যেতে হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার সকালে বসতপুর গ্রামের বধূ সোলো বিবির মৃত্যু হয়। রাস্তা বন্ধ থাকায় গ্রামবাসীরা মরা মহানন্দা নদীর কোমর সমান জল পেরিয়ে কবরস্থানে নিয়ে যান। সেচদপ্তরের জায়গা নিয়ে গ্রামবাসীদের সঙ্গে সাত্তারের পরিবারের একাধিকবার গন্ডগোল হয়েছে। হরিশ্চন্দ্রপুর থানা, ব্লক প্রশাসন, সেচদপ্তর ও জেলাশাসকের কাছে গণসাক্ষর করে দাবিপত্র দেওয়া হয়েছিল। তারপর সেচদপ্তর থেকে পাঁচমাস আগে লোক এলেও মাপজোক অসম্পূর্ণ রেখে চলে যান। তাঁরা আর আসেননি। স্থানীয় বাসিন্দা সফিকুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম ও সেখ সৈফুদ্দিনরা বলেন, সাত্তার সেচদপ্তরের জায়গা দখল করে ফসল লাগিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন। বিকল্প কোনও রাস্তা না থাকায় প্রায় দুই কিলোমিটার ঘুরে কবরস্থানে যেতে হয়। এদিন গ্রামের এক বধূ মারা গেলে এলাকার মানুষ মরা মহানন্দা নদীর জল পেরিয়ে দেহ নিয়ে যান। সেচদপ্তর ও প্রশাসনকে একাধিকবার লিখিত অভিযোগ দায়ের করে সমস্যার কথা জানানো হয়েছে। অসুবিধা মেটাতে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সাত্তারের ছেলে ফিরদৌস আলির কথায়,সেচদপ্তরের কিছুটা জমি নদীতে পড়েছে। অল্প আমাদের দখলে রয়েছে। তবে, কবরস্থান ও শ্মশানে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ করা হয়নি। গ্রামের অন্য এক ব্যক্তি রাস্তা ঘেঁষে বাড়ি করেছেন। তিনিই বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছেন রাস্তা। বাসিন্দাদের দাবি, ফিরদৌস যে ব্যক্তির দিকে আঙুল তুলছেন, তিনি মাপজোক করে নিজের জমিতেই বাড়ি করেছেন। জেলা পরিষদের কৃষি, সেচ ও সমবায় কর্মাধ্যক্ষ রবিউল ইসলাম বলেন, গ্রামের লোকেরা সমস্যার কথা আমাকে জানিয়েছিলেন। সেচদপ্তরকে বিষয়টি জানালে পাঁচমাস আগে জমি মাপজোক করতে আসে। তখন বর্ষা ও জমিতে পাট ছিল বলে সেই কাজ শেষ হয়নি। আবার জেলায় বিষয়টি জানাব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *