নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা :–শিক্ষক ও পরিকাঠামোর অভাবে ধুঁকছে জেলার একটিমাত্র সাঁওতালি মাধ্যমের স্কুল। পুরাতন মালদহের যাত্রাডাঙ্গা পঞ্চায়েতের থুকরাবাড়িতে অবস্থিত আদিবাসী অলচিকি ভাষায় পঠন পাঠনোর জন্য বিগত ২০১৪ সালে প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসাবে স্থাপিত হয় জেলার একটিমাত্র আদিবাসী স্কুল। এই স্কুলে অলচিকি হরফে পঠন পাঠন শেখানো হয় আদিবাসী সম্প্রদায়ের পড়ুয়াদের। তবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক থাকলেও বর্তমানে সেই স্কুলে মাধ্যমিক পর্যন্ত কোন শিক্ষকেই নেই? থুকড়াবাড়ি অলচিকি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকের সংখ্যা ছিল ৭ জন। ২০১৯ সালে আপার প্রাইমারি অর্থাৎ অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত করা হয়। তবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দিয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পঠন-পাঠন করানো হতো। ইতিপূর্বে চলতি বছরের জানুয়ারিতে মাধ্যমিক পর্যন্ত করা হয়েছে কিন্তু কোনো শিক্ষক নিয়োগ করা হয়নি বলে অভিযোগ স্কুলের শিক্ষা কর্মীদের। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৭ জন শিক্ষকদের মধ্যে দুইজন শিক্ষককে মাধ্যমিক পর্যন্ত পঠন-পাঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জেলা শিক্ষা দপ্তর থেকে। সেক্ষেত্রে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীদের কম সংখ্যক শিক্ষক দ্বারাই পঠন পাঠন শেখানো হচ্ছে। এতে নানান সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের। কারণ বিষয়ভিত্তিক কোন শিক্ষক নেই, সে ক্ষেত্রে আদিবাসী সম্প্রদায়ের ছাত্র-ছাত্রীদের অলচিকি ভাষায় পড়াতে গিয়ে সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এটিকে শিক্ষকের অভাবে অভিভাবকরা ছাত্র-ছাত্রীদের পার্শ্ববর্তী জেলা গুলোতে ভর্তি করতে বাধ্য হচ্ছেন। এই মুহূর্তে প্রাথমিকের ক্ষেত্রে মোট ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা ৫৬ জন এবং মাধ্যমিক পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা ২৯ জন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে শিক্ষকের অভাবে যতদিন এ করছে তত ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা কমছে।
শুধু শিক্ষকের সমস্যা নয়, এই স্কুলে পরিকাঠামোর অভাব রয়েছে। মাত্র দুটো শ্রেণী কক্ষ তার মধ্যে প্রি-প্রাইমারি থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত পঠন পাঠান করানো হয় মাত্র দুটি ঘরের মধ্যে। ইতিপূর্বে জেলা শিক্ষা দপ্তর দুটি নতুন ভবন তৈরি করছেন নির্মাণের কাজ ইতিমধ্যে চলছে। কিন্তু শিক্ষকদের দাবি মাধ্যমিক পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য দুটি ক্লাস রুমে হবেনা আরও তিনটি দরকার। এদিকে প্রাথমিকের ক্ষেত্রে দুটি ক্লাস রুমের মধ্যে ছয়টি ক্লাস করানো হচ্ছে ফলে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন স্কুল শিক্ষকরা। এদিকে রাজ্য জুড়ে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া পুরোপুরি বন্ধ, নিয়োগ দুর্নীতিতে রাজ্যের শাসক দলকে দায়ী করেছে রাজ্যের প্রধান বিরোধীদল বিজেপি। আর জেলার একটিমাত্র আদিবাসী স্কুলের শিক্ষকের আকালে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।
যদিও এ বিষয়ে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক বাণীব্রত দাসের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি মৌখিক ভাবে জানান, শিক্ষকের সমস্যা নিয়ে আমরা রাজ্য শিক্ষা দপ্তরের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। খুব শীঘ্রই ওই স্কুলের শিক্ষকের সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।
শিক্ষক ও পরিকাঠামোর অভাবে ধুঁকছে জেলার একটিমাত্র সাঁওতালি মাধ্যমের স্কুল।

Leave a Reply