মালদা, নিজস্ব সংবাদদাতাঃ- বাবলার সরকারের অসম্পূর্ণ কাজ করবে তাঁর স্ত্রী চৈতালি সরকার। সোমবার নিহত মালদা তৃণমূলের সহ-সভাপতি বাবলা সরকারের স্ত্রী চৈতালি সরকারের সঙ্গে দেখা করার পর এমনটাই সাংবাদিকদের সামনে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। এদিন দুপুর ৩টা ৪৫ মিনিট থেকে প্রায় পৌনে এক ঘন্টা মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ইংরেজবাজার শহরের মহানন্দাপল্লী এলাকার বাবলা সরকার বাড়িতে ছিলেন। সেখানেই নিহত তৃণমূল নেতা বাবলা সরকারের স্ত্রী চৈতালি সরকারের সঙ্গেই দীর্ঘক্ষন নানান বিষয় নিয়ে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। হঠাৎ করে ইংরেজবাজার পুরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ডের মহানন্দাপল্লীতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে রাস্তায় দেখতে পেয়ে মানুষের ভিড় হুমড়ি খেয়ে পড়ে। এদিন মহানন্দাপল্লীর নিজের বাড়িতে বসেই একান্তই মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে বাবলা সরকার খুনের বিষয়ে নানান কথা বলেন চৈতালি সরকার। এরপর চৈতালি সরকারকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। সেখানেও চৈতালী সরকারের সামনে মালদার পুলিশ সুপার এবং রাজ্যের গোয়েন্দা বিভাগের এডিজির সামনে কিছু বলতে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রী কে। ওই দুই আইপিএস কর্তাদের হাতে বেশ কিছু কাগজও তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
এরপরই সাংবাদিকদের সামনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বলেন, বাবলা আমার চিরকালের পরিচিত। একটা সময় মালদা থেকে সকালে কলকাতায় ফিরেছি। বাবলার ডাকে আবার রাতে চলে এসেছি মালদায়। এরকম অনেক ঘটনা সাক্ষী রয়েছি। বাবলার খুনের ঘটনার পর চৈতালির সঙ্গে দীর্ঘক্ষন আলোচনা করলাম। আমি নিজেও একা এসেছি। সঙ্গে কাউকে আনে নি। কতগুলো কথা চৈতালি আমাকে বলেছে। সেগুলি কানে এসেছ। যে যতই বড় হোক না কেন, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং দ্রুত শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি আরও বলেন, এর আগে বাবলা খুনের ঘটনার পর রাজ্য পুলিশের মহা নির্দেশক রাজীব কুমার মালদায় এসেছেন । বিভিন্ন বিষয়গুলি তাঁর কাছ থেকে আমি শুনেছি। এখনো কতগুলো কথা কানে এসেছে। সেগুলি তদন্তের ব্যাপারে মালদার পুলিশ সুপার এবং রাজ্য গোয়েন্দা বিভাগের এ ডিজে কে জানানো হয়েছে। বাবলার অসম্পূর্ণ কাজ চৈতালি কেই করতে হবে, এটাও বলে দিয়ে গেলাম।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী মালদার রাজনীতি প্রসঙ্গে চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তিনি বলেন, বাবলা নিরলস কর্মী ছিল। এলাকার মানুষের কাছে জনপ্রিয় ছিল। কিন্তু মালদার রাজনীতিটা বুঝে উঠতে পারছি না। এখানে কিসের খেলা হচ্ছে, সেটাও আমাকে দেখতে হবে। কেন না এমএলএ , এমপি ভোট যখন আসছে তখন তৃণমূলের হার হচ্ছে। আর যেই পুরসভা অথবা কর্পোরেশন নির্বাচন হচ্ছে তখন সবাই জিতে যাচ্ছে। অনেক রকম খেলা চলছে। এরকম খেলা চললে তো মানুষের পক্ষে খারাপ হবে। কাউন্সিলরেরা জিতে যায়। অথচ এমএলএ এবং এমপি ভোটে দাঁড়ালে হেরে যায় । মালদার এই রাজনীতির রহস্যটাও আমাকে বুঝতে হবে।
এদিকে এদিন মুখ্যমন্ত্রী নিহত বাবলা সরকারের মহানন্দাপল্লীর বাড়ি থেকে ফিরে যাওয়ার পরেই চৈতালী সরকার বলেন, বাবলা সরকার খুনের ১৭ দিনের মাথায় দিদি এসেছেন। আমি এদিনের অপেক্ষা করছিলাম। অনেক ধৈর্য্য ধরেছিলাম। আমার যে ব্যথা উনি বুঝতে পেরেছেন। তাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে যতটা বলার তা বলেছি। বাবলা সরকারকে এরকম কেন নৃশংসভাবে খুন করা হলো? এখনো তা পরিষ্কার করে বুঝে উঠতে পারলাম না । সে কথাও এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে বলেছি। উনি আশ্বাস দিয়েছেন এবং উনি যে আমাদের পাশে রয়েছেন তাতে আমি অনেক কৃতজ্ঞ। যদি এই ঘটনার পিছনে আরও কেউ জড়িত থাকে তারও কঠোর শাস্তি হবে এই আশা এখনো করছি। মুখ্যমন্ত্রীকেও সব বলেছি।
বাবলার সরকারের অসম্পূর্ণ কাজ করবে তাঁর স্ত্রী চৈতালি সরকার, বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।

Leave a Reply