ক্যানিংয়ে তিন তৃণমূল কর্মী খুনের ঘটনায় মুল অভিযুক্তকে ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়ে পূনর্নিমাণ করলো বারুইপুর জেলা পুলিশ।

0
242

সুভাষ চন্দ্র দাশ,ক্যানিং: – ক্যানিং ট্রিপিল খুনের ঘটনায় মুল অভিযুক্ত রফিকুল সরদার কে ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়ে সেদিনের ঘটনার পুনর্নিমাণ করলো বারুইপুর জেলা পুলিশ।বুধবার দুপুরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন বারুইপুর জেলা পুলিশ সুপার পুষ্পা,ক্যানিং মহকুমা পুলিশ আধিকারীক দিবাকর দাস,ক্যানিং থানার আইসি সৌগত ঘোষ,ক্যানিং মহিলা থানার ওসি তনুশ্রী মন্ডল সহ বারুইপুর পুলিশ জেলার বিশাল পুলিশ বাহিনী।
জানা গিয়েছে গত ৭ জুলাই ক্যানিং থানার অন্তর্গত গোপালপুর পঞ্চায়েতের ধর্মতলার পিয়ালী নদীর পার্শ্ববর্তী পিয়ারের পার্ক এলাকার নারায়নীতলা সংলগ্ন পাকা রাস্তার উপর তিনজন তৃণমূল কর্মীকে প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে কুপিয়ে নৃশংস ভাবে খুন করে দুষ্কৃতিরা।ঘটনার আগে স্থানীয় মাঠের মধ্যে দুষ্কৃতিরা বসেছিলো। সেখান থেকে মোবাইলে কথা বলে গোপালপুর পঞ্চায়েত সদস্য স্বপন মাঝির গতি বিধি নজর রাখছিল।দুষ্কৃতিরা যখন খবর পায় যে স্বপন মাঝি বাইক এ চেপে আসছে,দুষ্কৃতিরা তখন সশস্ত্র অবস্থায় ঝিঙে বাগান থেকে দৌড়ে রাস্তার উপর চলে আসে।স্বপন কে লক্ষ্য করে দুষ্কৃতিরা প্রথমে গুলি করে। পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে স্বপন মাঝি,ভূতনাথ প্রামাণিক,ঝন্টু হালদার কে কুপিয়ে খুন করে অভিযুক্তরা।সেখান থেকে খুনের ঘটনার মূল অভিযুক্ত রফিকুল সরদার একটি ইটের রাস্তা দিয়ে আমতলা গ্রামে পালিয়ে গা ঢাকা দেয়। পরে কেরলের কোঝিকোডে এলাকায় গা ঢাকা দেয়।সেখানে রঙ মিস্ত্রীর কাজ নিয়ে থাকাতে শুরু করে।
মূল অভিযুক্তদের প্রথমে ধরতে না পারায় এলাকার মানুষজন বেশ কয়েকবার পুলিশের সামনে বিক্ষোভ দেখায়।খবর পেয়ে গত ১২ জুলাই জাতীয় তপশিলি কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান অরুণ হালদার ঘটনাস্থলে হাজীর হয়ে মৃতদের পরিবারের সাথে কথা বলে সংবাদ মাধ্যমের সামনে এক রাশ ক্ষোভ উগরে দেয়।পাশাপাশি তিনি বলেছিলেন অভিযুক্তদের কেউ যদি আড়াল করার চেষ্টা করে তাহলে তার চাকরি যাবে,কেউ বাঁচাতে পারবে না।যদিও এমন ঘটনার পর পুলিশ তৎপরতার সাথে দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে পারলেও মূল অভিযুক্ত রফিকুল সরদার ফেরার হয়ে যায়। ক্যানিং থানার পুলিশ দক্ষতার সাথে তদন্ত শুরু করে রফিকুলের খোঁজ পায় কেরলের কোঝিকোডে এলাকায়। এরপর ক্যানিং থানার অফিসার রঞ্জিত চক্রবর্তীর নেতৃত্বে বারুইপুর পুলিশ জেলার পাঁচ সদস্যের একটি পুলিশ টীম গত ২৩ আগষ্ট কেরলের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিল।প্রথমে এই তদন্তকারী অফিসাররা কেরালাতে গিয়ে যে এলাকায় রফিকুল ছিল সেই কোঝিকোডে এলাকাটিতে ছদ্মবেশে অনুসন্ধান চালায়। কারণ রফিকুল ওই এলাকায় রংমিস্ত্রি হিসেবে ভাড়া বাড়িতে বসবাস করছিল। তার সঙ্গে ছিল জয়নগর ও বাসন্তীর আরো বেশ কিছু দিনমজুর। একসঙ্গেই থাকছিল তারা। পরিচয় গোপন করে রফিকুল সেখানে কাজ নেয়।রফিকুল কে চিনতে অসুবিধা হচ্ছিল তদন্তকারী অফিসারদের। কারণ তার মুখে কোন দাড়ি ছিলোনা। কেরালাতে গিয়ে দাড়ি রাখে সে।রফিকুলের সঠিক নিশানা পেতে কয়েকদিন কেটে যায়। যদিও চোখে চোখে রাখছিলেন পুলিশ অফিসাররা।ঘটনার যবনিকা হয় ২৫ আগষ্ট রাতে। তদন্তকারী অফিসাররা সিদ্ধান্ত নেন আর দেরি করার প্রয়োজন নেই। ফলে ওই দিন রাত ১২ টা নাগাদ ক্যানিং থানার পুলিশ ক্যানিং খুনের ঘটনার মূল মাষ্টার মাইন্ড অভিযুক্ত রফিকুল কে ধরার জন্য অপারেশন শুরু করে।তাদেরকে সাহায্য করে কেরালা পুলিশের কর্মীরাও।গ্রেফতার হয় রফিকুল।